বছরখানেক ধরে গুঞ্জন চলছে কণ্ঠশিল্পী বাপ্পা মজুমদার-অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী মেহবুবা মাহনুর চাঁদনীর সংসারে ভাঙন ধরেছে। তারা দুজনই নিরব থেকেছেন বিষয়টি নিয়ে, কেউ মুখ খোলেননি তেমন। এবার শোনা যাচ্ছে উপস্থাপিকা ও অভিনেত্রী তানিয়া হোসাইনকে বিয়ে করতে চলেছেন বাপ্পা মজুমদার। এটা কি শুধুই গুঞ্জন, না কি সত্যিই বিয়ে করতে চলেছেন তারা?
Advertisement
সোমাবার দুপুরে জাগো নিউজকে এ প্রশ্নের জবাবে বাপ্পা মজুমদার বলেন, ‘আমি দুই একদিনের মধ্যে এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেব। আমি চাই না বিষয়টি নিয়ে কোনোরকম জল ঘোলা হোক। চার পাঁচ দিন থেকে ভীষণ জ্বরে পড়েছিলাম। আজকেই জ্বর থেকে উঠেছি। কাল পরশুর মধ্যেই আমি এই বিষয়টি সবার কাছে খুলে বলবো।’
তানিয়া হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়টি নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাই না। আরও সময় লাগবে। জীবন চলমান। এখানে অনেক ঘটনাই চমক নিয়ে আসে।’
জানা গেল, চাঁদনীর সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার পরে উপস্থাপিকা ও অভিনেত্রী তানিয়া হোসাইনের সঙ্গে নতুন করে প্রেমে জড়িয়েছেন বাপ্পা। মিডিয়ার বাতাসে অনেক দিন উড়েছে সে খবর। তানিয়া এর আগে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন উপস্থাপক এবং চলচ্চিত্র পরিচালক দেবাশীষ বিশ্বাসকে। বেশিদিন টেকেনি সেই বিয়ে। এরপর সোলস ব্যান্ডের পার্থ বড়ুয়ার সঙ্গে প্রেম করেছেন অনেকদিন। এবার ঘর বাঁধছেন বাপ্পার সঙ্গে।
Advertisement
একটি বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, বাপ্পা-তানিয়া বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গোপনে তারা আংটি বদলও করেছেন। ঈদের পর বিয়ে করার পরিকল্পনা করেছেন দুজন। আংটি বদলের একটি ছবি তানিয়া ২০ মে রাতে তার ফেসবুকে পোস্টও করেছেন। ছবিতে দেখা যাচ্ছে তানিয়ার অনামিকায় একটি আংটি। শোবিজের বাতাসে উড়ছে, এই আংটিটি তানিয়াকে দিয়েছেন বাপ্পাই। তবে কবে, কোথায়, কখন তাদের বিয়ে হবে সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে অপেক্ষা করতে হবে আরও দুই-একদিন।
প্রসঙ্গত, অনেক দিনে থেকেই চাঁদনী-বাপ্পা আলাদা থাকেন। এ বিষয়টির সত্যতা জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করেননি বাপ্পা। চাঁদনীর কাছ থেকেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে বিচ্ছেদ নিয়ে অনেক আগে বেশ কিছু গণমাধ্যমে মুখ খুলেছিলেন। সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি জানি না। তাকে (বাপ্পা) জিজ্ঞেস করলেই ভালো হবে। আমি আমার সম্মান ধরে রাখতে চাই। তার যদি কিছু বলার থাকে, কিছু ঘটাবার থাকে তবে আমি চাই সেটা তিনি বলুক। এ বিষয়ে আমি কোনো কথা বলব না। আমি বলব না, আমাদের ডিভোর্স হয়েছে কিনা। আমাদের কী হচ্ছে, না-হচ্ছে তাও আমি কাউকে বলিনি, বলব না। আমি এসব কেন বলতে যাব? যত কিছুই হোক, আমি মেয়ে মানুষ। তাই নেতিবাচক কোনো কথা শুনতে চাই না। আমার সম্মান সবার আগে। আমার পরিবারের সম্মান এমনকি বাপ্পার পরিবারের সম্মানও আমি রক্ষা করে চলব।’
বিয়ের স্মৃতিচারণা করে চাঁদনী বলেছিলেন, ‘২০০৮ সালে আমরা বিয়ে করি। বিয়ের আগে আমার মায়ের পা ধরে বাপ্পা মজুমদার তিন ঘণ্টা বসেছিলেন। মায়ের প্রতি যার এতটা সম্মান, সেটা দেখে আমি মুগ্ধ হই। কারণ যে ছেলে মায়ের পা ধরে বসে থাকতে পারে, সে নিশ্চয় তার স্ত্রীকে সম্মান করবেন, ভালোবাসবে সেটাই স্বাভাবিক। তারপর তিনি একদিন আমাকে বিয়ের প্রস্ত্মাব দিলেন।’ বললেন, ‘কাউকে না কাউকে তো বিয়ে করবে, তবে আমাকে বিয়ে করলে তোমার ক্ষতি কি?’ আমি বললাম, ‘যদি আপনি আমার বাবা-মাকে রাজি করাতে পারেন তবে আমার কোনো আপত্তি নেই। তারপর পরিবারের সম্মতিতেই আমাদের বিয়ে হয়। তবে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা আকস্মিকভাবে হয়। কারণ পরিবার থেকে বিয়ের আয়োজন যেদিন করা হয় তার আগের দিনও শুটিং ছিল। অভিনেতা গাজী রাকায়েত ভাইও শুটিংয়ে ছিলেন। তিনিও এসব জানেন। চাঁদনী বলেন, আমি বাপ্পার বাবাকে দেখিনি। তার মাকে দেখেছি। বাপ্পার মায়ের জন্য আজ পর্যন্ত্ম চুপ করে আছি। কারণ আমি শাশুড়িকে ভালোবাসি। তাকে সম্মান করি। আর বাপ্পার কনিষ্ঠ বন্ধু দলছুটের সঞ্জীব চৌধুরী বেঁচে থাকলে আমার লাইফটা হয়তো আজ এমন হতো না।’
২০০৮ সালের ২১ মার্চ ধানম-ির ২৭ সিয়ার্স রেস্টুরেন্টে আনুষ্ঠানিকভাবে বাপ্পা মজুমদার ও চাঁদনীর বাগদান হয়। বাপ্পা ও চাঁদনী ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের হলেও বাগদানের আগেই বাপ্পা ধর্মান্ত্মরিত হয়ে আহমেদ বাপ্পা মজুমদার হন। দুই পরিবারের সম্মতিতেই এই বাগদান সম্পন্ন হয়। পরে তাদের দুই পরিবার একসঙ্গে হয়ে ঘরোয়াভাবে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন।
Advertisement
এমএবি/এলএ/পিআর