খেলাধুলা

কোচ পেতে কারস্টেনের শরণাপন্ন বিসিবি

গত অক্টোবরের পর থেকে কোন স্থায়ী কোচ নেই বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শেষে তৎকালীন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে দায়িত্ব ছেড়ে দেয়ার পর থেকেই প্রধান কোচের খোঁজে রয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড(বিসিবি)। কোচ খোঁজার এই মিশনে কোন উপায়ন্ত না পেয়ে শেষমেশ বাংলাদেশ দলের দক্ষিণ আফ্রিকান পরামর্শক গ্যারি কারস্টেনের শরণাপন্ন হয়েছে বিসিবি।

Advertisement

সোমবার সংবাদ মাধ্যমে এই খবর জানান বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তিনি জানান গ্যারি কার্স্টেনের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেট কোচের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে কোচের ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে বিসিবি। সেলক্ষ্যে এরই মধ্যে কারস্টেন ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানান বিসিবি সভাপতি।

সোমবার গর্ডন গ্রিনিজকে দেয়ার বিশেষ সম্মাননা অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘সে (গ্যারি কারস্টেন) আপাতত পর্যবেক্ষণ করছেন বাংলাদেশে ঠিক কি ধরনের কোচ দরকার। সে খেলোয়াড়দের সাথে কথা বলছে, কোচিং স্টাফদের সাথে মতবিনিময় করছে, আমাদের সাথে মতবিনিময় করছে। পরে সে আমাদের যেমন কোচ দরকার তার একটি সাজেশন দেবেন। আমরা সেই অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবো।’

কিন্তু এমনটা হলে কি কারস্টেনের মন মতোই কোচ নিয়োগ দেবে বোর্ড? এমন প্রশ্নের জবাবে বিসিবি সভাপতি সাফ জানিয়ে দেন কারস্টেন শুধুমাত্র নিজের পরামর্শ দেবেন। বাকি সিদ্ধান্ত নেবে বিসিবি। পাপন বলেন, ‘সে শুধু তার প্রস্তাব দেবে। তার দেয়া তালিকার সাথে আমাদের তালিকার মিল-অমিল নিয়ে আলোচনা হবে। এরপর দুই তালিকা থেকে প্রাপ্ত চূড়ান্ত তালিকার উপর একটি প্রেজেন্টেশন দেবে। তারপরই আমরা কোচের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবো। এটিই আমাদের জন্য ভাল হবে।’

Advertisement

বর্তমানে আইপিএলে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের কোচিং প্যানেলে কর্মরত আছেন কারস্টেন। ফলে চলতি মাসের শেষের দিকের আগে প্রেজেন্টেশনটা দিতে পারবেন না তিনি। তবে পাপন জানিয়েছেন চলতি মাসের ২০-২২ তারিখেই কারস্টেনের আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘সে কবে আসবে তা এখন নির্ভর করছে আইপিএলের কি হয় সেটার উপর। এখন যে অবস্থা তাতে ২০-২২ তারিখেই চলে আসার কথা। তবে এখান থেকে যদি কিছু পরিবর্তন হয় তাহলে হয়তো দুই-একদিন পেছাতে পারে।’

এর আগে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, টম মুডি, মাহেলা জয়াবর্ধনেসহ বেশ কয়েকজন নামী ক্রিকেটারকে নিয়ে সম্ভাব্য কোচের সংক্ষিপ্ত তালিকা করেছিল বিসিবি। কিন্তু ইতিবাচক সাড়া মেলেনি সেই তালিকার কারো কাছ থেকেই। তাই এবার স্থায়ী চুক্তিতে কাজ করতে পারবে এমন তিনজনকে নিয়ে নতুন তালিকা করেছে বোর্ড। তবে এখনই সেই তিনজনের নাম জানাতে রাজি নন বোর্ড প্রেসিডেন্ট পাপন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের আগের লিস্টটা এখন আর নেই। এখন নতুন একটি তালিকা করেছি। এক্ষেত্রে আমাদের প্রধান সমস্যাটা হচ্ছে বেশির ভাগ কোচই স্থায়ীভাবে থাকতে রাজি নয়। তবে আমরা এখন যে তিন জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা করেছি তারা সবাই স্থায়ী কোচের জন্যই। এই সংক্ষিপ্ত তালিকায় কারা আছে সেটা এখন বলা যাবে না। তারা সবাই কোথাও না কোথাও আছেন। কাজেই পরে যদি না হয় তাহলে!’

তিনজনের এই সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা সবাইই প্রস্তুত বাংলাদেশের কোচ হওয়ার জন্য। এই তিনজনের ক্ষেত্রে অন্য কোন বাধাও নেই। তাই টাইগারদের জন্য সম্ভাব্য সেরা কোচ কে হবেন তা নির্ধারণেই জন্য মূল কার্স্টেনের পরামর্শ নেয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন পাপন। পাপনের ভাষ্যে, ‘আমাদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা এই তিনজনের কোনো বাধা নেই। এরা হল বাধা ছাড়া। এখন কাকে নিতে হবে সেটা আমরাই সিদ্ধান্ত সিতে পারি। কিন্তু আমরা চিন্তা করছি একজন বিশেষজ্ঞের মতামত নিলে আমাদের জন্য ভালো হয়।’

Advertisement

তবু যতো যাই হোক জুনের শুরুতে হতে যাওয়া আফগানিস্তান সিরিজের আগে কোচ পাচ্ছে না টাইগাররা, এই কথা জানিয়ে দেন বিসিবি সভাপতি। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগে কোচ না পাওয়ার কোন কারণ দেখছেন না তিনি। পাপন বলেন, ‘ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগেই হওয়া উচিত। না হওয়ার কথা নয়। কিন্তু কিছুই তো আগান বলা যায় না। এর আগেও তো একজনকে আমরা ফাইনাল করেই ফেলেছিলাম। শেষ মুহুর্তে এসে বলল পরিবার রাজি হচ্ছে না। সুতরাং না আসা পর্যন্ত তো কিছুই বলা যাচ্ছে না। এ কারণে আমাদেরও কিছু সময় নষ্ট হয়েছে। তবে এই মাসের মধ্যেই কোচের ব্যাপারে বিশেষ কিছু জানতে পারবেন।’

এসএএস/এমএস