নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) প্রকল্পের আওতায় সড়ক নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
Advertisement
উপজেলার সদর ইউনিয়নের সোহাসা গ্রামের সড়কের নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়ম হওয়ায় এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে কাজটি বন্ধ করে দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
এরপর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের সাত-পাঁচ বুঝিয়ে আবার যেনতেনভাবে সড়কের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। নিম্নমানের কাজ হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, এইচবিবি শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের অধীনে সদর ইউনিয়নের ১ হাজার ৪৮৩ মিটার সড়কের নির্মাণকাজ করা হচ্ছে।
Advertisement
এর মধ্যে সোহাসা দক্ষিণপাড়া জোব্বারের বাড়ির কাছ থেকে উত্তরপাড়া মসজিদ পর্যন্ত ৮৮৩ মিটার ও বালুপাড়া পাকা সড়কের তিন মাথা মোড় থেকে মান্নানের বাড়ি পর্যন্ত ৬০০ মিটার। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩ লাখ ৫৩ হাজার ২৮১ টাকা। কাজটি করছেন নওগাঁ সদর উপজেলার খাস-নওগাঁর মেসার্স নুসরাত ট্রেডার্স।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এই সড়ক নির্মাণকাজে ১ নম্বর ইট ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু সড়কের ওপরের অংশের কাজে ১ নম্বর ইট ব্যবহার করা হলেও নিচের ভাগে ব্যবহার করা হচ্ছে অধিকাংশ ২ ও ৩ নম্বর ইট। নিচের ভাগে নিম্নমানের ১-২ ইঞ্চি ফাঁকা রেখে ইট বিছানো হচ্ছে। রাস্তায় পানি দেয়ার কথা থাকলেও পানি দেয়া হয়নি। ফলে দায়সারাভাবে নিম্নমানের কাজ করা হচ্ছে।
বারবার অভিযোগের পরও আবারও নিম্নমানের ৩ নম্বর ইট সড়কে ফেলায় এলাকাবাসী তীব্র প্রতিবাদ করলে রাস্তা নির্মাণকাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভালোভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাজটি আবারও শুরু করে। কিন্তু তারপরও কাজ করছে নিম্নমানের।
সোহাসা উত্তরপাড়া গ্রামের ইউনুস আলী বলেন, সড়কে ইট সোলিং কাজে ব্যাপক অনিয়ম করা হচ্ছে। উপরিভাগে দেয়া হচ্ছে ১ নম্বর আর নিচে দেয়া হচ্ছে অধিকাংশ ৩ নম্বর ইট। এভাবে সড়ক নির্মাণ করা হলে এক বছরের বেশি টিকবে না। পুরনায় আমাদের চলাচলের জন্য দুর্ভোগ পোহাতে হবে। প্রতিবাদ করলে আবার হুমকি দেয়া হচ্ছে।
Advertisement
একই গ্রামের মাসুদ রানা, লিটন, জাইদুল, আদরী আকতার, মোমেনা বেগমসহ কয়েকজন জানান, সড়কের কাজ প্রায় শেষের দিকে। সড়কের ওপরের ইট ঠিক থাকলেও নিচের ভাগে ইটগুলো নিম্নমানের। এছাড়া ১-২ ইঞ্চি ফাঁকা করে বিছানো হচ্ছে এবং তা বালু দিয়ে ঢেকে দেয়া হচ্ছে। এছাড়া সড়কে পানিও ঠিকমতো ব্যবহার করা হয়নি।
মেসার্স নুসরাত ট্রেডার্সের ঠিকাদার সাজেদুল ইসলাম বলেন, চার গাড়ি ইটের সমস্যা ছিল। পরবর্তিতে তা ফেরত নেয়া হয়েছে। কাজে কোনো প্রকার ৩ নম্বর ইট ব্যবহার করা হয়নি। নিচের অংশে সামান্য ফাঁক থাকতে পারে।
বদলগাছী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আব্দুল করিম বলেন, সড়কের কাজে সামান্য কিছু খারাপ ইট ছিল। সেগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। পাশাপাশি কাজের বিষয়ে তদারকি করা হচ্ছে। কাজে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না।
আব্বাস আলী/এএম/এমএস