শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রাম পদ্মা নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। প্রায় ১ মাস ধরে নদীর ভাঙন অব্যাহত থাকলেও গত ১০দিনে গৃহহীন হয়ে পড়েছে প্রায় ৪শ পরিবার। ভাঙন কবলিত এলাকাবাসী জানায়, ২৫ রোজায় আমার বসত বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনি নিয়ে নূরানী মাদরাসার মাঠে থাকতাম। বোধ হয় আজ রাতের মধ্যে এই মাদরাসা মাঠও নদী ভাঙনে বিলীন হবে। তাই সব কিছু নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছি। আমাদের আপদের দিনে চেয়ারম্যান, মেম্বার বা সরকারের কোনো সহায়তা পেলাম না। আমরা বোধহয় দেশের বোঝা, আমাদের বাঁচা মরায় কার কি আসে যায়। জমির ছৈয়াল, আমির হোসেন বেপারী, ইলিয়াছ মাদবর জানায়, আপনারা আমাদের জন্য কি করবেন। ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, এমপিই আমাদের খবর নেয় না। গত ৩ বছরে প্রায় ৬কিলোমিটার এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এদের কেউই আমাদের খোঁজ খবর নেয়ার প্রয়োজন মনে করে না। অন্যান্য এলাকায়ও নদী ভাঙন হয়েছে আর তারা সরকারি সাহায্য সহায়তা পেয়েছে। আমাদের এলাকায় কোনো সাহায্য পৌঁছে না। বাক প্রতিবন্ধী মনির ছৈয়াল, বাবু ছৈয়াল ও শিরিন ইশারায় দেখায়, নদীর মাঝখানে তাদের বসত বাড়ি ছিল। আজ তাদের মাথা গোজার ঠাঁই নেই।মৃত আজিজ ছৈয়ালের স্ত্রী আমেনা বেগম জানায়, আমাদের বিপদে মেম্বার, চেয়ারম্যান পাশে থাকলেও সাহস পেতাম। তাদের কাছেতো আমরা সাহায্য চাই না। তাদের কোনো খোঁজ খবরও নেই। স্কুল, মাদরাসাও নদীর মধ্যে। ছেলে-মেয়েদের লেখা-পড়ার আর কোনো ব্যবস্থা রইল না। আমাদের পোড়া কপাল পোড়াই রইল, দোষ দিমু কার। এখন একজনের বাড়িতে পাটনা দিছি। বেশি দিন ওই বাড়িতে থাকতে পারব না।বড়কান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম সরদার বলেন, আমার বাড়িও ভাঙন কবলিত। গতকাল বসত ঘর সরিয়ে নিয়েছি। আমার ইউনিয়নে ভাঙন কবলিত ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা দিয়েছি।জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল কাদের বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরি করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠিয়েছি। সরকারি কোনো ত্রাণ বা সহায়তা পাওয়া গেলে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে বিতরণ করব। মো. ছগির হোসেন/এসএস/এমআরআই
Advertisement