প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলার রায় শিগগিরই ঘোষণা হবে এবং এই জঘন্য হামলার জন্য দোষী ব্যক্তিরা শাস্তি ভোগ করবে।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘এই হত্যার বিচার চলছে। আমি আশা করবো তাড়াতাড়িই এই বিচারের রায় হবে এবং এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তারা কঠিন শাস্তি পাক আমরা সেটাই চাই। আমরা এর ন্যায় বিচার চাই।’
মঙ্গলবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের পরিবার এবং আহতদের মাঝে আর্থিক অনুদানের চেক হস্তান্তরকালে তিনি একথা বলেন।
২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় নিহত-আহতদের পরিবারের সদস্যদের ৬৯ জনের মধ্যে এদিন অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়। এছাড়া, বিশিষ্ট চলচ্চিত্র অভিনেত্রী মায়া ঘোষ এবং সাবেক কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগ নেতা মোশাররফ হোসেন ও আর্থিক সহযোগিতার চেক গ্রহণ করেন।
Advertisement
প্রধানমন্ত্রী ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রেক্ষাপট স্মরণ করে বলেন, সেদিন (২০০৪ সালের ২১ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর বিরুদ্ধে সিলেটে হযরত শাহজালাল (র.) মাজারে বোমা হামলার প্রতিবাদে সন্ত্রাস বিরোধী র্যালি হচ্ছিল। সেখানে দিনে দুপুরে এভাবে যে গ্রেনেড হামলা হতে পারে তা আমরা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। সেখানে আইভি রহমানসহ আমাদের ২২ জন নেতা-কর্মীকে হারাই এবং দুজন অজ্ঞাতনামা মারা যায়। আর আমাদের শতশত নেতা-কর্মীরা আহত হয়।
বোমার শব্দে তার কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও নেতা-কর্মীদের রচিত মানব ঢাল সেদিন প্রধানমন্ত্রীকে রক্ষা করে। তিনি বলেন, ‘যেহেতু হানিফ ভাইসহ কেন্দ্রীয় নেতারা আমাকে ঘিরে রেখেছিল তাই আমার গায়ে কোন স্প্রিন্টার লাগে নাই।’
প্রধানমন্ত্রী হামলার ধরনে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, যে আর্জেস গ্রেনেড যুদ্ধের ময়দানে ব্যবহার হয় তাই এই হামলায় ব্যবহৃত হয়েছিল, তাও দিনে দুপুরে। একটার পর একটা ১৩টা গ্রেনেড মারা হয়। এমনকি গ্রেনেড হামলার পর অন্য নেতা-কর্মীরা যখন হতাহদের উদ্ধার করতে গেছে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে, টিয়ার গ্যাস মেরেছে।
তিনি বলেন, এই রকম ঘটনা মনে হয় কেউ তখনো পৃথিবীতে শোনে নাই যে, এত বড় একটা গ্রেনেড হামলার পর এত সময় অতিবাহিত হলেও পুলিশ উদ্ধার কাজে তো আসলোই না উপরন্তু লাঠি চার্জ করলো, কাউকে পিটিয়েছে, কাউকে লাখি মেরেছে, টিয়ার গ্যাস ছুড়েছে। আমাদের নেতাকর্মী যারা উদ্ধার করতে গেছে তাদের দিকে পাল্টা আক্রমণ করেছে।
Advertisement
প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, তিনি তখন বিরোধীদলের নেত্রী থাকা অবস্থায় তাকে হত্যার জন্য এই ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়। সরকারে যারা থাকে এবং তাদের ছেলে পেলে যদি ষড়যন্ত্র করে তাহলে একটা দেশের কি অবস্থায় যেতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী তখন আহতদের দেশে বিদেশে যেখানে পেরেছেন তাদের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন উল্লেখ করে বলেন তখন অনেকেই তাদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন এবং বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট থেকেও তাদের সাহায্য করা হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। যাদের অনেকেই এখনো শরীরে স্প্রিন্টারের দুঃসহ যন্ত্রণা নিয়ে বেঁছে রয়েছেন, অনেকে মারাও গেছেন যন্ত্রনা ভোগ করতে করতে।
সূত্র : বাসস
এমবিআর/আরআইপি