আন্তর্জাতিক

বিক্ষোভে উত্তাল গাজায় নিহত বেড়ে ৫৮

বিক্ষোভে উত্তাল গাজা উপত্যকায় সোমবার একদিনেই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে ৫৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ২ হাজার সাতশোর বেশি মানুষ। ইসরায়েল সীমান্তের কাছে বেশ কিছু পয়েন্টে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর নির্বিচার গুলি, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে।

Advertisement

সোমবার জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস উদ্বোধনের প্রতিবাদে গাজা উপত্যকাসহ পুরো ফিলিস্তিনে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেয়।

১৯৪৮ সালের ১৫ মে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে প্রত্যেক বছর ওই দিনটিকে ফিলিস্তিনিরা ‘বিপর্যয়’ বা ‘নাকাবা’ দিবস হিসেবে পালন করে। ওই বছর হাজার হাজার ফিলিস্তিনি তাদের নিজ ভূখণ্ড থেকে বিতাড়িত হয়।

গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন আন্দোলনের অংশ হিসেবে সোমবার সকাল থেকেই অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার অত্যন্ত সুরক্ষিত সীমানা বেড়া পেড়িয়ে ইসরায়েলে ঢোকার চেষ্টা করেছে বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিতে গাজায় লাখো ফিলিস্তিনি পৌঁছেছেন।

Advertisement

তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে নেয়ার প্রতিবাদে পশ্চিম তীরের রামাল্লাহ ও হেবরনেও বিক্ষোভ করছেন ফিলিস্তিনিরা। জেরুজালেম থেকে উত্তরাঞ্চলের রামাল্লাহকে বিভক্তকারী কালানদিয়া সামরিক তল্লাশি চৌকির কাছেও বিক্ষোভ করছেন তারা।

ফিলিস্তিনিরা দীর্ঘদিন ধরে এই বিক্ষোভ করে আসছে। ১৫ মে এই বিক্ষোভ শেষ হওয়ার কথা। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বাস্ত্যুচুত হয়। ইসরায়েলি অবৈধ ভূমি দখলকে ফিলিস্তিনিরা বিপর্যয় হিসেবে মনে করে।

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলছেন, তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুসালেমে সরিয়ে নেওয়ার ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের উপর ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালায়। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তকে ইসরায়েল স্বাগত জানালেও এ নিয়ে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়িয়েছে। ইউরোপসহ সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তেল আবিব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস জেরুসালেমে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হওয়ার পর থেকেই ফিলিস্তিনিরা এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে আসছে।

চলতি বছরের ৩০ মার্চ থেকে বিক্ষোভে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে কমপক্ষে ১০৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও প্রায় ১২ হাজার মানুষ। ২০১৪ সালে গাজায় ইসরায়েলের হামলার পর একদিনে এত বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার ঘটনা আর ঘটেনি।

Advertisement

একসঙ্গে এতো ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার পর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর। গাজায় যা ঘটছে তাকে এক বর্বরোচিত আক্রমণ বলে বর্ণনা করেছেন তিনি।জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার জেইদ বিন রাদ জেইদ আল হুসেইন বলেছেন, যারা এই জঘন্য মানবাধিকার লংঘনের জন্য দায়ী, তাদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহতদের মধ্যে বহু শিশুও রয়েছে।

টিটিএন/জেআইএম