আন্তর্জাতিক

নজিরবিহীন বিক্ষোভে উত্তাল গাজা, নিহত ১০

লাখো মানুষের বিক্ষোভে আবারো উত্তাল হয়ে উঠেছে অধিকৃত গাজা উপত্যকা। সীমান্তের বেশ কিছু পয়েন্টে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভে সরাসরি গোলাবারুদ ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী। এতে অন্তত ১০ ফিলিস্তিনি নিহত ও আরো শতাধিক আহত হয়েছেন।

Advertisement

সোমবার জেরুজালেমে মার্কিন কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে ছোট পরিসরে অন্তর্বর্তীকালীন দূতাবাসের কার্যক্রম শুরু করছে যুক্তরাষ্ট্র। এই দূতাবাসের উদ্বোধন করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়ে ইভানকা ট্রাম্প এবং জামাতা জ্যারেড কুশনার বর্তমানে জেরুজালেমে রয়েছেন।

মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর ও ইসরায়েলের দখলদারির বিরুদ্ধে পুরো সীমান্ত এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেছেন ফিলিস্তিনিরা। সীমান্ত বেড়া পেরিয়ে ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করছেন তারা। ইসরায়েলি বাহিনীর গুলি ও টিয়ারগ্যাসে ১০ ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জেরুজালেম পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।

১৯৪৮ সালের ১৫ মে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে প্রত্যেক বছর এই দিনটিকে ফিলিস্তিনিরা ‘বিপর্যয়’ বা ‘নাকাবা’ দিবস হিসেবে পালন করে। ওই বছর হাজার হাজার ফিলিস্তিনি তাদের নিজ ভূখণ্ড থেকে বিতাড়িত হয়।

Advertisement

একই সঙ্গে ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে নেয়ার বিরুদ্ধেও সোমবার প্রতিবাদ করছেন ফিলিস্তিনিরা। গত ৬ ডিসেম্বরে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে জেরুজালেমকে স্বীকৃতি দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন আন্দোলনের অংশ হিসেবে সোমবার সকাল থেকেই অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার অত্যন্ত সুরক্ষিত সীমানা বেড়া পেড়িয়ে ইসরায়েলে ঢোকার চেষ্টা করেছেন। বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিতে গাজায় লাখো ফিলিস্তিনি পৌঁছেছেন।

তেলআবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে নেয়ার প্রতিবাদে পশ্চিম তীরের রামাল্লাহ ও হেবরনেও বিক্ষোভ করছেন ফিলিস্তিনিরা। জেরুজালেম থেকে উত্তরাঞ্চলের রামাল্লাহকে বিভক্তকারী কালানদিয়া সামরিক তল্লাশি চৌকির কাছেও বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন তারা।

ফিলিস্তিনিরা দীর্ঘদিন ধরে এই বিক্ষোভ করে আসছে। ১৫ মে এই বিক্ষোভ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বাস্ত্যুচুত হয়। ইসরায়েলি অবৈধ ভূমি দখলকে ফিলিস্তিনিরা বিপর্যয় হিসেবে মনে করে।

Advertisement

ফিলিস্তিনিরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের নিজ ভূখণ্ড ফেরতের দাবি জানিয়ে আসছে। তবে ইসরায়েল বলছে, তাদের উচিত গাজা এবং পশ্চিম উপত্যকায় ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।

স্থানীয় সাংবাদিক মারাম হুমােইদ কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে বলেন, ‘বিক্ষোভে যতসংখ্যক মানুষ অংশ নিয়েছেন তা নজিরবিহীন। গত সাত সপ্তাহের প্রতিবাদে এমন জনসমাবেশ দেখা যায়নি।’

গাজা উপত্যকার ২০ লাখ মানুষের ৭০ শতাংশ উদ্বাস্তু হয়ে জীবন কাটাচ্ছে। গত ৩০ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৫০ ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। এছাড়া আহত হয়েছে আরো কমপক্ষে সাড়ে ৮ হাজার।

এসআইএস/এমএস