শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো রানী মৌমাছি উৎপাদন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াৎ হোসেনের নেতৃত্বে একদল গবেষক এ সফলতা পেয়েছেন।
Advertisement
এই প্রযুক্তি ব্যবহারে মধুর উৎপাদন দেড় থেকে দুই গুণ বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া প্রজননজনিত বেশ কিছু সমস্যাও সহজেই কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই গবেষকদল।
কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় এ গবেষণা কার্যক্রম চলছে। এ পদ্ধতিতে রানী মৌমাছিকে প্রথমে অচেতন বা অনুভূতিহীন করা হয় এবং চলনে অক্ষম করে তোলা হয়। পরে সিরিঞ্জের মাধ্যমে তার যোনি গহ্বরে সংগ্রহকৃত ড্রোনের সিমেন বা শুক্রাণু প্রবেশ করানো হয়। এই ব্যবস্থায় রানী ও ড্রোন উৎপাদনই প্রধান উদ্দেশ্য।
কৃত্রিম উপায়ে সারা বছরই রানী মৌমাছি উৎপাদন সম্ভব যা প্রাকৃতিক উপায়ে সম্ভব নয় বলে দাবি করে বিশিষ্ট মৌ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, একটি ভালো উর্বর রানী মৌমাছির সফলভাবে সারা বছর ডিম দেয়ার জন্য গড়ে বারটির মতো পুরুষ মৌমাছির সঙ্গে মিলিত হওয়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমাদের রানী মৌমাছিগুলো দিন দিন ডিম দেয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে যা বিশ বছর আগে এমন ছিল না। এজন্য প্রয়োজন নিয়ন্ত্রিত মিলন বা কৃত্রিম প্রজনন। কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে উৎপাদিত মৌমাছি ৪-৫ বছর পর্যন্ত ডিম দিতে সক্ষম।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, অত্যধিক মাত্রায় কৃষিজমিতে কীটনাশক প্রয়োগ, পুষ্টিকর খাদ্যের অভাব, প্রজননজনিত দুর্বলতা ইত্যাদি কারণে রানী মৌমাছির প্রাকৃতিক মিলনে সফলতার হার দিনে দিনে কমে যাচ্ছে।
এই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশে মধুর উৎপাদন বাড়বে এবং মৌচাষীরাও অধিক মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ মধু উৎপাদনের মাধ্যমে তা বিদেশে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করা সম্ভব হবে।
এমবিআর/এমএস
Advertisement