জাতীয়

পচা মাংস, বসছে মাছি, তবুও দাম বেশি

* ৪ মণ পচা মাংস জব্দ* ১৩ দোকানের ১৬ জনকে জেল-জরিমানা* পানিতে চুবিয়ে মাংসের ওজন বাড়ানোর চেষ্টা

Advertisement

থরে থরে সাজানো। মাংস নয় যেন শুটকি! মাংসের গন্ধ যতটা না অনুভব করা যাচ্ছে তার চেয়ে বেশি মাছি ও মাছির ভনভনানি। শুধু ফ্রিজেই নয়, বাইরেও। পানিতে চুবিয়েও অপকৌশলী ব্যবসায়ীদের চেষ্টা চলছে মাংসের ওজন বাড়ানোর। রাজধানীর গুলিস্তানের বড় মাংসের বাজারের মধ্যে অন্যতম কাপ্তান বাজার। সেখানে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে শুক্রবার সকাল ৯ টা থেকে দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত ভেজালবিরোধী অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় এমন দৃশ্য দেখা যায়।

অভিযানে সহযোগিতা করে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) ও জেলা বাজার নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা। অভিযানের সময় মোট ১৩টি দোকান থেকে ৪ মণ পচা মাংস জব্দ করা হয়। ১৬ জনকে আটকের পর ৫ জনকে কারাদণ্ড এবং বাকিদের সোয়া ৬ লাখ টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন র্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। তিনি জাগো নিউজকে জানান, রমজান উপলক্ষে সিটি কর্পোরেশন থেকে গরু ও মহিষের মাংসের দাম নির্ধারণ করে দিলেও ভোক্তাদের অভিযোগ, তা মানছেন না রাজধানীর অধিকাংশ মাংস ব্যবসায়ী। নির্ধারিত দাম উপেক্ষা করে বেশি দামে গরুর মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। এ ধরনের অভিযোগের পর মাংসের দোকান অভিযান চালানো হয়।

Advertisement

তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন নির্ধারিত মূল্য অমান্য করে গরুর মাংস ৫৫০-৬০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা, মাংস পানিতে চুবিয়ে রেখে ওজন বাড়ানো, পচা মাংস বিক্রি এবং ওজনে কম দেয়ায় কাপ্তান বাজারের ৫ জনকে কারাদণ্ড এবং ১১ জনকে সোয়া ৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

‘অধিকাংশ দোকানে টাটকা মাংস নেই। ফ্রিজের বাইরে রাখা মাংসের ওপরে অসংখ্য মাছি ভনভন করে উড়ছে। কোথাও বা মাংস পানিতে চুবিয়ে ওজন বাড়ানের অপকৌশলও দেখা যায়। ভেজাল মাংস বিক্রি ও অপকৌশলে ভোক্তাদের ওজনে কম দিয়ে প্রতারণার বিষয়ে সদুত্তর দিতে না পারায় তাদের জেল-জরিমানা করা হয়’- বলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

যাদের দণ্ড ও জরিমানা করা হয়েছে

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম জানান, ফরহাদ মাংসের দোকানের রতন ও কাউসার হামিদ নামে দুজনকে দুই মাস করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। আর আলিম মুন্সির খাসির দোকানের রুবেল শেখকে দুই মাসের কারাদণ্ড, মনু মিয়ার খাসির গোশতের দোকানের মো. নাজিম ও হায়দারকে দুই মাসের কারাদণ্ড, মেসার্স বিল্লাল এন্টারপ্রাইজের মো. রকি ও বুলুকে ২৫ হাজার টাকা করে মোট ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ মাসের কারাদণ্ড, মনিরের মাংসের দোকানের মনির হোসেনকে ৫০ হাজার টাকা অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড, জসিম গরুর গোশতের দোকানের নয়ন মিয়াকে এক লাখ টাকা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদণ্ড, ত্রিরত্ম গরুর মাংসের দোকানের হাজী মো. রুবেল চিশতীকে এক লাখ টাকা ও অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

Advertisement

এ ছাড়া লাট মিয়ার পিয়র খাসির দোকানের হাজী মো. শওকত আলীকে ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ২ মাসের কারাদণ্ড, আকবর স্টোর মাংসের দোকানের মিলু শেখ, আলিম বিফ শপের আরমান, আজগর মাংসের দোকানের মো. আজগর ও লাল বাবুর মাংসের দোকানের গুলজার খানকে ৫০ হাজার টাকা ও অনাদায়ে এক মাস করে কারাদণ্ড, জনপ্রিয় চায়ের দোকানের মো. শাহ আলমকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে দেয়া হয়েছে দুই মাসের কারাদণ্ড।

জেইউ/জেডএ/পিআর