রাজধানীর ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুই নারীর গর্ভে সোমবার জন্ম নেয়া সাত নবজাতকের কেউ শঙ্কামুক্ত নয়। তাদের প্রত্যেকের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম। শুধু তাই নয়, নবজাতকরা শ্বাসপ্রশ্বাস জটিলতা ও রক্তের সংক্রমণজনিত সমস্যায় ভুগছে।
Advertisement
‘নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট’ বা নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (এনআইসিইউ) চিকিৎসাধীন এসব নবজাতকের কমপক্ষে চারজনকে কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস (লাইফ সাপোর্ট) দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার আগে সাত নবজাতক আদৌ বাঁচবে কি-না তা নিশ্চিত করা বলা সম্ভব নয়।
মঙ্গলবার দুপুরে জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের এনআইসিইউতে কর্তব্যরত সহকারী অধ্যাপক ডা. রোজিনা আক্তার এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, সোমবার বিকেলে অধ্যাপক ডা. রুমানা শেখের অধীনে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে সুইটি খাতুনের গর্ভে জন্ম নেয়া তিন নবজাতকই টেস্টটিউব বেবি। তারা আগেই জানতেন সুইটি খাতুন গর্ভ ধারণের মাত্র ২৬ সপ্তাহেই মা হয়েছেন। দুই কন্যা ও এক ছেলে নবজাতকের প্রত্যেকেরই ওজন খুবই কম।
Advertisement
একজন স্বাভাবিক নবজাতকের ওজন ২ হাজার ৫০০ গ্রাম হলেও তার তিন সন্তানের প্রথম জনের ওজন ৯০০ গ্রাম, দ্বিতীয় জনের ওজন ৯০০ গ্রাম এবং তৃতীয় জনের ওজন মাত্র ৭০০ গ্রাম।
রোজিনা আক্তার বলেন, ‘এর আগেও সুইটি খাতুনের দুটি সন্তান ২৫ সপ্তাহে জন্মগ্রহণ করে মারা যায়। তাদের হাসপাতালে সাড়ে ৮শ’ গ্রাম ওজনের নবজাতকের বেঁচে থাকার রেকর্ড থাকলেও এক্ষেত্রে এই তিন শিশুর ব্যাপারে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না ‘ এদিকে বেসরকারি একটি এনজিওতে কর্মরত সুইটি খাতুনের স্বামী মাহবুবুর রহমান জানান, তাদের সন্তান টেস্টটিউব পদ্ধতিতে নয় ভারতীয় এক চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধপত্র খেয়ে স্বাভাবিকভাবে জন্মগ্রহণ করেছে। নবজাতকের শারিরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ডাক্তার সাহেব আল্লাহ আল্লাহ করতে বলেছেন।’
সুইটি খাতুনের মামা জানান, হাসপাতালের আইসিইউতে ব্যয়বহুল চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার সঙ্গতি তাদের নেই। এ সময় তিনি বিকল্প কোথাও কম খরচে চিকিৎসা করানো যায় কি-না বারবার তা জানতে চাইছিলেন।
উল্লেখ্য সোমবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১২টার দিকে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের অধ্যাপক ডা. কানিজ ফাতেমার অধীনে অস্ত্রপচারের মাধ্যমে সনিয়া আক্তারের গর্ভে জন্ম নেয়া চার নবজাতকের (৩ জন ছেলে ও ১ জন কন্যাশিশু) ওজনও স্বাভাবিক চেয়ে অনেকটাই কম। প্রথম জনের ওজন ১ কেজি ৯০০ গ্রাম, দ্বিতীয় জনের ১ কেজি ৬০০ গ্রাম, তৃতীয় জনের ১ কেজি ৫৬০ গ্রাম ও চতুর্থ জনের ২ কেজি ১০০ গ্রাম।
Advertisement
এনআইসিইউ’র চিকিৎসক ডা. রোজিনা আক্তার জানান, ‘সনিয়া আক্তারের চার নবজাতকই রক্তে সংক্রমণ ও শ্বাস প্রশ্বাসজনিত সমস্যায় ভুগছেন। ৭২ ঘণ্টা না গেলে তারা বেঁচে থাকবে কি-না তা বলা সম্ভব না।’
এমইউ/এমএমজেড/আরআইপি