সহকারী কমিশনার (ম্যাজিস্ট্রেট) খন্দকার রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে গর্ভের সন্তান হত্যা, অর্থ হাতিয়ে নেয়া, যৌতুক দাবিসহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন স্ত্রী ও পুলিশ কনস্টেবল পারুল আক্তার। মঙ্গলবার যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন তিনি। যশোরের অভয়নগর উপজেলার ধুলগ্রামের বাসিন্দা পুলিশ কনস্টেবল পারুল আক্তার লিখিতভাবে এসব অভিযোগ উত্থাপন করে বলেন, চলতি বছর ২৯ মার্চ তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা জোর করে তাকে ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত ঘটান। স্বামীকে ‘যৌতুকলোভী, সন্তান হত্যাকারী, নারী নির্যাতনকারী’ আখ্যা দিয়ে তার শাস্তি ও ন্যায় বিচার দাবি করেন পারুল।
Advertisement
সংবাদ সম্মেলনে পারুল অভিযোগ করেন, তার স্বামী রবিউল একই উপজেলার নাউলি এলাকার বাসিন্দা। কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পড়ার সময় থেকে তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। ২০১০ সালে তিনি পুলিশে কনস্টেবল হিসেবে যোগদান করেন। সেই সময় থেকে প্রতি মাসে তিনি পড়াশোনা বাবদ রবিউলকে পাঁচ হাজার করে টাকা দিতেন। ২০১৩ সালের ২৪ নভেম্বর তাদের বিয়ে হয়।
বিয়ের আগে তাকে নগদ দুই লাখ টাকা দেন দাবি করে পারুল বলেন, সেই সময় তারা ঢাকায় একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। বিয়ের প্রায় এক বছর পর রবিউল (১০ আগস্ট ২০১৪, ৩৩তম বিসিএস) চাকরিতে যোগ দেন।
পারুল বলেন, ‘জাতিসংঘ মিশনে এক বছর থাকার পর সেখান থেকে প্রাপ্ত অর্থের দশ লাখ টাকা দিই রবিউলকে। সেই সময় স্বামীর কর্মস্থল পটুয়াখালীতে থাকতাম। এক সময় রবিউল জোর করে আমাকে পুলিশের চাকরি থেকে ইস্তফা দেয়ায়।’
Advertisement
এদিকে পারুলের অভিযোগ বিষয়ে জানতে ফোনে যোগাযোগ করা হয় রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে কর্মরত সহকারী কমিশনার (ম্যাজিস্ট্রেট) খন্দকার রবিউল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘পারুলের সঙ্গে আমার বনিবনা হতো না। সে আমাকে শারীরিক ও মানসিক দু’ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। অতি দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় আমি তাদের অনেক সহায়তা করেছি। সে প্রচণ্ড সন্দেহপ্রবণ। পটুয়াখালী থাকাকালে (ইউএনওর দায়িত্বে) স্কুলের প্রশ্নপত্র বের করার জন্য বাড়ির বাইরেও যেতে দেয়নি পারুল। সে আমাকে বাইরে থেকে দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে দেয়। সেসময় সেখানকার জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি অবহিত ছিলেন।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘তার কারণে আমার সত্তরোর্ধ্ব বাবা-মা কষ্টে ছিলেন। আমি তাকে পাঁচ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্রও কিনে দিয়েছি।’
রবিউল যৌতুক দাবির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার এক ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, আরেকজন মেডিকেলে পড়ে। বড় বোন ও ভগ্নিপতি ইংল্যান্ডে থাকেন। তারাই আমাদের পড়াশুনার বিষয়টি দেখতেন।’
তিনি বলেন, ‘পারুল মানসিকভাবে অসুস্থ। গত ২২ এপ্রিল তাকে তালাক দিয়েছি। আমি চাই, সে তার খোরপোষ বাবদ যে টাকা হয়, তা গ্রহণ করুক।’
Advertisement
মিলন রহমান/এফএ/এমএস