দেশজুড়ে

ছয় জেলায় ৯ মাদক ব্যবসায়ী নিহত

সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযানে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৬ মাদক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া মাগুরায় দু’পক্ষের গোলাগুলিতে ২ ও সাতক্ষীরায় ১ মাদক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।

Advertisement

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ বাবুল প্রকাশ ওরফে লম্বা বাবুল (৩৫) এবং সদর দক্ষিণে রাজিব (২৬) নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। বুধবার রাত ১টার দিকে জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন আমানগন্ডা সলাকান্দা নতুন রাস্তার মাথায় এবং রাত সোয়া ২টার দিকে সদর দক্ষিণ উপজেলার চৌয়ারা সংলগ্ন ঢাকা-চট্টগ্রাাম পুুরাতন ট্যাংক রোডের গোয়ালমথন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তারা দু'জনই তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী বলে পুলিশ দাবি করেছে। উভয় ঘটনাস্থল থেকেই অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিকে মাগুরায় আযুব হোসেন ও মিজানুর রহমান কালু নামে দুই মাদক ব্যবসায়ীর গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সদর উপজেলার পারনান্দুয়ালী হাউসিং প্রজেক্ট থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানায়, গভীর রাতে হাউসিং প্রজেক্টে দু’দল মাদক ব্যবসায়ী মাদকের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে গোলাগুলি করছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের টহল দল সেখানে যায়। গিয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দু’জনকে দেখতে পেয়ে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসে। তবে কর্তব্য চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। পরে এলাকাবাসী তাদেরকে শনাক্ত করেন। নিহতদের বিরুদ্ধে থানায় ২০টির বেশি মাদকের মামলা রয়েছে।

Advertisement

সাতক্ষীরায় আব্দুল আজিজ (৪৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে কালিগঞ্জ উপজেলার ভাড়াসিমলা ইউনিয়নের চৌবাড়িয়া গ্রামের সিদ্ধের পুকুর নামক স্থান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশীয় পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি ও ৪৮ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে।

কালিগঞ্জ থানার ওসি হাসান হাফিজুর রহমান জানান, ধারণা করা হচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীদের নিজেদের গোলাগুলিতে সে নিহত হয়েছে। মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ১৫ মামলার আসামি, মাদক ব্যবসায়ী সেলিম ওরফে ফেন্সি সেলিম নিহত হয়েছেন। এ সময় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসিসহ ৬ জন আহত হয়েছেন।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার ভোর ৩টায় সিদ্ধিরগঞ্জের দক্ষিণ নিমাইকাসারী ক্যানেলপাড় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেলিমকে গ্রেফতার করতে গেলে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে একটি একনলা বন্দুক, একটি সুইসগিয়ার চাকু, ৫ বোতল ফেনসিডিল ও প্রায় ৫শ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে।

Advertisement

সেলিম ৩নং ওয়ার্ডের সিদ্ধিরগঞ্জের নিমাইকাসারী বাঘমারা এলাকায় আবুল কাশেম ওরফে গাঁঞ্জা কাশেমের ছেলে। কাশেম এলাকায় গাজার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। সেলিমের মা মর্জিনা বেগমও মাদক ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত। সেলিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১৫ এর মাদক মামলা রয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আমির খাঁ (৪০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। বুধবার রাত পৌনে ২টার দিকে উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের বনগজ স্টিলসেতুর কাছে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের দাবি নিহত আমির জেলার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে নয়টি মাদক ও একটি হত্যাসহ মোট ১২টি মামলা রয়েছে আখাউড়া থানায়। এ ঘটনায় আখাউড়া থানা পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছেন।

আখাউড়া থানার ওসি মোশাররফ হোসেন তরফদার জানান, রাতে মাদকবিরোধী অভিযানে যায় পুলিশ। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আমির ও তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়ে। কিন্তু সহযোগীদের গুলিতে মারা যান আমির। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান, একটি কার্তুজ, একটি রামদা, দুটি বড় ছোরা, ১০ কেজি গাঁজা ও ৮ বোতল কফ সিরাপ উদ্ধার করে।

ফেনীর ফুলগাজিতেও পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শাহমিরন শামীম ও মনির নামে দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার সীমান্তবর্তী জাম্বুড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

পুলিশ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান গেলে পুলিশের উপর গুলি ছোড়ে মাদক ব্যবসায়ীরা। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে দুই মাদক ব্যবসায়ী আহত হয়। পরে তাদের ফেনী আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে তাদের মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থল থেকে ২শ বোতল ফেনসিডিল ও ৭শ পিস ইয়াবা, একটি পিস্তল ও একটি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সময় ৮ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ফুলগাজী থানায় ১০টিরও বেশি মাদক মামলা রয়েছে।

এফএ/আরআইপি