জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন বাতিলে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আপিলের রায় ঘোষণা করা হবে আজ বুধবার (১৬ মে)। সে হিসেবে আজই জানা যাবে-খালেদার জামিন হচ্ছে কি না ।
Advertisement
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ বুধবার সকালে এই রায় ঘোষণা করবেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি মুহাম্মদ ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।
এর আগে মঙ্গলবার (১৫ মে) বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে রায় ঘোষণার জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আপিল দুটির রায়ের জন্য তালিকার প্রথম ক্রমিকে (শীর্ষে) রাখা হয়।
গত ৮ ও ৯ মে খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ। রায়ের নির্ধারিত দিন ওইদিন সকালে রাষ্ট্রপক্ষের অ্যার্টনি জেনারেলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দুপুরের শুনানি শেষ করার পর বুধবার রায়ের জন্য দিন ঠিক করেন। এর আগে রাষ্ট্র, দুদক ও আসামি সব পক্ষের শুনানি শেষে গত ৮ ও ৯ মে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বিভাগের একই বেঞ্চ রায়ের ঘোষণার জন্য ১৫ মে দিন নির্ধারণ করেন। এ দিন পুনরায় শুনানি শেষে তা পিছিয়ে আবার ১৬ মে পরর্বতী দিন ঠিক করেন আদালত।
Advertisement
খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশর বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল নিয়ে দুই দিন (৮ ও ৯ মে) শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। খালেদা জিয়ার জামিন বাতিলের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং দুদকের পক্ষে খুরশিদ আলম খান।
অপরদিকে, খালেদা জিয়ার জামিন বহাল রাখতে খালেদা জিয়ার পক্ষে চারজন আইনজীবী শুনানি করেন। এরা হলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ, সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদন।
গত ১৯ মার্চ মামলাটি শুনানির জন্য ৮ মে দিন ধার্য করেছিলেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন একই বেঞ্চ। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) এবং আপিল বিভাগের স্থগিতাদেশ তুলে নেয়া সংক্রান্ত খালেদা জিয়ার আবেদনের ওপর এই শুনানি হয়।
গত ১২ মার্চ দুদকের আবেদনের শুনানি নিয়ে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। পাশাপাশি এ মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা কেন বাড়ানো হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেন আদালত।
Advertisement
এরপর ১৯ মার্চ প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ ৮ মে পর্যন্ত জামিন স্থগিতের আদেশ দেন। একই সঙ্গে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের আইনজীবীদের আপিলের সার-সংক্ষেপ জমা দিতে বলেন।
চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামানের আদালত খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয় আসামির প্রত্যেককে দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা করে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেন। রায়ের দিনই খালেদা জিয়াকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এফএইচ/এসআর/আরআইপি