বিল্ডিংয়ের ছাদে মোবাইল টাওয়ার স্থাপন, নিয়ন্ত্রণ এবং লাইসেন্স নীতিমালার সংক্রান্ত (চলতি বছরের ১ এপ্রিল প্রণয়ন করা) কিছু সংখ্যাক বিধান কেন অবৈধ ও বে-আইনি ঘোষণা করা হবে না -তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে বিটিআরসির চেয়ারম্যান ও আইন সচিবকে এ রুলের জবাব দিতে হবে।
Advertisement
এ সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি তারিক-উল-হাকিম ও বিচারপতি মো. ফারুকের (এম ফারুক) এর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করিম।
মোস্তাফিজুর রহমান খান সাংবাদিকদের বলেন, অসৎ উদ্দেশ হাসিলের জন্য চলতি বছরের ১ এপ্রিল এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। পরে এই নীতিমালার কয়েকটি বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়। রিটের প্রেক্ষিতে প্রণীত ওই টাওয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং লাইসেন্স নীতিমালার ৫.৪, ৫.৫, ১৭.০৩, ১৮.০১, ১৮.০২, ১৮.০৩, ১৮.০৪ ও ১৮.০৫ বিধানগুলো কেন অবৈধ, বে-আইনি ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। কারণ সংবিধানের ৩১, ৪০ ও ৪২ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করে এ নীতিমালাগুলো প্রণয়ন করা হয়েছে।
এর আগে বিল্ডিংয়ের উপরে টাওয়ার স্থাপনে লাইসেন্স ও টাওয়ার ভাড়া সংক্রান্ত নীতিমালার কয়েকটি বিধান চ্যালেঞ্জ করে বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানি ‘গ্রামীণফোন’ হাইকোর্টে রিট আবেদন করে। সেই আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেন।
Advertisement
গত ১ এপ্রিল টেলিযোগাযোগ টাওয়ার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব তৃতীয় পক্ষের কাছে দেয়ার বিধান রেখে টাওয়ার শেয়ারিং নীতিমালা প্রকাশ করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি। একই সঙ্গে টাওয়ার শেয়ারিং লাইসেন্স নিতে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আবেদন আহ্বান করে সংস্থাটি।
লাইসেন্সিং নীতিমালা অনুযায়ী, চারটি প্রতিষ্ঠানকে টাওয়ার শেয়ারিং লাইসেন্স দেয়া হবে। আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানটি সেলফোন অপারেটর বা বিডব্লিউএ অপারেটর কোম্পানির শেয়ার মালিক হলে লাইসেন্স নেয়ার আগেই ওই শেয়ার ছেড়ে দিতে হবে। নীতিমালায় টাওয়ার কোম্পানিতে বিদেশি বিনিয়োগের সর্বোচ্চ সীমা ৭০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
টাওয়ার ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সেবা নিতে পারবে সেলফোন অপারেটররা। আর টাওয়ার ব্যবস্থাপনা লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দেশব্যাপী নেটওয়ার্ক অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে সেলফোন অপারেটরদের কাছ থেকে টাওয়ার কিনে বা ভাড়ার ভিত্তিতে ব্যবহার করতে পারবে প্রতিষ্ঠানগুলো, যা অন্য সেলফোন অপারেটরদের ভাড়া দেবে তারা।
নীতিমালা অনুযায়ী, টাওয়ার ব্যবস্থাপনার লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানের নেটওয়ার্ক অবকাঠামো সম্প্রসারণের পাশাপাশি সেলফোন অপারেটরদের নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগির ভিত্তিতে টাওয়ার ব্যবহারের কার্যক্রম কমিয়ে আনতে হবে। টাওয়ার কোম্পানি লাইসেন্স পাওয়ার পর প্রথম বছর দেশের সব বিভাগীয় শহরে সেলফোন অপারেটরদের ভাগাভাগির ভিত্তিতে টাওয়ার ব্যবহারের সেবা বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয় বছর জেলা শহরগুলো, তৃতীয় বছর ৩০ শতাংশ উপজেলা, চতুর্থ বছর ৬০ শতাংশ উপজেলা ও পঞ্চম বছর দেশের সব উপজেলায় অপারেটরদের দেয়া এ সেবা বন্ধ করতে হবে। এ সময়সূচি অনুযায়ী টাওয়ার কোম্পানিগুলোও সংশ্লিষ্ট এলাকায় তাদের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করবে বলে উল্লেখ করা হয়।
Advertisement
এফএইচ/আরএস/জেআইএম