আগামী নির্বাচনকে উদ্দেশ্য করে সরকার জনগণকে আতঙ্কিত করতে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে এমন অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
Advertisement
বিরোধী দলের দাবি উপক্ষো করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন করতে গেলে জনগণ সরকারের রাস্তায় এসে দাঁড়াবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা। দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এ সভার আয়োজন করে।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘ইদানিং দেখছেন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কি পরিমাণ বেড়েছে। একদিনে ১১ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। কেন করা হচ্ছে? সরকার এর আগে জঙ্গিদের নামে এ ধরনের কিছু কর্মকাণ্ড করেছিল। শুধু বিরোধী কণ্ঠকে স্তব্ধ করার জন্য।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘আজকেও তারা মাদকের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড করছে। দেশে কি কোনো আইন নেই? যদি কেউ মাদক ব্যবসায়ী হয়, যদি কেউ মাদক ব্যবহারকারী হয়, অন্যায়কারী হয় তাহলে এদেশে বিচারের ব্যবস্থা আছে। আইন আছে। আমাদের সংবিধান আছে। যেটা ভ্রুক্ষেপ করছে না এই সরকার।’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, তারা যদি অপরাধী হয় গ্রেফতার করে তাদের বিচার করা হোক, আমরাও বিচার চাই। এদেশে কারা সারা দেশে মাদক বিস্তার লাভে সাহায্য করেছে? এই সরকার। আমাদের দেশে তো এই ইয়াবা, এই ফেনসিডিল কোথাও এখন পর্যন্ত কেউ বলতে পারবে না বাংলাদেশে কোনো ফেনসিডিল তৈরি হয়, প্রস্তুত হয়। এটা কোথা থেকে আসে? বাইরে থেকে আসে। কোনো সভ্য দেশে বিচারবহির্ভূূত হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
তিনি বলেন, যারা এই অন্যায় করছে, ‘আমরাও মাদকের বিরুদ্ধে। আজকে আপনাদের এমপি-মন্ত্রী থেকে শুরু করে যাকে সারা বাংলাদেশ জানে মাদকের সম্রাট। যেই রাস্তা দিয়ে, যেই বর্ডার দিয়ে এই মাদক বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি প্রবেশ করে প্রথমে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। আজকে পত্রিকায় দেখছি, মাদকের যারা মূল নায়ক তাদের নাম আপনারা জানেন। তাহলে আপনারা প্রকাশ করুণ জনগণের কাছে। আমি দাবি করতে চাই, যদি এটা প্রকাশ করেন তাহলে তারা সবাই কোনো না কোনো নেতা বা কর্মী হবে। তা আপনারা প্রকাশ করবেন না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আজকে একটা প্রলেপ দেয়ার জন্য আজকে কিছু লোককে হত্যা করে তারা দেখাতে চায়। উদ্দেশ্য আগামী নির্বাচন, জনগণকে আতঙ্কিত করা। আপনারা জানেন খুলনায় কি করছে? যেভাবে আমাদের কর্মীদের গ্রেফতার করে আতঙ্কিত করেছে। ভোটের আগের রাতে আওয়ামী লীগের গুণ্ডাদের দিয়ে আমাদের এজেন্টদের হত্যার হুমকি দিয়েছে। যদি তারা সেন্টারে যায় তাহলে তাদের হত্যা করা হবে।
Advertisement
খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে আগামী আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার কথা বলে খন্দকার মোশাররফ বলেন, সব কিছু উপেক্ষা করে যদি সরকার আবারও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মত নির্বাচন করতে চায় তাহলে জনগণ তাদের রাস্তার সামনে এসে দাঁড়াবে। জনগণ এমনভাবে দাঁড়াবে যে আমরা বিএনপি জনগণের রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা তাদের সঙ্গে থাকব।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত এর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সাদেক হোসেন খান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট শিরিন সুলতানা, মিজানুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
কেএইচ/জেএইচ/আরআইপি