সাকিব আর মোস্তাফিজছাড়া জাতীয় দলের সঙ্গী এবং তার সমসাময়িক প্রায় সবাই ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ খেলেছেন। অনেকে বিসিএলও খেলেছেন; কিন্তু হাঁটুর ইনজুরির কারণে তার পক্ষে কিছুই খেলা সম্ভব হয়নি। সে অর্থে সেই মার্চে শ্রীলঙ্কায় নিদাহাস ট্রফির পর কয়েক মাস খেলার বাইরে তামিম। মাঝের সময়টায় রিহ্যাবে কেটেছে। অবশেষে সুস্থ্য হয়ে আজই শেরে বাংলায় প্রথম প্র্যাকটিস ম্যাচ খেললেন দেশসেরা ওপেনার। মোটকথা বড় মঞ্চে ফেরার অপেক্ষায় এখন এই ড্যাশিং ওপেনার।
Advertisement
তার মানে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সম্পুর্ণ সুস্থ ও ফিট তামিমকেই পাবে বাংলাদেশ। এদিকে তামিম ভক্তদের জন্য সুখবর, বিশ্ব একাদশের হয়ে খেলতে আজ মধ্যরাতে লন্ডন যাচ্ছেন তামিম। শনিবার দিবাগত রাত একটায় ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন তামিম।
সুস্থ হয়ে আবার মাঠে ফেরা। খুব স্বাভাবিকভাবেই একটু অন্যরকম অনভুতি। তামিমও খানিক রোমাঞ্চিত। তার ভাষায়, ‘হ্যাঁ, আমিও খানিক এক্সাইটেড। প্রায় দুই মাস আমি রিহ্যাবে ছিলাম। আজকে প্রথম অনুশীলন ম্যাচ খেলব আশা করি। যে ইনজুরি ছিল, সেটা ভালোভাবে পুরোপুরি রিকভার করেছি। আমাদের হাতে যতটুকু ছিল, তার চেয়ও বেশি করেছি। ফিটনেসের কাজটা বেশি করেছি। স্ট্রেন্থ নিয়েও কাজ করেছি। ফিটনেস ওয়াইজও আগের থেকে ভালো অবস্থায় আছি। সব কিছু মিলিয়ে আমি মনে করি, আমার প্রত্যেকটা কাজ ঠিকভাবে করেছি। দেখা যাক খেলায় কোনো রকম ঝামেলা না হয় আর কি।’
রিহ্যাবের পাশাপাশি কঠোর শারীরিক অনুশীলন ও ডায়েটিং করে আগের যে কোন সময়ের চেয়ে এখন তার ওজনও অনেক কম। এ রকম অবস্থায় নিজেকে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ফিট মনে হয় কি?
Advertisement
প্রশ্ন করা হলে তামিমের উত্তর, ‘আমি বলতে পারছি, ফিটনেসের দিক থেকে আগের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থায় আছি। সব ঠিক কিন্তু এটা বেঞ্চ মার্ক না। আমি মনে করি এখান থেকে আমি আরও ভালো হতে পারি। দলে আরও অনেকেই আছে, ওদের স্ট্যান্ডার্ডে যেতে হলে আমাকে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আরও অনেক কষ্ট করা লাগবে। তবে হ্যাঁ, শেষ ছয়মাসের কথা যদি বলেন, তাহলে বলবো, হ্যাঁ এটা বলতে পারি যে আমি এখন অনেক ভালো অবস্থায় আছি। ভালো শেপে আছি।’
বিশ্ব একাদশে খেলা নিয়ে রীতিমত রোমাঞ্চিত ও পুলকিত তামিম। খুব স্বাভাবিকভাবেই লর্ডসে বিশ্ব একাদেশের হয়ে খেলতে যাওয়া নিয়েও ভিতরে একটা অন্যরকম পুলক কাজ করছে তার। পাশাপাশি ভাল খেলার অদম্য বাসনাও কাজ করছে ভিতরে।
এ সম্পর্কে কিছু বলতে বলা হলে তামিমের কথা, ‘এক্সাইটমেন্ট তো অবশ্যই আছে। এরকম একটা খেলায় অংশগ্রহণ করা বড় কথা। আশা করবো যে শুধু প্রতিনিধিত্ব করাতেই যেন থেমে না থাকে। আমার লক্ষ্য ও চেষ্টা থাকবে ভালো খেলারও। যদি ভালো খেলি, তাহলে অবশ্যই ভালো লাগবে। একটা ভালো উদ্দেশ্যর জন্য যাচ্ছি। পাশাপাশি এটাও আশা করবো যে কারণে এই আয়োজন, সেটাও যেন সফল হয়। এই ম্যাচের মাধ্যমে যেন যথেষ্ঠ পরিমানে ফান্ড রাইজ করতে পারি।’
ক্রিকেট তীর্থ লর্ডস- শত শত ক্রিকেটারের পরম আরাধ্য। লর্ডসে খেলার স্বপ্ন থাকে, আছেও অনেক ক্রিকেটারের। সেখানে লর্ডসে তামিমের আছে দারুণ সুখ স্মৃতি। ক্রিকেট তীর্থে টেস্টে এক দারুন সেঞ্চুরিও রয়েছে তার। সেটা ২০১০ সালের এই মে মাসেই। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৫৫ রান করার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৩ রানের অনবদ্য শতক উপহার দেন তামিম।
Advertisement
সেই সাফল্যের স্বর্গে আবার বিশ্ব একাদশের হয়ে খেলা। তা নিয়েও উদ্বেলিত তামিম। যে মাঠে অনেক সুখস্মৃতি আছে, সেই লর্ডসে খেলতে যাচ্ছেন, কেমন লাগছে?
তামিমের জবাব, ‘স্মৃতি যদি ভালো নাও থাকতো, তাহলেও লর্ডসে গিয়ে ভালো লাগতো। কারণ, লর্ডসে আমাদের খুব বেশি খেলা হয় না। আবার ওখানে অনেক দিন পর খেলব, সে জন্য অবশ্যই এক্সাইটেড।’
তবে তামিমের শেষ কথা, লর্ডসে খেলার একটা আলাদা মোহ ও রোমাঞ্চ ভিতরে কাজ করলেও বিশ্ব একাদশের হয়ে খেলবেন- সেটা অনেক বড় বিষয় তার কাছে। তাই তো মুখে এমন সংলাপ, ‘লর্ডসে খেলার চেয়েও ওয়ার্ল্ড ইলেভেনকে প্রতিনিধিত্ব করা আমার কাছে বড় ব্যাপার।’
এআরবি/আইএইচএস/আরআইপি