আইন-আদালত

খালেদার জামিন পাওয়ার একটি যুক্তিও নেই : অ্যার্টনি জেনারেল

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন বাতিলে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের করা আপিলের রায় ঘোষণার জন্য আজ (বুধবার) দিন ঠিক করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের শুনানি শেষে এ দিন ধার্য করা হয়।

Advertisement

শুনানিতে অ্যার্টনি জেনারেল বলেন, এই মামলায় আসামির (খালেদা জিয়া) জামিন পাওয়ার ক্ষেত্রে এ ধরনের একটি যুক্তিও নেই। মাহবুবে আলম বলেন, খালেদার জামিন বাতিলের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে সাবেক জোট সরকারের মন্ত্রী নাজমুল হুদা, বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মীর হেলাল ও বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান টুকুর বিরুদ্ধে দুদকের মামলার উদাহরণ টানেন। যদি জীবনহানির আশঙ্কা না থাকে এবং মেডিকেল বোর্ডের যথাযথ মতামত না থাকে তাহলে শুধু অসুস্থতার যুক্তিতে জামিন দেয়া যায় না। ওই সব মামলার অভিযোগ আর এ মামলার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিন্ন।

রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, ওইসব মামলায় আসামিদের জামিন দেয়ার ক্ষেত্রে তাদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে মেডিকেল বোর্ডের যথাযথ মূল্যায়ন বা মতামত ছিল। কিন্তু এ মামলায় জামিন প্রশ্নে মেডিকেল বোর্ডের এ ধরনের কোনো মতামত বা মূল্যায়ন নেই।

নাজমুল হুদা, মো. নাসিম, হেলাল ও টুকুর মামলায় আপিল বিভাগের দেয়া রায়ের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে অ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ৯০ কর্মদিবসে যদি আপিল শুনানি শেষ না হয়, আসামি যদি গুরুতর অসুস্থ হয় বা মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে এবং সাজা যদি তিন বছরের ঊর্ধ্বে না হয় তাহলে অসুস্থতাজনিত কারণে আসামি জামিন পেতে পারেন। কিন্তু এই মামলায় আসামির জামিন পাওয়ার ক্ষেত্রে এ ধরনের একটি যুক্তিও নেই। খালেদা জিয়ার অসুস্থতা বা শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে আদালতে যে তথ্য দেয়া বা দেখানো হয়েছে ‘তা কেবল বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর’ বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘ওইসব মামলায় (হুদা, নাসিম, হেলাল ও টুকুর মামলা) রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু এ মামলায় প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে এতিমদের টাকা তছরুপ করা হয়েছে। হাইকোর্ট জামিন দেয়ার ক্ষেত্রে এ অভিযোগ বিবেচনায় নেয়া হয়নি, যা ফৌজদারী আইনের লঙ্ঘন।

Advertisement

জরুরি অবস্থার সময় অসুস্থতার যুক্তি দেখিয়ে ওই চারজনের জামিন আবেদন হাইকোর্ট মঞ্জুর করেছিল। পরে আপিল বিভাগেও তা বহাল থাকে।

অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য শেষ করার পর খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন আদালতের শুনানিতে বলেন, ‘আমরা পাল্টা বক্তব্য দেব না। শুধু রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, কেননা আমরা ওইসব মামলার শুধু উদাহরণ টেনেছি। আমি যা বলতে পারি নাই, সেটা আজ অ্যার্টনি জেনারেল পেরেছেন। কিন্তু আজ অ্যাটর্নি জেনারেল বিস্তৃতভাবে উপস্থাপন করেছেন, যা আমাদের পক্ষে গিয়েছে।’

জয়নুল আবেদীন বলেন, এর আগে অনেক মামলায় আট বছরের সাজা হয়েছে, (দুদক) খুরশীদ আলম খান কোনো আপিল তো দূরে থাক শুনানিতেই উপস্থিত থাকেননি।

তিনি বলেন, সময় নিয়ে রায়ের দিন দীর্ঘায়িত করছেন অ্যার্টনি জেনারেল। সরকার (রাষ্ট্রপক্ষ) এবং দুদক একসঙ্গে মিলে একটা ফেকইক মামলার বিরুদ্ধে এসেছে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষ করার পরে রায়ের জন্য আগামীকাল ঠিক করেন আদালত।

Advertisement

এফএইচ/এমবিআর/আরআইপি