বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অাবদুল্লাহ অাল নোমান বলেছেন, জাল ভোট নয়, ভোটকেন্দ্র দখল নিয়ে বিএনপি এখন আতঙ্কিত। তিনি বলেন, খুলনা নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। কিছু জনগণ নৌকার প্রতীক নিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে ভোট দিয়েছে, যার কারণে বিএনপির প্রার্থী এক লাখ আট হাজার ভোট পেয়েছেন।
Advertisement
সোমবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, তার বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুর মুক্তির দাবিতে এই প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে 'দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন' নামের একটি সংগঠন।
পুলিশের সমালোচনা করে নোমান বলেন, ‘বর্তমানে পুলিশের আচরণ বলছে তারা তাদের দায়িত্ব পালন করছে না। সাদা পোশাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে, তাহলে জনগণ কোথায় যাবে?’
Advertisement
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে নিয়ে গেছে এ জন্য, যাতে নির্বাচন করতে না পারেন। কিন্তু কারাগারে নেয় শাসক, আর মুক্ত করে জনগণ। বিএনপির নেতাকর্মীরা কারাগারে আছে, তাদের বের করবে এ দেশের জনগণ।’
প্রতিবাদ সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘দেশে স্বাভাবিকভাবে সরকার পরিবর্তনের স্বাভাবিক রাস্তাটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিএনপি যে পন্থা বিশ্বাস করে তা হলো নির্বাচনের মাধ্যমে পরিবর্তনের। কিন্তু সেই পথটি এখন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।’
‘খুলনায় সর্বশেষ যে নির্বাচনটি হয়েছে তা প্রমাণ করে যে সরকার, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ, আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের ক্যাডার বাহিনী সব একাকার হয়ে গেছে। একে অপরের পিঠ চুলকাচ্ছে এবং এক পথে তারা চলাফেরা করছে,’- বলেন তিনি।
দুদু বলেন, ‘সংবিধানের ১২৫ অনুচ্ছেদেও আছে তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশন ক্ষমতা বহন করে। তারা তো সেভাবে চলেই নাই বরং পুলিশ-প্রশাসন সরকার তাদের যেভাবে চলতে বলেছে, তারা সেভাবে চলেছে। সর্বশেষ তারা বলেছে, নির্বাচন চমৎকার হয়েছে।’
Advertisement
সরকারবিরোধী এই নেতা বলেন, ‘তাহলে আমাদের পথটা কী? বেগম জিয়া কি জেলে মৃত্যুবরণ করবেন? ছাত্রদলের নেতা, বেগম জিয়ার সহকারী তারা কি জেলে মৃত্যুবরণ করবেন? যারা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে, গণতন্ত্রকে মানে তাদের এই প্রশ্ন একটু ভেবে দেখতে হবে।’
‘বিএনপি মনে করে পরিবর্তনের প্রধান পথ নির্বাচন। কিন্তু সেই যদি পদ্ধতি বন্ধ হয়ে যায়, সেই পথকে ফিরিয়ে আনতে বিএনপির গণ-অভ্যুত্থানের পথ বেছে নেবে, এটা কোনো বিপ্লবী পথ না। এটা সাংবিধানিক পথ,’- বলেন দুদু।
নিজ দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘এভাবে হবে না। নিজের সঙ্গে প্রতারণা করে আন্দোলন হয় না। একজন আরেকজনের কাঁধে দায় চাপাবেন এভাবে আন্দোলন হয় না। যদি আন্দোলন করতে হয় কৃষকের কাছে যেতে হবে। ছাত্রদের কাছে যেতে হবে। জনগণের কাছে যেতে হবে।'
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কেএম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে এবং দফতর সম্পাদক গোলাম সরোয়ারের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, নির্বাহী কমিটির সদস্য আলমগীর হোসেন, ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক আরিফা সুলতানা রুমা প্রমুখ।
কেএইচ/জেডএ/এমএস