রাজনীতি

ফল ঘোষণার পর চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়া জানাবে বিএনপি

খুলনা সিটির সব কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদে নির্বাচনের ফলাফল নিজেদের পক্ষে নেয়ার চেষ্টা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী।

Advertisement

তিনি বলেন, প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দখলে নেয়া ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৫০টির অধিক। দিনভর অনিয়মের অভিযোগ করলেও ফল ঘোষণা শেষে দলের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়া জানানো হবে বলে জানান তিনি। এছাড়া এতগুলো ভোট কেন্দ্র নিয়ে অভিযোগ করলেও মাত্র কয়েকটি কেন্দ্রের পরিস্থিতি সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন বিএনপির এ নেতা।

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তৃতীয় দফা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ প্রতিক্রিয়ায় রিজভী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বেলা আড়াইটা থেকে ৪টায় ভোট শেষ হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রহরায় নৌকা প্রার্থীর পক্ষে একচেটিয়া সিল মারার নির্দেশ দিয়েছেন খুলনা পুলিশ কমিশনার। ভোট এরকমই হবে বলে নৌকার প্রার্থী নিশ্চিত ছিলেন। সে কারণেই তিনি নির্বাচনের দু’দিন আগে ভোটে জেতার শুভেচ্ছা জানিয়ে দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার সেঁটেছেন।

Advertisement

প্রত্যেকটা ভোট কেন্দ্রে ক্ষমতাসীনরা হানা দিয়েছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, প্রত্যেকটিতেই কমবেশি হানা দিয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর হচ্ছে ১৫০টির অধিক।

রিজভী বলেন, বর্তমান অবৈধ সরকার ক্ষমতায় থাকলে কোনো দিনই দূষণমুক্ত নির্বাচন হবে না। সরকার, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, নির্বাচন কমিশন ও আওয়ামী সশস্ত্র ক্যাডাররা একই নৌকার যাত্রী। যার কারণে ভোট ডাকাতির নির্বাচনকেই আদর্শ নির্বাচন হিসেবে তারা প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছে।

বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, নির্বাচন কমিশন সরকারেরই বিম্বিত কণ্ঠস্বর। আওয়ামী সন্ত্রাসী ক্যাডার, প্রকাশ্য অদৃশ্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার গুণ্ডামি এবং গত কয়েকদিনে ভোটারদের মনে ভীতি সৃষ্টির জন্য গ্রেফতার ও বাড়িতে বাড়িতে পুলিশের আগ্রাসন, এজেন্টদের হুমকি দিয়ে কেন্দ্রে যেতে না দেয়াসহ সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত যা ভোট হয়েছে তা প্রহসন। প্রহসনের আরও একটি নিদর্শন হচ্ছে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী একটি কেন্দ্রে গিয়ে দেখেন গোটা ব্যালট বইটির প্রতিটি পেপার নৌকা মার্কার সিলে ভরা। আরও কয়েকটি কেন্দ্রে সাংবাদিকরা এরকম ঘটনা সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করেছেন। আওয়ামী লীগের সব কাজই প্রকৃতপক্ষে প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার রাজত্বে গণতন্ত্র এখন ছিন্নমূলে পরিণত হয়েছে। সরকার মূলত: দেশবাসীর রক্ত পান করতে করতে দেশকে ভাগাড়ে পরিণত করেছে। ভোটারবিহীন সরকারের নিরবচ্ছিন্ন ভোটাধিকার হরণের ধারায় জনগণের অন্তহীন আর্তি এখন আকাশে-বাতাসে ধ্বনিত হচ্ছে। আজকের ভোট সন্ত্রাসের ঘটনায় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ভোটাররা ব্যথিত, বঞ্চিত, অপমানিত।

Advertisement

এছাড়া আজ অনুষ্ঠিত ঝালকাটি সদর উপজেলার ৭নং কোনাবালিয়া ইউপি নিবাচন এবং চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার দদোশ ইউপি নির্বাচনে সব কেন্দ্র ক্ষমতাসীনরা দখল করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কেএইচ/এএইচ/পিআর