দেশজুড়ে

ঠাকুরগাঁওয়ে প্রচণ্ড দাবদাহে ফেটে চৌচির আমনের ক্ষেত

প্রয়োজনীয় বৃষ্টির অভাবে ঠাকুরগাঁও জেলায় আমন আবাদে বিপর্যয় নেমে এসেছে। বৃষ্টির অভাবে এবং প্রচণ্ড রোদে খাঁ খাঁ করছে বিস্তীর্ণ উঁচু মাঠ। বৃষ্টিনির্ভর আমন আবাদে পানি না থাকায় কৃষকরা যেমন চারা রোপণ করতে পারছেন না তেমনি আগাম লাগানো আমন ক্ষেতে কৃষকরা কৃত্রিম সেচ দিয়ে ফসল রক্ষায় প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে বেশিরভাগ এলাকাতেই সেচ সুবিধা না থাকায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অপরদিকে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ভরা বর্ষা মৌসুমেও পানি নেই পুকুর, খালবিলে। ঠাকুরগাঁওয়ের জেলায় পুকুর, খালবিলে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় বিপাকে পড়েছেন পাট চাষিরা। পানির অভাবে পাটের জাগ (পাট পঁচানো) দিতে পারছেন না এখানকার কৃৃষকরা। ঠাকুরগাঁও কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁওয়ে আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লক্ষ ৩৯ হাজার ৭১৩ হেক্টর জমি। আর এখন পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ৯৩ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে। অপরদিকে, চলতি পাট মৌসুমে ঠাকুরগাঁও জেলায় ৮ হাজার ৩৬২ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। আর পাট চাষ হয়েছে ৮ হাজার ৬৪০ হেক্টর জমিতে।ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা রহিমানপুর ইউনিয়নের কৃষক আবদুল্লাহ জাগো নিউজকে জানান, বোরো মৌসুমে ভালো ফলন পেলেও ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় অনেক লোকসান গুণতে হয়েছে। বর্ষার অর্ধেক সময় চলে যাচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভারি বৃষ্টিপাতের দেখা নেই। কিন্তু ডিজেল ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক জিনিসপত্রের মূল্য আকাশচুম্বি হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছি।আকচাঁ ইউনিয়নের বন্দরপাড়া গ্রামের কৃষক আবদুর রহিম জাগো নিউজকে জানান, আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে এরকম খরা কখনো দেখিনি। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে নদীনালা, খালবিল নিচু জলাশয়গুলোয় পানিতে থৈ থৈ করতো। আর এখন সেখানে মাঠঘাট ফেটে গেছে। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক আইনুল হক অভিযোগ করে জাগো নিউজকে বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় আমনের ক্ষেত পানির অভাবে ফেটে চৌচির হয়ে পড়ছে। বাধ্য হয়ে ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচের ব্যবস্থা করছি। এতে করে খরচ বেশি হবে।ওই একই গ্রামের কৃষক পয়দুল ইসলাম জানান, পাট গাছ বড় হয়ে গেছে। এখন পাট কেটে জাগ দেওয়ার দরকার। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় খালে, পুকুরে পানি নাই। এখন পাট নিয়ে আমি মহা সমস্যায় আছি।ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক (উদ্ভিদ বিজ্ঞান) নাসরীন জাহান জাগো নিউজকে বলেন, এবার রোদের তাপ অনেক বেশি। আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে এমনটি হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আবাদি জমি তাদের উর্বরতা হারাবে। ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক আরশেদ আলী খাঁন জাগাে নিউজকে জানান, বর্তমানে যে অবস্থা চলছে যদি এই অবস্থা যদি বেশিদিন চলে তাহলে আমন আবাদে প্রভাব ফেলবে। আমরা আশা করছি দ্রুত এ খরা মৌসুম থেকে আমরা রক্ষা পাবো। আর বৃষ্টি হলে কৃষক পাট জাগ দিতে পারবেন। না হলে যে রিবন পদ্ধতি আছে তা কৃষক ব্যবহার করতে পারে না।রবিউল এহসান রিপন/এমজেড/আরআইপি

Advertisement