দেশজুড়ে

‘রোহিঙ্গাদের কারণে কর্মসংস্থানের সঙ্কট’

বাংলাদেশ বহুমাত্রিক সমস্যায় পড়েছে উল্লেখ করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘মিয়ানমারের নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়েছে। জীবন-যাপনের ব্যয় বেড়ে কর্মসংস্থানের সঙ্কট তৈরি হয়েছে।’

Advertisement

রোববার সকালে চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদে হোটেল সেন্টমার্টিনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা সঙ্কটের অর্থনৈতিক প্রভাব ও আসন্ন বাজেট’ শীর্ষক এক সংলাপে তিনি এ কথা বলেন।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)-টিআইবি, চট্টগ্রাম মহানগরের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘রোহিঙ্গা সঙ্কটের কারণে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি পর্যটন খাতেও ক্ষতি হচ্ছে। দাতা সংস্থাগুলো এখন পর্যন্ত সহযোগিতা করছে কিন্তু একটা সময় সাহায্য নাও করতে পারে। এ জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানো দরকার। মিয়ানমারকে চাপ দেয়া দরকার। এ সঙ্কট স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনায় সমাধানযোগ্য নয়, এর জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা।’

Advertisement

তিনি আরও বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য আগামী অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ দিতে হবে। তবে তা যেন দীর্ঘমেয়াদি আত্মীকরণ না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কারণ রোহিঙ্গাদের দীর্ঘমেয়াদি অবস্থান বর্তমানে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাওয়া বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা কষ্টকর হয়ে উঠবে।’

রোহিঙ্গা সঙ্কটের ফলে বাংলাদেশে সৃষ্ট সমস্যার ধরন ও প্রভাবসমূহ তুলে ধরে ফাহমিদা খাতুন বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা দরকার। কারণ মাদক চোরাচালানে তারা সম্পৃক্ত হয়ে যেতে পারে। তাই সরকারকে যা ভাবার এখনই ভাবতে হবে।

তিনি জানান, চুক্তি অনুযায়ী প্রতিদিন ৩০০ জন করেও যদি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন করা হয় তাহলে সাত বছর সময় লাগবে। প্রতিবছর তাদের জন্য খরচ হবে চার দশমিক চার বিলিয়ন ডলার। গত সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত বিদেশি সাহায্য এসেছে ৩২২ মিলিয়ন ডলার। মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের জন্য প্রয়োজন আরও ৯৫০ মিলিয়ন ডলার।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক ড. আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর (অব.) মো. এমদাদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউএসটিসি) উপাচার্য ডা. প্রভাত চন্দ্র বড়ুয়া, সনাক-টিআইবি চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও সংলাপে শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, উন্নয়নকর্মী, সাংবাদিক, ছাত্রসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন পেশার নাগরিকরা সংলাপে অংশ নেন।

Advertisement

জেএইচ/পিআর