যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব মিসিগানের একদল গবেষক মানব শরীরের নতুন একটি চর্বি কোষ পাওয়ার দাবি করেছেন। তারা বলেছেন, ধূমপান ছাড়ার সঙ্গে শরীর মুটিয়ে যাওয়ার একটি সম্পর্ক রয়েছে। আর এ তথ্য তারা পেয়েছেন এই চর্বি কোষ বিশ্লেষণে। মানুষের মুটিয়ে যাওয়া ঠেকানোর চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে তাদের নতুন এই গবেষণার ফল।
Advertisement
সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অব মিসিগানের লাইফ সাইন্স ইনস্টিটিউট নতুন এই চর্বি কোষের ওপর গবেষণা চালায়। নতুন এই কোষ থার্মোজেনিক ‘বেইজ’ চর্বি কোষ নামে পরিচিত।
লাইফ সাইন্স ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ও জ্যেষ্ঠ গবেষক জুন উ এর আগে এক গবেষণায় এই ‘বেইজ চর্বি কোষের’ ব্যাপারে কথা বলেছিলেন। থার্মোজেনেসিসের মাধ্যমে শরীরে তাপ উৎপন্ন হওয়ার পর যখন সক্রিয় হয়ে উঠে, তখন শরীরের শক্তি ক্ষয় করে ‘বেইজ’ চর্বি কোষ।
আরও পড়ুন : জীবাণুমুক্ত পরিবেশই শিশুদের ক্যান্সারের কারণ?
Advertisement
বেইজ চর্বি কোষ কীভাবে কাজ করে সেটি মূল্যায়ন করার জন্য গবেষণা শুরু করেন জুন উ ও তার গবেষক দল। তাদের গবেষণার ফল বিজ্ঞানবিষয়ক জার্নাল ন্যাচার মেডিসিনে প্রকাশ করা হয়। মানুষ ও ইঁদুরের শরীরে থাকা বেইজ চর্বি কোষে সিএইসআরএনএ২ নামের একটি অনুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে জানান তারা। এটি এমন এক ধরনের প্রোটিন যা থার্মোজেনেসিস বা তাপ তৈরিতে ভূমিকা রাখে।
তবে ইঁদুর ও মানুষের সাদা চর্বিতে সিএইসআরএনএ২ এর উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। এই চর্বি শক্তি ক্ষয়ের বদলে তা সঞ্চয় করে রাখে।
এছাড়া মস্তিষ্কের নিকোটিন নির্ভরতা নিয়ন্ত্রণের জন্যও পরিচিত সিএইসআরএনএ২। এমন অবস্থায় নতুন এই গবেষণা একটি বিষয়কে সামনে এনেছে। তারা দেখিয়েছেন, কেন ধূমপান ছাড়ার পর মানুষের ওজন বেড়ে যায়। গবেষকরা বলেছেন, সিগারেটের নিকোটিন ধূমপানকারীদের ক্ষুধাকে দমন করে।
আরও পড়ুন : রোজায় মুসলিমদের ছুটি নিতে বলে বিপাকে ডেনমার্কের মন্ত্রী
Advertisement
গবেষক জুন উ জোর দিয়ে বলেছেন, মুটিয়ে যাওয়া এড়াতে মানুষকে ধূমপানে উৎসাহিত করা এই গবেষণার উদ্দেশ্য নয়। বরং মানুষকে মুটিয়ে যাওয়ার ভোগান্তি ও বিপাকীয় সমস্যা থেকে রেহাই পেতে সহায়তা করতে পারে তাদের এই উদ্ভাবন।
তিনি বলেছেন, সম্পূর্ণ শরীরের বিপাকীয় সুস্থ্যতা নিয়ন্ত্রণে বেইজ ফ্যাট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইঁদুরের ওপর চালানো পরীক্ষায় দেখা গেছে, পুরো নয়; যদি এই নিয়ন্ত্রণের কোনো একটি অংশ কাজ না করে তাহলে আপনাকে বিপাকীয় চ্যালেঞ্জের সঙ্গে আপস করতে হবে।
সূত্র : দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট।
এসআইএস/আরআইপি