জাতীয়

সৌদি থেকে ফিরলেন নির্যাতিত ২১ নারী শ্রমিক

সৌদি আরবের আলখেল্লা পরা পাষণ্ড মালিকদের অসভ্য আর অমানবিক আচরণ সইতে না পেরে দেশে ফিরে এসেছেন আরও ২১ বাংলাদেশি নারী শ্রমিক। রোববার রাত ৯টার দিকে এয়ার এরাবিয়ার এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে করে তারা ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিমানবন্দর ফ্লাইট অপারেশন কর্মকর্তা জাকির হোসেন।

Advertisement

বিমানবন্দরে তাদের সহায়তা দেন ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম কর্মকর্তা আল আমিন নয়ন। তিনি জানান, গত কয়েকদিন ধরে ফিরে আসা নারীদের পরিবার-পরিজন যোগাযোগ করে আসছিল। ব্র্যাক তাদের আইনি সহায়তা দেবে।

স্রোতের মতো দেশে আসতে শুরু করেছে সৌদি আরবে নির্যাতনের শিকার বাংলাদেশি নারীরা। গত দু’দিনে এসেছেন শতাধিক।

আজ রাতে আসা ২১ নারী শ্রমিকের মধ্যে কয়েজন হলেন-সিলেটের রেবা, মৌলভীবাজারের লিলি আক্তার, হবিগঞ্জের রুবীনা ও খাইরুন্নেসা ও ঢাকার কেরানীগঞ্জের ঝর্না।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তারা সবাই অমানবিক নির্যাতন সইতে না পেরে ইমিগ্রেশন ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অয়েজ অার্নার্স কল্যাণ বোর্ডের আর্থিক সহায়তায় এই নারী শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনা হয়।

এর আগে শনিবার সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেন ৮৩ জন নারী শ্রমিক। ফিরে আসা এই নারী শ্রমিকদের মধ্যে রয়েছেন রূপগঞ্জের সাথী, ভোলার জোসনা, কেরানীগঞ্জের মল্লিকা, বরগুনার শাহনাজ, কক্সবাজারের শাকিলা, দিনাজপুরের মনজুরা বেগম, ফরিদপুরের মাজেদা বেগম, নওগার শম্পা প্রমুখ।

শনিবার আসা মল্লিকা জাগো নিউজকে জানান, সৌদি আরবে প্রতিনিয়ত তাকে নির্যাতনের শিকার হতে হয়। তাকে আটকে রেখে ইলেকট্রিক শক দেয়ার পাশাপাশি রড গরম করে ছেঁকা পর্যন্ত দেয়া হয়।

দিনাজপুরের মনজুরা বেগম বলেন, আমার পাসপোর্টসহ ইজ্জত-সম্মান সব দিয়ে এসেছি। মালিকের নির্যাতন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের দূতাবাসে যাই। দূতাবাস থেকে ট্রাভেল পাস দিয়ে দেশে আসি।

Advertisement

উল্লেখ্য, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য মতে, ২০১৭ সালে অভিবাসী নারীর সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ১৯ হাজার ৯২৫ জন, যা মোট অভিবাসন সংখ্যার ১৩ শতাংশ।

১৯৯১ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত অভিবাসন প্রত্যাশী নারী শ্রমিককে একা অভিবাসনে যেতে বাধা দেয়া হলেও পরবর্তীতে ২০০৩ এবং ২০০৬ সালে কিছুটা শিথিল করা হয়। ২০০৪ সালের পর থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত নারী শ্রমিকের অভিবাসন হার ক্রমাগত বাড়তে থাকে। ২০১৫ সালে এ সংখ্যা দাঁড়ায় মোট অভিবাসনের ১৯ শতাংশে।

আরএম/জেডএ