প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনায় বাংলাদেশ বিমানের দুই প্রকৌশলী কর্মকর্তাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন মামলা করেছেন কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিসিটি) ইউনিট।
Advertisement
মঙ্গলবার (১৫ মে) ঢাকা মহানগর হাকিম শুভ্রত ঘোষ শুভ মামলাটি গ্রহণ করে তাদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেন। আদালত আগামী ১৭ জুন তাদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন বিমানবন্দর থানার আদালতের রেকর্ডিং অফিসার পুলিশের উপ-পরিদর্শক আলম মিয়া।
মামলার আসামিরা হলেন- বিমানের প্রকৌশলী সিদ্দিকুর রহমান, নাজমুল হক ও টেকনিশিয়ান শাহ আলম। এর আগে ৪ এপ্রিল ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা তদন্ত সংস্থা কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিসিটি) ইউনিটের আবেদনটি গ্রহণ করে ১১ আসামিকে অব্যাহতি প্রদান করেন।
অপরদিকে আদালত আসামি সিদ্দিকুর রহমান, নাজমুল হক ও শাহ আলমের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ২৮৭ ধারায় প্রসিকিউশন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে অনুমতি প্রদান করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা তিনজনের বিরুদ্ধে এই প্রসিকিউশন মামলা করেন। ২০১৭ সালের ৭ ডিসেম্বর ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিমানবন্দর থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখায় ১১ আসামির অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অব্যাহতির সুপারিশ করে এ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা সিটিসিটির পুলিশ পরিদর্শক মাহবুবুল আলম। অপরদিকে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এজাহারভুক্ত তিন আসামি সিদ্দিকুর রহমান, নাজমুল হক ও শাহ আলমের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ২৮৭ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন মামলার অনুমতি প্রার্থনা করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
Advertisement
যাদের অব্যাহতির প্রদানের আবেদন করা হয়েছে তারা হলেন- বিমানের প্রধান প্রকৌশলী (প্রডাকশন) দেবেশ চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী (কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স) এসএ সিদ্দিক, প্রধান প্রকৌশলী (মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড সিস্টেম কন্ট্রোল) বিল্লাল হোসেন, প্রকৌশলী কর্মকর্তা এসএম রোকনুজ্জামান, সামিউল হক, লুৎফর রহমান, মিলন চন্দ্র বিশ্বাস, জাকির হোসাইন, সিদ্দিকুর রহমান, নাজমুল হক, শাহ আলম ও টেকনিশিয়ান সিদ্দিকুর রহমান।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর হাঙ্গেরি যাওয়ার পথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৭৭ বিমান যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশখাবাতে জরুরি অবতরণ করে। ত্রুটি মেরামত করে সেখানে চার ঘণ্টা অনির্ধারিত যাত্রাবিরতির পর ওই উড়োজাহাজেই প্রধানমন্ত্রী বুদাপেস্টে পৌঁছান।
ওই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর তাদের তদন্ত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেন। এর আগে ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ বিমানের ৬ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর ১৪ ডিসেম্বর বরখাস্ত হন বিমানের তিন প্রকৌশলীও।
পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ২০ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে বাংলাদেশ বিমানের প্রধান প্রকৌশলীসহ ৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। বাংলাদেশ বিমানের পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যাটেরিয়েল ম্যানেজমেন্ট) উইং কমান্ডার (অব.) এমএম আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
Advertisement
জেএ/জেইউ/এমআরএম/আরআইপি