খেলাধুলা

‘ঈশ্বর চান আমাকে একটি বিশ্বকাপ দিতে’

প্রথম যখন আমি বার্সেলোনা ক্লাবে আসি তারা আমাকে কিছু পোশাক দেয়। আর্জেন্টিনায় এক পক্ষ সবুজ শর্টস এবং আরেক পক্ষ হলুদ শর্টস পরে খেলতো। এখানে প্রত্যেক খেলোয়াড় তার নিজস্ব রুম এবং কিছু পোশাক পেয়েছিল। তাদের আতিথেয়তা ছিল মনোমুগ্ধকর।

Advertisement

আমরা সবসময়ে দলের মূল একাদশের খেলোয়াড় খেলা দেখতাম। আমরা তাদেরকে অনুসরণ করতাম; কিন্তু আমি কখনো ভাবিনি যে তাদের সঙ্গে একইসঙ্গে খেলতে পারবো। প্রথমে তাদের হয়ে মাঠে নামার দিনটি কোনোমতেই ভুলে যাওয়ার মতো নয়। প্রথম দিকে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল; কিন্তু আমি এখনো এগিয়ে যাচ্ছি।

এখনো মনে আছে, আমি তখন অনেক ছোট। যখনই ড্রেসিং রুমে প্রবেশ করলাম, তখন তারা বললো, ‘তোমার পোশাক এখানেই পরিবর্তন করতে হবে।’ পোশাকের দায়িত্বে যিনি ছিলেন, তিনি আমার কাছে আসতেই আমি তাকে বললাম, ‘আমি কি বাইরে গিয়ে পোশাক পাল্টাতে পারি?’ তিনি উত্তরে বললেন, ‘না। তোমাকে এখানেই পাল্টাতে হবে।’

আমি ড্রেসিং রুমের একটা কোণায় বসে ড্রেস পাল্টাতে লাগলাম। আমাদের যুব দলেও অনেক ব্যক্তিত্বসম্পন্ন বালক ছিল, যারা সবসময়ে নিজেদের নিয়ে ভাবত। তাই আমি একটা কোণাতেই বসে বসে পোশাক পাল্টাতে লাগলাম। এমনকি আমি আমার ভাইয়ের কাছেও জিজ্ঞেস করেছিলাম এবং সে বলেছিল, ‘তোমাকে এখানেই জার্সি পাল্টাতে হবে।’

Advertisement

আমি যখনই মাঠে খেলতে যেতাম তখন ভালো অনুভব করতাম। ওখানকার সবার বন্ধু হয়েই পরবর্তী সময়গুলো কাটিয়েছিলাম। আমি দলের সঙ্গে দুই সপ্তাহ অনুশীলন করছিলাম এবং শেষদিন তাদের বড়দের সঙ্গে ম্যাচ ছিল। এক সপ্তাহ পর তারা আমাকে ডাকলো। আমি বল নিয়ে একটা কোণায় দাঁড়িয়ে কারিকুরি করছিলাম। ছোটদের পাশে এসে তারা খুব মনোযোগ দিয়ে অনুশীলন করছিল। তাদের নজরে আমি পড়ে গেলাম। কেননা আমি তেমন কিছুই করছিলাম না ওটা ছাড়া; কিন্তু যা ঘটে তা ভালোর জন্যেই হয়।

তারা আমাকে ডাকলো এবং তারা আমার যা কিছু দেখেছে সেটা নিয়ে খুশি এবং আমার সঙ্গে কথা বলতে চাইলো এবং আমাকে বার্সেলোনার হয়ে খেলতে দেখতে চাইলো। ওই রাতে আমি এবং আমার পরিবার শহরের বাইরে যাই এবং উদযাপন করি।

আমি একটি কন্যা সন্তা চাই; কিন্তু সদ্যই আমি তৃতীয় ছেলের বাবা হয়েছি। তাই কিছুদিন অপেক্ষা করতেই হবে, তারপর দেখা যাক কি হয়। বাবা হিসেবে আমি বুঝতে পারলাম কীভাবে আমি ছোট থাকা অবস্থায় বাবার কাছ থেকে ভালোবাসা পেয়েছি। এটা থেকে শিক্ষাও নিয়েছি। থিয়াগোর মাধ্যমে এটি শিখতে পেরেছি। আমি ধীরে ধীরে যোগ্য বাবা হতে থাকি এবং কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায় সেটি শেখা শুরু করি।

এখন আমার তিন সন্তান, এটা কিছুটা আলাদা। বর্তমানে থিয়াগো সারাদিন ফুটবল নিয়ে পড়ে থাকে এবং প্লে স্টেশনে খেলতে থাকে। সে সবসময় চায়, আমি যেন সারাক্ষণ খেলে যাই। আমি চেষ্টা করছি, যখন সময় পাই তার সঙ্গে খেলতে। অবশ্যই তার জন্য একটি নির্দিষ্ট সীমানা তৈরি করে দিয়েছি আমার স্ত্রীর মতো যাতে করে তাকে আমরা সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করতে পারি।

Advertisement

ঘরের ভেতর আমি ‘মেসি’ নই। আমি যখন ঘরে আসি তখন সবাইকে সাহায্য করার চেষ্টা করি এবং আমার তিন সন্তানও রয়েছে যাদেরকে অনেক ভালোবাসি। আমি তাদের সঙ্গে বাসায় সময় কাটাতে খুব পছন্দ করি। তাদেরকে স্কুলে দিয়ে আসতে, নিয়ে আসতেও পছন্দ করি। তাদের সঙ্গে যতটুক সম্ভব সময় কাটানো যায় সেটাকে উপভোগ করি। আমার সন্তানদের সঙ্গে আমি হলাম সবথেকে সুন্দরতম জিনিস। তাই এটি আমি খুব স্বাছন্দ্যের সঙ্গেই করে থাকি।

যখন আমি সন্তানদের স্কুলে নিয়ে যাই তখন অন্য বাবা-মায়েরাও সেখানে থাকে। তারা আমাকে জানে। আমার অনেকের সঙ্গে ভালো সম্পর্কও রয়েছে। এটা থিয়াগোর স্কুলে যাওয়ার তৃতীয় বছর- তাই বুঝতেই পারছেন সবার সঙ্গেই আমার পরিচয় হয়ে গেছে। ওখানে আমি কেবল একজন পিতা।

আমার অনেকগুলো হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে। যেখানে পরিবার, বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলি, অন্যদের মতো। আমরা যখন আগুয়েরোর বাসায় খেতে যাই, তখন সবকিছু আমরা নিজেরাই করি। আমার প্লেট আমি নেই, খাবার পর সেটি নির্দিষ্ট স্থানেও রেখে দেই। এটা আমার কাছে তেমন কোনো ব্যাপার না। আমি বাসাতেও এমনটা করি। আমি এখনো আর্জেন্টিনায় যাওয়াটা উপভোগ করি। আমাদের দল নিয়ে আমি খুবই সংবেদনশীল। আমরা আমাদের প্রত্যেকটি সুযোগকেই ভাবি- এটাই হয়তো শেষ সুযোগ।

বর্তমান প্রজন্মের জন্য কিছু জয় করার এটাই সর্বোত্তম সুযোগ। বিশ্বকাপের পরেও সুযোগ থাকবে আমি বিশ্বাস করি সেটা। এটা আমাদের জন্য সঠিক সময়। বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতির তেমন সুযোগ নেই, কারণ সময়টাই এমন। তাই আমাদের সময়ের সুযোগ নিতে হবে।

যদি হয় এখন হবে, না হলে কখনোই না। এটাই আমাদের শেষ বিশ্বকাপ, এমনটাই দেখছি আমরা। তাই আমরা সবরকমের সুযোগ লুফে নিতে চাই। অনেক তরুণ ফুটবলাররা উঠে আসছে। আমি আশা করবো, আমাদের প্রজন্ম নিয়ে তারা যেন গর্ব করতে পারে। তারা ভালো কিছু করেই নিজেদের প্রমাণ করছে যা ভবিষ্যতের জন্য ভালো।

মানুষের কাছে আমরা ঋণী থাকতে চাই না। আমরা আমাদের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করছি। আমরা তিনটা ফাইনালে উঠেছি; কিন্তু সবকিছু আমাদের পক্ষে হয়নি। এটা ঈশ্বরই চাননি। আমরা এটা চাই। কাছে গিয়ে আশাহত হওয়াটা খুব কষ্টের; কিন্তু আমাদের এটা পরিবর্তন করতে হবে।

আমি মাঝে মধ্যে ইন্সটাগ্রাম চেক করে দেখি। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচটি একবার দেখে নিজেই বলে উঠছিলাম, ‘আমার মনে হয় না, ওই ম্যাচটি আমরা খেলেছিলাম।’ আমি পরবর্তীতে খুব কমই সেই ম্যাচটি দেখেছিলাম।

বিশ্বকাপে ফাইনালে যে সুযোগটি মিস করেছিলাম, আমি এখনও ভাবি যেভাবে আমি সেই বলটিকে হিট করেছিলাম, যেভাবে আমি আমার পা মাটিতে নামিয়েছিলাম, কীভাবে এত বাজেভাবে আমি সেটি করেছিলাম- তা আমার জানা নেই। আমার মনে হয়, যদি সেই বলটিকে চেলসির বিপক্ষে যেভাবে গোলটা করেছি সেভাবে মারতে পারতাম- তাহলে অন্তত অন টার্গেটে থাকতো শটটা।

প্রত্যেকদিনই এমন একটা সময় আসে, যেখানে আমার বিশ্বকাপ ফাইনালের কথা মনে পড়ে। আমি মনে করি, যদি আমরা বিশ্বকাপ জিততাম? তাহলে সবকিছুই পাল্টে যেতো আমাদের জন্য। আমরা এটার দাবিদার; কিন্তু সেটি ঘটেনি। এজন্যেই এটা আমাকে পীড়া দেয়।

বিশ্বকাপ ট্রফির পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার ছবিটা খুব হৃদয়বিদারক আমার জন্য। আমি ভাবি, আমরা তো খুব কাছেই গিয়েছিলাম সেটি জয়ের জন্য, সেই ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে; কিন্তু আমি সেটিকে পাশ কাটিয়ে চলে আসি। এটা খুবই ভয়ানক অভিজ্ঞতা আমার জন্য।

আমি খুব রেগে যাই যখন হেরে যাই। আমি খুব দুর্বল অনুভব করি তখন। আমি খুব মর্মাহত হই; কিন্তু এটি আস্তে আস্তে পাল্টাচ্ছে। বিশেষ করে আমার প্রথম ছেলে থিয়াগো জন্মাবার পর। তার মানে এই না যে, আমি এটা দ্বারা আক্রান্ত এটা আমাকে রাগান্বিত করছে না।

আমরা জাতীয় দলের হয়ে খেলছি কারণ আমরা সবাই একই পোশাক পরি। অনেকেই আছেন, অনেক বড় ক্লাবে খেলে যারা প্রতিনিয়ত ট্রফি জয়ের জন্য লড়াই করে। আমরা সবাই প্রতিযোগিতামূলক। আমি বার্সেলোনায় ভিন্নভাবে খেলি। নিজেকে প্রস্তুত করি যা সবসময় করে থাকি।

আমি যত খেলব ততই ভালো অনুভব করবো। আমার জন্য সপ্তাহে মাত্র একটি ম্যাচ খেলা খুবই কষ্টদায়ক। যে সপ্তাহটা বেশি সময় নেয় ম্যাচের জন্য সেই সপ্তাহে খুব বাজে অনুভব করি। আমি নিজেকে একটি তালে রাখতে পারি, যদি খেলতে থাকি। আমার ফুটবল ক্যারিয়ারে প্রতি তিনদিনে একটি করে ম্যাচ খেলে আসছি- যা আমার শরীরের সঙ্গে মানানসই। ৩-৪ দিন যখন টানা অনুশীলন করতে হয় তখন সেটিকে খুব অপছন্দ করি। আমার নিজেকে এমনভাবেই তৈরি করা যেন যখন খুশি তখন খেলতে পারি।

জানি, যত বেশি ম্যাচ খেলব তত বেশি ক্লান্তি আমাকে ঘিরে ধরবে। সুযোগ থাকবে ইনজুরিতে পড়ারও; কিন্তু খেলতে পারলেই খুব ভালো থাকি। আমি বিশ্বাস করি, যত বেশি ভয় পাবেন ততবেশি ঝুঁকি থাকবে ইনজুরিতে পড়ার। তাই আমি সবকিছু ভুলে যাই, যাতে ইনজুরি আমার কাছে না আসতে পারে।

আমি জানি ঈশ্বর চাইছে আমাকে একটি বিশ্বকাপ দিতে; কিন্তু গতবার খুব কাছে গিয়েও সেটি আমাকে দেননি। আমি আশা করবো, ঈশ্বর এবার অন্তত আমাকে বিশ্বকাপটা দেবেন, যাতে করে কাঁটাটা সরিয়ে ফেলতে পারি।

জানি না ফুটবল আমাকে বিশ্বকাপ দেবেন কি-না। এটা হয়তো একটি অধ্যায়কে চিরতরে বন্ধ করে দিবে। যদি এটি হয়, তাহলে হবেই। মানুষ আমাকে সেই সংবেদনশক্তি দিয়েছে যাতে আমি বিশ্বকাপ পাই এবং আর্জেন্টিনাকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বানাতে পারি। পৃথিবীর যে প্রান্তেই আমি যাই, মানুষ আমাকে মনে করিয়ে দেয়, আমাদের সেই মোহটা রয়েছে। আমরা পরিশ্রম করে যাচ্ছি এবং আশা করছি আমরা এটা পাবো।

জানি না ভবিষ্যতে কী হবে। আমি এখন শুধু বিশ্বকাপটা জয় করতে চাই। তারপরের সবকিছু সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই চলে আসবে। সাম্পাওলির প্রতি কৃতজ্ঞ যে, সে দেখিয়ে দেয়, এটা আমার দল। সে আমাকে ব্যক্তিগতভাবে বলেছে; কিন্তু বিশ্বাস করি আমরা খুব কঠিন গ্রুপে রয়েছি। আমাদের দলের ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে এবং আত্মবিশ্বাসও বাড়াতে হবে। (স্পেনের বিপক্ষে ম্যাচের আগে এটি বলেন)

দেখুন! আর্জেন্টিনা প্রত্যেকবারই বিশ্বকাপ জয়ের দাবিদার। ঐতিহাসিকভাবে এটাই এখন পর্যন্ত হয়ে আসছে; কিন্তু পরিস্থিতির সঙ্গে বাস্তবতাকে খাপ খাওয়াতে হবে। আমাদের খেলা এবং আমরা যেভাবে বিশ্বকাপে এসেছি তাতে বিশ্বকাপ জয়ের দাবিদার নই আমরা। এখানে অনেকগুলো ভালো দল রয়েছে যেমন স্পেন, জার্মানি, ব্রাজিল ও ফ্রান্সও। বর্তমানে তারা আমাদের থেকে অনেক ওপরে। তারাই বিশ্বকাপ জয়ের বেশি দাবিদার।

আমাদের দলে বেশ কয়েকজন ভালোমানের খেলোয়াড় রয়েছে; কিন্তু দলগতভাবে আমাদের আরো শক্তিশালী হতে হবে। বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের বাজে পারফরম্যান্স সত্ত্বেও দুর্ভাগ্যবশত আমাদের হাতে পর্যাপ্ত সময় না থাকায় আমাদের খেলার স্টাইলকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারছি না।

যখন আমি প্রথমবারের মতো আর্জেন্টিনাকে বিদায় জানাই, তখন মনে হয়েছিল আমি আর ফিরবো না। কারণ (কোচ, প্রশাসন) যেভাবে চলছিল ওইভাবে মানিয়ে নেওয়া কষ্ট। কারণ অনেক কিছু ছিল। ওটা ছিল আমাদের টানা তৃতীয় ফাইনালে পরাজয়।

কিন্তু আমি যখন ফিরে আসি তখন অপ্রস্তুত অবস্থায় বলি, ‘আমার কিছু সময় লাগবে, সবকিছু ভুলে যেতে। চিলির বিপক্ষে সেই পেনাল্টি মিস এবং আমি চাচ্ছিলাম আবার ফিরে আসতে। আমি খুব বিমূঢ় হয়েছিলাম, কারণ চাচ্ছিলাম না মানুষ সেটিকে মনে রাখুক। বাসে আমার কাছে যা কিছু ছিল সব সতীর্থদের দিকে ছুড়ে মারি, কিছু বাসের চাকার নিচে ফেলে দেই, এতটাই ভেঙে পড়েছিলাম সেদিন। ওটাই বোধহয় আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল।

আমার সতীর্থরা খেলছে, আর আমি বসে আছি, আমি সেখানে নেই! এটা খুবই বিশ্রী লাগছিল দেখতে। আমি খুব করে চাচ্ছিলাম, আবার ফিরে আসতে। কারণ আমি এই দলটার হয়ে খেলা উপভোগ করি। তখনকার সময়টা কিছুটা ভিন্ন ছিল; কিন্তু আমি সর্বদাই জাতীয় দলের হয়ে খেলা উপভোগ করি।

যদি কেউ বলে, ‘মেসির বন্ধু বিধায় দলে খেলছে’- তাহলে সোজা তার গালে জোরে থাপ্পড় মেরে দিবেন। এটা খুব বিব্রতকর আমার জন্য। এখানে অনেক খেলোয়াড় আছে যারা বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলোতে খেলছে। ওই কথাটা বলা মানে, তাদের অসম্মান করা। মানুষ আমার ব্যাপারে এসব কুৎসা রটাবে; কিন্তু আমি এগুলো পরোয়া করি না।

আমার সতীর্থদের সবাইকে নিয়ে মানুষের এমন বাজে কথা বলাটা অশ্রদ্ধার। কারণ, যদি দেখেন তারা যাদের দিকে আঙুল তুলছে তারা সবাই বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলোতে খেলছে। তারা যেই যুক্তি দেখাচ্ছে তাতে আগুয়েরো তো প্রত্যেক ম্যাচেই একাদশে থাকতো; কিন্তু সে বেশিরভাগ ম্যাচই বেঞ্চে কাটিয়েছে। আর মনে রাখবেন, সে আমার বন্ধু।

কুন খেলতে খুব আগ্রহী। যখন সে খেলার সুযোগ পেতো না, তখন সে কঠোর পরিশ্রম করে দলে জায়গা নেওয়ার চেষ্টা করতো। আমাকে নিয়েও নানান কথা উঠেছে অনেক সময়। তবে আমার কিছু কথা অবশ্যই বলতে হবে লাভেজ্জিকে নিয়ে। তারা আমাদের অনেককে ব্যক্তিগত আক্রমণ করতে চেয়েছিল সেই অবস্থার জের ধরে। আমাদের পরিবারকেও তারা ছাড়েনি। হিগুয়াইন দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। যদি সে দ্বিতীয়াবার দলে সুযোগ না পায় তাহলে এটা তার প্রতি অবিচার করা হবে।

আমি দিবালার সঙ্গেও কথা বলেছি এবং তাকে বুঝেছি। সে যেটা বলেছে, সেটা সত্যি। জুভেন্টাসে সে যে পজিশনে খেলে বার্সাতে আমিও সেই পজিশনে খেলে থাকি। আমরা দুজনই একইরকম মুভ করি, দুজনই একইরকম সুযোগ তৈরি করি। যখন আমরা একসঙ্গে খেলি তখন তাকে একটু বামে সরে খেলতে হয়, এটার সঙ্গে সে অভ্যস্ত নয়। আমাদের জন্য খুব কঠিন হবে এক পজিশনের দু’জন খেলোয়াড় একসঙ্গে খেলা। আমি খুব কম সময়েই বামে সরে খেলেছি। আমি বুঝতে পেরেছি এবং এটা নিয়ে ভাবছি না। আমরা কথা বলেছি; কিন্তু কোনো কিছুই স্পষ্ট হয়নি।

আমি জানি না বিশ্বকাপ জিতলে আমি কী করবো! আমি এখনো ভাবি, কত কাছে গিয়েছিলাম আমরা!

আরআর/আইএইচএস/পিআর