জাতীয়

‘এটা আমাদের জাতিগত অনেক বড় পাওয়া’

সব অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে দেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মহাকাশে উড়তে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সময় ১০ মে বিকাল ৪টায় (বাংলাদেশ সময় ১১ মে দিবাগত রাত ৩টা) ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণ হবে। সফলভাবে মহাকাশে গেলে বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে নিজস্ব স্যাটেলাইটের মালিক হবে বাংলাদেশ।

Advertisement

মহাকাশে উৎক্ষেপণ হতে যাওয়া বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’ নিয়ে ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তফা জব্বারের সঙ্গে আলাপ হয় জাগো নিউজের। তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের জাতিগত অনেক বড় পাওয়া। জাতিগতভাবে ৫৭তম দেশের কাতারে বাংলাদেশের অবস্থান সম্ভব হচ্ছে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের মাধ্যমে।’

আরও পড়ুন >> মহাকাশে বাংলাদেশের উপস্থিতি জানান দেবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট

‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলের মতো কাজের চ্যালেঞ্জ নিয়ে তিনি সফল হয়েছেন। আমাদের নিজস্ব স্যাটেলাইট থাকবে না- এটা তো হতে পারে না।’

Advertisement

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ইন্টারনেটের ব্যবহার ও চাহিদা অনেক বেড়েছে। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে নিজস্ব স্যাটেলাইট ছিল সময়ের দাবি। এটি এখন পূরণ হতে চলেছে।’

‘বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণের মুহূর্তটি হবে বাংলাদেশের জন্য অন্যরকম একটি দিন। এটি মহাকাশে স্থাপনের মাধ্যমে অন্য দেশের ওপর যেমন বাংলাদেশের নির্ভরতা কমবে, তেমনি দেশের অভ্যন্তরীণ টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে। যেকোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে টেরিস্ট্রিয়াল অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট দেশে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিতে সহয়াক হবে। এর সর্বোচ্চ সক্ষমতা আমরা ব্যবহার করবো। প্রয়োজনের অতিরিক্ত ট্রান্সপন্ডার (২০টি) বাণিজ্যিকভাবে বিক্রিও হবে।’

আরও পড়ুন >> স্যাটেলাইটে লেখা থাকছে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’

একাধিকবার উৎক্ষেপণের তারিখ পরিবর্তন হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা ভীষণ টেকনিক্যাল বিষয়। এখানে আমাদের কোনো হাত নেই। সবাই এটির উৎক্ষেপণের জন্য অপেক্ষায় আছে। একটা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের আয়োজন অনেক বড়। সবকিছু চূড়ান্ত হওয়ার পরই এটা উৎক্ষেপণ করা হবে, উৎক্ষেপণের জন্য অনেকগুলো ফেক্টরও কাজ করে। এছাড়া টেকনিক্যাল বিষয়ের সঙ্গে আবহাওয়ার বিষয়টিও জড়িত।’

Advertisement

নিজস্ব স্যাটেলাইট মালিকানার গর্বের পাশাপাশি এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সামনে মহাকাশবিজ্ঞানের অসীম সম্ভাবনার দ্বার খুলবে। দেশের সব ইউনিয়নে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবলের মাধ্যমে দ্রুতগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে না পারলেও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট চালু হলে এর সীমাবদ্ধতা দূর করা যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দুর্যোগের সময় নিরবচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। এর মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে সাশ্রয়ীমূল্যে সম্প্রচার সেবা দেয়া সম্ভব হবে।

আরও পড়ুন >> স্যাটেলাইটে কী সুবিধা পাবে বাংলাদেশ

স্যাটেলাইটটি নির্মাণ করেছে ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়া নামের একটি প্রতিষ্ঠান। স্যাটেলাইটের কাঠামো তৈরি, উৎক্ষেপণ, ভূমি ও মহাকাশের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, ভূ-স্তরে দুটি স্টেশন পরিচালনার দায়িত্ব এ প্রতিষ্ঠানটির।

এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে দুই হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা। স্যাটেলাইটে থাকছে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার। এগুলোর মধ্যে প্রাথমিকভাবে ২০টি ব্যবহার করবে বাংলাদেশ। অন্যগুলো ভাড়া দেয়া হবে। স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু- ১ এর গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরি করা হয়েছে গাজীপুর ও রাঙ্গামাটিতে।

এএস/আরএম/এমএআর/জেআইএম