ব্যানার সরিয়ে ফেলায় রাস্তায় বসে ক্ষোভ জানিয়েছেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। সাহেববাজার এলাকায় ফুটওভার ব্রিজে টানানো তার ব্যানার সরিয়ে নগর আওয়ামী লীগের একটি ব্যানার টানিয়ে দেয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার নগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার এলাকায় আরডিএ মার্কেটের সামনের সড়কে বুলবুল এই কর্মসূচি পালন করেন। কিন্তু এ সময় মেয়রের সামনে পয়সা ছুড়ে এক ব্যক্তি প্রতিবাদের কটাক্ষ করলেও তাকে চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ।
Advertisement
জানা যায়, সোমবার রাতে মেয়রের ওই ব্যানারটি সরিয়ে ফেলা হয়। এরপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের ব্যানার টানিয়ে দেন। নগর বিএনপির সভাপতি ও সিটি মেয়র বুলবুল তার ব্যানারে পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে নগরবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। আহ্বান জানিয়েছিলেন নগর পরিচ্ছন্ন রাখার। আর মহানগর আওয়ামী লীগের ব্যানারে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের পক্ষ থেকে নগরবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। ব্যানারে আসছে সিটি নির্বাচনে লিটনকে মেয়র নির্বাচিত করারও আহ্বান জানানো হয়েছে।
রাতে ব্যানার সরিয়ে ফেলার খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। এ সময় মুখোমুখি অবস্থান নেন বিএনপি-ছাত্রদল ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সেখানে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনও উপস্থিত ছিলেন। পরে পুলিশ গেলে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তারা সবাই চলে যান।
তবে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগের ব্যানার সরিয়ে নিতে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় বেধে দিয়ে আল্টিমেটাম দেন মেয়র বুলবুল। বলেন এই সময়ের মধ্যে ব্যানার অপসারণ করা না হলে তিনি রাস্তায় বসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। কথামতো মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় তিনি রাসিকের একজন নারী কাউন্সিলর ও দলের কয়েকজন নেতাকর্মীকে নিয়ে ওই ফুটওভার ব্রিজের সামনে গিয়ে রাস্তায় বসে পড়েন।
Advertisement
এ সময় পুলিশ গিয়ে তাদের চারপাশ থেকে ঘিরে থাকে। দুপুর ১২টা ২৪ মিনিটের দিকে কেউ একজন মেয়রের সামনে এক টাকার একটি কয়েনও ছুড়ে মারেন। কয়েনটি মেয়রের সামনে গিয়ে পড়ে। এ সময় পুলিশের একজন কর্মকর্তা পয়সা ছুড়ে ফেলা ব্যক্তিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেন। তবে অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে তাকে শনাক্ত করা যায়নি। পরে ওই পুলিশ কর্মকর্তার নির্দেশে পুলিশের একজন সদস্য মেয়রের সামনে থেকে কয়েনটি সরিয়ে নেন।
এর কয়েক মিনিট পরই নগর ছাত্রলীগের সভাপতি রকি কুমার ঘোষের নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী একটি মিছিল নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। তারা মেয়র বুলবুলের কাছ থেকে মাত্র কয়েকহাত দূরে অবস্থান নিয়ে মেয়রকে কটূক্তি করে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় উত্তেজনা দেখা দেয় ও নগরীর প্রাণকেন্দ্রের এই রাস্তায় সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। ১২টা ৫৪ মিনিটে মেয়র বুলবুল রাস্তা থেকে উঠে চলে যান। পুলিশ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদেরও সরিয়ে দেয়।
এর আগে কর্মসূচি চলাকালে অবস্থান কতক্ষণ চলবে জানতে চাইলে মেয়র বুলবুল বলেন, ‘দেখা যাক, এটা প্রতিবাদ। মানুষকে তো রাস্তায় থাকতে হবে। সব জায়গায় আওয়ামী লীগের দখলদারি চলছে। আমার ব্যানার সরিয়ে ফেলে তারা নিজেদের ব্যানার টানিয়ে হীনমন্যতার পরিচয় দিয়েছে।’
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘ওভারব্রিজে আগে থেকে আওয়ামী লীগেরই ব্যানার টানানো ছিল। মেয়র বুলবুল তা অপসারণ করে নিজেরটা টানিয়েছিলেন। তাই দলের কর্মীরা তার ব্যানার সরিয়ে আবার আওয়ামী লীগেরটা টানিয়েছেন। ব্যানার সরিয়ে নেয়ার কোনো সিদ্ধান্ত নেননি বলেই জানান লিটন।’
Advertisement
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এফএ/এমএস