স্মৃতিভ্রংশ রোগের যেসব ধরন রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় আলজেইমার। এটি মস্তিস্কের এমন এক ধরনের রোগ যার ফলে কিছু মনে রাখতে না পারে না রোগী।
Advertisement
এ রোগটি অনেক সময় ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে, সময় নেয় কয়েক বছর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুরুর দিকে অনেক সময়ই এ রোগ ধরা পড়ে না। আর তার কারণ হলো- এ রোগের যেসব লক্ষণ রয়েছে অন্য অনেক ক্ষেত্রেও সেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
মাঝে মাঝে বিভিন্ন বিষয় ভুলে যাওয়া নয়, আলজেইমার তার চেয়েও বেশি কিছু। কখনও কখনও কারও নাম ভুলে যাওয়া বা কোনো জিনিস কোথায় রাখা হয়েছে সেটা অনেকেই ভুলে যেতে পারেন। এমন হওয়ার মানেই যে কেউ আলজেইমার আক্রান্ত হয়েছেন তা নয়। ভুলে যাওয়া বার্ধক্যের সাধারণ একটি অংশ।
আলজেইমারের প্রথম লক্ষণ হলো স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া। রোগটি শর্ট-টার্ম মেমোরি বা স্বল্পমেয়াদে স্মৃতি-বিভ্রাট ঘটায়। এ রোগে আক্রান্ত হলে রোগী ১০ মিনিট আগের ঘটনাও ভুলে যায় কিংবা কিছুক্ষণ আগের কথা-বার্তাও ভুলে যায়।
Advertisement
এ রোগে আন্ত্রান্ত হওয়ার কারণে এক কাপ চা তৈরি করাটাও অনেক কঠিন একটা কাজ হয়ে দাঁড়াতে পারে। কেননা চা বানাতে গিয়ে একটা কাজের পর কোনটা করতে হবে সেটা ভুলে গেলে তা বিভ্রান্ত করতে পারে অনেককে। এই অবস্থায় পরিবর্তনগুলো খুব ছোট ছোট হতে পারে কিন্তু তা দৈনন্দিন জীবনকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
এ রোগের আরেকটি সাধারণ লক্ষণ হলো রোগী কোথাও গিয়ে ভুলে যেতে পারেন তিনি সেখানে কেন এলেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে কেউ সিঁড়ি দিয়ে উঠে যেতে পারে কিংবা অন্য কোনো রুমে চলে যেতে পারেন কিন্তু হয়তো জায়গাটি চিনতে পারবেন না। কোন দিন বা কোন মাস সে নিয়েও বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।
উপরের এসব উপসর্গ কারও মধ্যে থাকলে তার মধ্যে মুড বা আচরণ পরিবর্তনের উপসর্গও থাকতে পারে। এ রোগে আক্রান্তরা সহজেই বিরক্ত হয়, প্রায়ই হতাশা দেখা দেয় এবং আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। এর ফলে দৈনন্দিন কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে এবং নতুন কোনো কাজের ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে উঠতে পারে।
আলজেইমার সোসাইটির ক্যাথরিন স্মিখের ভাষ্য, ‘ডিমেনশিয়া বার্ধক্যের কোনো স্বাভাবিক দিক নয় এটি মস্তিষ্কের এক ধরনের রোগ এবং এটি কেবল বয়স্ক মানুষদের আক্রান্ত করে তেমনটি নয়।’
Advertisement
তিনি আরও বলেন, এ রোগে প্রত্যেকের অভিজ্ঞতা ভিন্ন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ বুঝতে পারে যখন কিছু একটা গোলমেলে ঠেকে।
আলজেইমার নিয়ে বহুবছর ভালোভাবে বাঁচা সম্ভব এবং এই রোগ নির্ণয়ের ফলে কারো জীবন রাতারাতি পাল্টে যায় না।
সূত্র : বিবিসি বাংলা।
এনএফ/এমএস