ঈদকে সামনে রেখে ফ্যাশন-সচেতন আর রুচিশীল ব্যক্তিরা ছুটছেন দর্জি বাড়িতে। আগেভাগেই নিজেদেরে পছন্দসই জামা-কাপড় বানিয়ে রাখছেন তারা। এজন্য দর্জি পাড়ায় বেড়েছে ঈদ কেন্দ্রিক ব্যস্ততা। চাঁদ রাতের আগেই ক্রেতারাদের হাতে পোশাক তুলে দিতে দিন-রাত কাজ করছেন কারিগররা।
Advertisement
বুধবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর, এলিফ্যান্ট রোড, চাঁদনি চক ও মিরপুর এলাকা ঘুরে পোশাক তৈরির দোকানগুলোতে ব্যস্ততা চোখে পড়ে। রোজার প্রথম সপ্তাহেই এই ব্যস্ততা ছিল চোখে পড়ার মতো।
অনেকে তৈরি পোশাক কেনায় অভ্যস্ত। এর পাশাপাশি বিভিন্ন উৎসবে-পার্বনে দর্জির কাছে ইচ্ছে মতো পোশাক বানানোর রীতি-রেওয়াজ বাঙালির ঐতিহ্যের অংশ। তাই দর্জির দোকানে ভিড় করছেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষই। তবে বরাবরের মতো এবারও তরুণীদের সংখ্যাই বেশি।
ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তরা ভারতীয় টিভি সিরিয়ালের বিভিন্ন চরিত্রের পোশাকের আদল ও ডিজাইনে পোশাক বানাতে চায়। এজন্য মোবাইলে পছন্দের পোশাকের ছবি নিয়ে অনেকে ছুটে আসছেন তারা। নিজের জন্য পছন্দের ডিজাইনের পোশাকের অর্ডার দিচ্ছেন।
Advertisement
দেখা গেছে, শার্ট-প্যান্টের চেয়ে ছেলেদের বেশি আগ্রহ পাঞ্জাবিতে। মেয়েদের পছন্দ সালোয়ার-কামিজ আর লং ফ্রক। সঙ্গে রয়েছে নানা রঙের বোরকা। এটিও এখন তরুণীদের ফ্যাশনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দর্জিরা বলছেন, ঈদ ঘিরেই তাদের ব্যস্ততা সবচেয়ে বেশি থাকে। শবে বরাতের পর থেকেই ঈদে পোশাক বানাতে ক্রেতারা আসতে শুরু করেছেন। দিন গড়াতেই চাপ আরও বাড়বে।
মিরপুরের টপটেনের কাটিং মাস্টার আনেয়ার বলেন, ক্রেতারা আগের মতো এখন আর ক্যাটালগ চাচ্ছে না। বরং তারা নিজেরাই ইন্টারনেট থেকে নামিয়ে আমাদেরকে দেখায়, ওই হিসেবে আমরা তৈরি করে দেই।
এক্ষেত্রে ছেলেদের পোশাক তৈরির দোকানগুলোতে মেয়েদের মতো ততোটা ভিড় না থাকলেও শার্ট, প্যান্ট ও পাঞ্জাবি তৈরির সংখ্যা অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেড়েছে। গরমের কারণে এবার ব্লেজার বা স্যুটের চাহিদা কম।
Advertisement
জাপান গার্ডেন সিটির জারা ফ্যাশন টেইলারিং অ্যান্ড ফেব্রিক্সের কর্ণধার ইকবাল হোসেন বললেন, তরুণ-তরুণীরা এখন ফ্যাশন সম্পর্কে সচেতন। সবাই নিজেদের পোশাকে আনতে চান হাল ফ্যাশনের ডিজাইন। রেগুলার কিছু কাস্টমারের অর্ডার পেয়েছি, প্রতিবার নতুন নতুন কাস্টমাররা কাপড় বানাতে আসে। তবে এবারে সে সংখ্যাটা একটু কম।
জানা গেছে, ডিজাইনের ওপর নির্ভর করে ৫শ থেকে ৮ শ টাকা পর্যন্ত রাখা হচ্ছে থ্রি-পিসের মজুরি। প্যান্টের মজুরিও একই। তবে শর্টের ও পাঞ্জাবির মজুরির ভিন্নতা রয়েছে।
দর্জিরা জানান, ১৩ থেকে ১৫ রোজা পর্যন্ত আমরা অর্ডার নেব। যেহেতু চাঁদ রাতের আগে ক্রেতাদের পোশাক দিতে হয়। এজন্য যা দিতে পারব সেই অনুযায়ী অর্ডার নিচ্ছি।
এলিফ্যান্ট রোডের একটি বিপণি বিতানে দুই মেয়ে নিয়ে কেনাকাটা করতে এসেছিলেন সুমাইয়া জামান। তিনি বলেন, ঈদের সময় দর্জির দোকানগুলো বাড়তি টাকা আদায় করছে। একটা সুতির ড্রেস এক হাজার থেকে ১২শ টাকায় কিনে চারশ টাকা মজুরি দিয়ে বানাতে হয়। আর গর্জিয়াস ড্রেসগুলো তো ওরা বানাতে নেয় পাঁচশ থেকে আটশ টাকা। এজন্য অনেকেই রেডিমেড থ্রি-পিস কিনে ঝামেলা এড়ান। তবে এবার আমি দুটি থ্রি-পিস বানাতে দিয়েছি। এমএ/এমবিআর/আরআইপি