জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের স্নাতকোত্তর পরীক্ষার ৮ মাস এবং স্নাতক পরীক্ষার ৭ মাস অতিবাহিত হলেও ফলাফল পাননি শিক্ষার্থীরা। এতে বিপাকে পড়েছেন ওই বিভাগের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
Advertisement
ইংরেজি বিভাগের ৪১তম আবর্তনের স্নাতকোত্তরের ও ৪২ তম আবর্তনের স্নাতকের (সম্মান) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্নাতকোত্তর (অ্যাপ্লাইড লিংগুইস্টিকস অ্যান্ড ইএলটি) ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা গত বছরের ২৭ আগস্ট আর ৪২তম ব্যাচের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষা ২৬ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৭২ দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশের নিয়ম থাকলেও এখনও ফলাফল প্রকাশ করতে পারিনি বিভাগটি। ফলাফল প্রকাশ না হওয়ায় বিসিএস ছাড়া আর কোনো চাকরির জন্য আবেদন করতে পারছেন না ৪২তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা। যার ফলে অনেক শিক্ষার্থীই ভবিষ্যৎ কর্মজীবন নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন বলে জানা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৪২তম আবর্তনের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, এখনও আমাদের কোনো স্নাতক ডিগ্রি নেই। আমরা কোনো চাকরিতে আবেদনই করতে পারছি না।
৪১তম আবর্তনের (অ্যাপ্লাইড লিংগুইস্টিকস অ্যান্ড ইএলটি) শিক্ষার্থীরা জানান, স্নাতকোত্তরের ফলাফল না হওয়ায় যেসব চাকরিতে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর উভয় যোগ্যতা চায় সেসব চাকরিতে আবেদনের সুযোগ পাচ্ছেন না তারা। বিশেষত স্নাতকে ফলাফল ভালো থাকা সত্ত্বেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে আবেদন করতে পারছেন না তারা। এতে তাদের জন্য চাকরির বাজার খুবই ছোট হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষকরা ‘উইকেন্ড মাস্টার্স’ নিয়ে বেশি ব্যস্ত। নিয়মিত ছাত্রদের তারা উচ্ছিষ্টের চোখে দেখেন। শিক্ষকদের সদিচ্ছার অভাবকেই ফলাফল প্রকাশ হচ্ছে না।
Advertisement
৪২তম আবর্তনের একজন জানান, শিক্ষকদের সঙ্গে ফলাফলের বিষয়ে কথা হলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। কোর্স ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেন। এখনও শিক্ষকদের হাতে শিক্ষাজীবনের স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তরের ভবিষ্যৎ জড়িত থাকায় তারা পুরোপুরি জিম্মি দশায় আছেন।
তবে ইংরেজি বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক তানিয়া শারমীন বলেন, স্নাতক (সম্মান) এবং স্নাকোত্তর উভয়েরই একটা করে কোর্সের খাতা আটকে আছে বলে ফলাফল হচ্ছে না। এটা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে জানানো হয়েছে। এটা তো পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নিয়ন্ত্রণ করবেন।
কোর্স শিক্ষক যদি খাতা জমা না দেন তাহলে কী করার থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সভাপতির তো এখানে একা কিছু করার নাই। এখানে তো এমন নিয়ম নাই যে আমি পুলিশ দিয়ে খাতা নিয়ে আসব।
এ দুটি পরীক্ষার পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আহমেদ রেজা বলেন, অস্বাভাবিক দেরি হয়েছে তা আমি স্বীকার করি। এ জন্য আমি এবং পরীক্ষা কমিটির বাকি সদস্যরা তৎপর আছি। যত দ্রুত বের করা যায় সে চেষ্টা করছি। ফলাফল প্রকাশ না হওয়ার ব্যাপারে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. অসিত বরণ পাল বলেন, ‘এর জন্য ওই বিভাগই দায়ী। পরীক্ষা অফিসে রেজাল্ট পাঠানোর পর তিন-চার দিন লাগে সব কাজ শেষ করতে। বিভাগ যদি না করে তাহলে পরীক্ষা অফিসের এমন কোনো ক্ষমতা নাই যে কোনো একশন নিতে পারে। পরীক্ষা অফিস রিকোয়েস্ট করতে পারে। আমি মেীখিকভাবে অনেকবার রিকোয়েস্ট করেছি। না পাবলিশ হলে আমি কী করব।’
Advertisement
এফএ/এমএস