পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকি দিয়ে ছাত্রীদের চুমু খাওয়ার কথা বলে বিতর্কের মুখে পড়েছেন বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মনোজ কান্তি মন্ডল।
Advertisement
একই সঙ্গে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ তোলে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভের মাধ্যমে তার অপসারণ ও বিচার দাবি করেছে কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার অধ্যাপক মনোজ কান্তি মন্ডলের অপসারণ ও তার বিচার দাবিতে কলেজের অধ্যক্ষ অভিজিৎ বসুকে অবরুদ্ধ করে শিক্ষার্থীরা। পরে উপাধ্যক্ষ শেখ মোস্তাহিদুল আলম রবিকে প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী ২৮ মে’র মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট অধ্যক্ষের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে, বিতর্কে পড়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে কলেজ ছেড়ে পালিয়েছেন বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মনোজ কান্তি মন্ডল।
Advertisement
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান মনোজ কান্তি মন্ডল ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করেছেন। সেই সঙ্গে ইনকোর্স ও মৌখিক পরীক্ষায় ফেল করানোর হুমকি দিয়ে ছাত্রীদের চুমু খাওয়ার কথা বলেছেন। পাশাপাশি কোরআন ও গীতায় ভুল রয়েছে উল্লেখ করে মনোজ কান্তি মন্ডল ক্লাসে লেকচার দিয়ে বলেন, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ও শ্রীকৃষ্ণের বাণী এই যুগে অচল।
এসব কারণে তার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে বৃহস্পতিবার সকালে বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যানের ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। পরে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্ক্ষীরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভে যোগ দেয়। অচল হয়ে পড়ে সরকারি পিসি কলেজ। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে কলেজ ছেড়ে পালিয়ে যান মনোজ কান্তি মন্ডল।
স্থানীয় সূত্র জানায়, অধ্যাপক মনোজ কান্তি মন্ডলের অপসারণ ও ছাত্রীদের যৌন হয়রানির বিচার দাবিতে অধ্যক্ষ অভিজিৎ বসুকে অবরুদ্ধ করে শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে মনোজ কান্তি মন্ডলের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে তোলে অধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে লাগাতার আন্দোলনের ডাক দেয়।
বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজের অধ্যক্ষ অভিজিৎ বসু জানান, অধ্যাপক মনোজ কান্তি মন্ডলের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে সকাল থেকে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। মনোজ কান্তি মন্ডলের বিরুদ্ধে বাংলা বিভাগের অনেক ছাত্রী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তাদের অভিযোগ গুরুতর।
Advertisement
তিনি বলেন, বিষয়টি আমলে নিয়ে উপাধ্যক্ষ শেখ মোস্তাহিদুল আলম রবিকে প্রধান করে শিক্ষকদের দিয়ে ৫ সদস্যের একটি তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী ২৮ মে’র মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর অধ্যাপক মনোজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তদন্ত কমিটির প্রধান উপাধ্যক্ষ শেখ মোস্তাহিদুল আলম রবি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা তদন্ত কাজ শুরু করে দিয়েছি। যথাসময়ে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।
বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগের বিষয়ে কয়েকজন ছাত্রী জানান, ওই শিক্ষকের চরিত্র ভালো না। তিনি পরীক্ষায় ফেল করানোর কথা বলে চুমু খাওয়ার কথা বলেছেন। আমাদের কাছে একাধিক প্রমাণ আছে। তাই আমরা তার অপসারণ ও বিচার চাই।
শওকত আলী বাবু/এএম/পিআর