জাতীয়

স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণে সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছেন দেশের ৩০ বিজ্ঞানী

বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু-১ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তার কক্ষপথে পৌঁছেছে। এর নিয়ন্ত্রণ নিতে গাজীপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় স্থাপিত দুই গ্রাউন্ড স্টেশনে দেশের ৩০ জন তরুণ বিজ্ঞানী রয়েছেন সদা জাগ্রত ও প্রাণবন্ত। চুক্তি মোতাবেক তিন বছর বিদেশিদের তত্ত্বাবধানে থাকলেও স্যাটেলাইটটি আমাদের বিজ্ঞানীদের নিয়ন্ত্রণে আসতে খুব বেশি সময় লাগার কথা না।

Advertisement

বুধবার জাগো নিউজকে এসব কথা বলেন স্যাটেলাইটের প্রকল্প পরিচালক মো. মেসবাহউজ্জামান।

তিনি বলেন, আমাদের তরুণ বিজ্ঞানীরা অনেক ফার্স্ট। স্যাটেলাইটের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেসের বিজ্ঞানীরা চুক্তি মোতাবেক তাদের তিন বছর প্রশিক্ষণ দেবেন। কিন্তু এই সময়ের আগেই আমাদের দেশের ৩০ জন তরুণ বিজ্ঞানী তারকা হয়ে যাবে বলে আমরা আশা করছি। তিন বছর লাগবে বলে মনে হচ্ছে না। আমাদের বিজ্ঞানীরাই নিয়ন্ত্রণ করবেন স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১–এর সব দিক ও বিভাগ। ইতোমধ্যে তারা তাদের সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছেন। এর ফলে ধারণা করা যাচ্ছে দেশের দুই গ্রাউন্ড স্টেশনের নিয়ন্ত্রণে খুব বেশি দিন বিদেশিদের প্রয়োজন হবে না।

 গাজীপুরের গ্রাউন্ড স্টেশন

Advertisement

এ বিষয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, দেশের ৩০ জন তরুণ বিজ্ঞানী কাছে ভবিষ্যতে আমাদের মহাকাশের অনেক দূর নিয়ে যাবে। এক বিশাল কর্মযজ্ঞের সূচনা হলো। একদিন মহাকাশ জগৎ জয় করবো আমরা। আমাদের তরুণদের দ্বারা এটি সম্ভব বলে আমি বিশ্বাস করি। এখানে ভিন্ন যুক্তির অবকাশ নেই।

তিনি বলেন, গ্রাউন্ড স্টেশনে দেশের ছেলে-মেয়েরা কাজ করছে। তারা সবাই যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশের একটি বড় উপকরণ হলো স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১।

উল্লেখ্য, বিসিএসসিএলের অপারেশন ইউনিটে নিয়োগ পাওয়া ৩০ তরুণের মধ্যে ১৮ জন দু’ভাগে গাজীপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ার গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে পরিচালনা করবেন স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু -১। বাকি ১২ জন থাকবেন গ্রাউন্ড স্টেশনের সিভিল ও ইঞ্জিনিয়ারিং সাইটে।

 রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ার গ্রাউন্ড স্টেশন

Advertisement

গত ১১ মে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে মহাকাশের পথে উড়ে যায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। এরপর দুটি ধাপে এর উৎক্ষেপণ প্রক্রিয়া শেষ হয়। এর মধ্যে উৎক্ষেপণ স্থান থেকে ৩৬ হাজার কিলোমিটার দূরে কক্ষপথে যাওয়ার পথে ৩৫ হাজার ৭০০ কিলোমিটারই পার হয় কয়েক মুহূর্তে। রকেটের স্টেজ-২ খুলে গেলে এটির গতি ধীর হয়ে যায়।

উৎক্ষেপণের টানা ১০ দিন পর ২১ মে নিজ কক্ষপথে পৌঁছে স্যাটেলাইটটি। ২১ মে সন্ধ্যায় রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় স্থাপিত গ্রাউন্ড স্টেশন সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করে। আর ২২ মে উপগ্রহটি আংশিক (পার্শিয়াল) সংকেত পাঠাতে শুরু করে। গাজীপুরের গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে ওই সংকেতটি পাওয়া যায়। বঙ্গবন্ধু গ্রাউন্ড স্টেশন গাজীপুরের ম্যানেজার নাসিরুজ্জামান বনি সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

কক্ষপথে চূড়ান্তরূপে অবস্থান নেয়ার পর ৩৬ হাজার কিলোমিটার ওপর দিয়ে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করবে স্যাটেলাইটটি। পৃথিবীর মতো ২৪ ঘণ্টায় একবার সূর্য প্রদক্ষিণ করবে। ফলে পৃথিবী হতে স্যাটেলাইটটিকে স্থির মনে হবে। স্যাটেলাইট থেকে সেবা পেতে সব মিলে তিন মাসের মতো সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

অারএম/জেডএ/পিআর