আইন-আদালত

দুই মামলায় খালেদার জামিন আবেদন শুনানি পেছালো

দুই মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন শুনানি পিছিয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধী আলবদর-রাজাকারদের মন্ত্রী করে তাদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দেয়ার অভিযোগে মানহানির মামলাটি করা হয়। আর তথ্য গোপন করে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে জন্মদিন পালনের অভিযোগে করা হয় অপর মামলাটি। মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ রানা জাগো নিউজকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

Advertisement

হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মঙ্গলবার মামলা দুটি আগামী ২৮ মে সোমবার শুনানি করার জন্য আদেশ দেন। আদালতে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা।

মাসুদ রানা জানান, আজ মামলার দুটির জামিন আবেদন শুনানির জন্য আদালতে উপস্থাপন করা হলে আদালত তা পিছিয়ে দেন। আদালত বলেন, আগামীকাল বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলা শুনানির জন্য রয়েছে। তাই সাধারণ (জামিনের মামলা) মামলার শুনানি এই দুই দিনে করা যাবে না। আর প্রতি সপ্তাহের রোববার ওই কোর্টে অন্য মামলার শুনানি হয়। তাই জামিন শুনানির জন্য হাইকোর্ট মামলাটি সোমবারের কার্যতালিকায় রাখবেন।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানান, মঙ্গলবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পৃথক দুই মামলায় এই জামিন আবেদন করা হয়। খালেদা জিয়ার পক্ষে তার অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা আবেদন দুটি করেন। এর আগে আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে অনুমতি নেন। এরপর এফিডেবট আকারে মামলাটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে উত্থাপন করেন অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা। কিন্তু আদালত আবেদন দুটির বিষয়ে আগামী সপ্তাহে শুনানির দিন ধার্য করেন।

Advertisement

মামলার বিষয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানান, স্বীকৃত স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র ও জাতীয় পতাকার মানহানির অভিযোগে ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর এবি সিদ্দিকী একটি মামলা করেন।

অভিযোগে বলা হয়, ২০০১ সালে জোট সরকার গঠনের পর যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী-এমপি বানিয়ে তাদের গাড়িতে পতাকা তুলে দেন খালেদা জিয়া। এতে সমগ্র জাতির মানহানি হয়েছে।

২০১৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) এ বি এম মশিউর রহমান এই মামলায় প্রতিবেদন দাখিল করেন। ২০১৭ সালে ১২ নভেম্বর এই মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তবে এখনো তার বিরুদ্ধে সেই পরোয়ানা তামিল করা হয়নি।

অন্যদিকে, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে ভুয়া জন্মদিন পালনের অভিযোগে ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট সাংবাদিক গাজী জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে অপর মামলাটি দায়ের করেন।

Advertisement

মামলার এজাহারে বলা হয়, বিভিন্ন মাধ্যমে তার চারটি জন্মদিন পাওয়া গেলেও ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন মর্মে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি চারটি জন্মদিনের একটিও পালন না করে ১৯৯৬ সাল থেকে ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী তথা জাতীয় শোক দিবসে ঘটা করে জন্মদিন পালন করছেন।

এ মামলায় ২০১৬ সালে ১৭ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তবে এখনো তার বিরুদ্ধে তামিল করা হয়নি।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ২০ মে কুমিল্লা ও নড়াইলের পৃথক তিন মামলায় হাইকোর্টের অনুমতির পর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষে জামিন আবেদন দাখিল করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি মামলা বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

এফএইচ/জেডএ/এমএস