>> রমজানকে সাংগঠনিক মাস ঘোষণা বিএনপির>> ঘরোয়া রাজনীতিতে সক্রিয় থাকবেন নেতাকর্মীরা>> খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনও থাকছে
Advertisement
বরাবরের মতো এতিম, ওলমা-মাশায়েখ, রাজনীতিক, পেশাজীবী ও কূটনীতিকদের নিয়ে এবারও রোজায় ইফতারের আয়োজন করবে বিএনপি। তবে এর ব্যাপকতা আগের মতো থাকছে না। দলীয় প্রধানের অনুপস্থিতিতে হাতেগোনা কয়েকটি ইফতার মাহফিল আয়োজন করতে পারে দলটি। এ বিষয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেবেন দলের শীর্ষনেতারা।
দলীয় সূত্র জানায়, ইফতার মাহফিল আয়োজন কম করার চিন্তা থাকলেও রমজানকে সাংগঠনিক মাস হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। রমজানে দলের সাংগঠনিক তৎপরতা আরও জোরদারের চেষ্টা করছে দলটি। পুরো রমজান মাসে ঘরোয়া রাজনীতিতে সক্রিয় থাকবেন দলটির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। ইফতার মাহফিলের মাধ্যমে দলটি সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালাবে। একই সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলনের কর্মসূচিও থাকবে এ রমজানে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান লন্ডনে। তার নির্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের সদস্যদের নিয়ে এ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছেন।
Advertisement
পবিত্র রমজান মাসে দলীয় কর্মসূচি প্রসঙ্গে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, ‘রমজান মাসকে ঘিরে দলের তৎপরতা আগে যেটা ছিল, সেটা খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে জাতীয় পর্যায়ের প্রোগ্রামে কিছুটা হলেও প্রভাব পড়বে। রমজান মাসে ইফতার-মাহফিলসহ খালেদা জিয়ার মুক্তির যে সংগ্রাম, সেই সংগ্রাম চলবে। একই সঙ্গে আগামী দিনের যে আন্দোলন সেই আন্দোলনের অংশ হিসেবে গণসংযোগও চলবে। ব্যাপকভাবে সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা এ দায়িত্ব পালন করবেন বলে আমার ধারণা।’
দলটির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল খান বলেন, ‘আমাদের দল তো অলরেডি রমজান মাসকে সাংগঠনিক মাস হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। প্রতিটা আসনভিত্তিক আমাদের কর্মকাণ্ড থাকবে, সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড, ইফতার মাহফিল, কর্মীসভা এবং বিভিন্ন দোয়া-মাহফিলের মাধ্যমে কাজ চলবে। এছাড়া দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির ওপর নির্ভর করবে রমজান মাসে আমাদের কর্মসূচি কীভাবে হবে। ওই হিসেবেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ হবে।’
ধর্মীয় বিষয়গুলো নিয়ে বিএনপিতে সাধারণত সরব থাকে জাতীয়তাবাদী ওলামা দল। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা নেসারুল হক বলেন, ‘পার্টির যেটা সিদ্ধান্ত আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করি। মাহে রমজান, কোরআন নাজিলের মাস, রহমতের মাস। এ মাসে আল্লাহর ইবাদত বন্দেগিও করবো, একই সঙ্গে দলের জন্য কাজও করবো।’
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ মে দলের যৌথসভায় বিভিন্ন বিষয়ে মতামত নেয়া হয়। সেখানে আলোচনা হয় সার্বিক বিষয়ে। বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে থাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে তিনটি ইফতার মাহফিল আয়োজনের নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। এতিম, ওলামা-মাশায়েখদের নিয়ে প্রথম ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। রাজনীতিক ও পেশাজীবীদের সম্মানে একত্রে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হবে। ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকদের সম্মানে বিএনপির ইফতার কর্মসূচিও থাকছে। এছাড়া পুরো রমজান মাসে ঘরোয়া রাজনীতিতে সক্রিয় থাকবেন বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। ইফতার মাহফিলের মাধ্যমে সরকারবিরোধী হিসেবে পরিচিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন করতে চান তারা। এছাড়া যেসব নেতা গ্রেফতারের ভয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন তাদেরও প্রকাশ্যে দেখা যেতে পারে।
Advertisement
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘রমজানে দলের পক্ষ থেকে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হবে। তবে কয়টি ইফতার মাহফিল করা হবে তা চূড়ান্ত হয়নি।’
দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, ‘প্রতি বছরই দলীয় চেয়ারপারসনের উপস্থিতিতে এতিম, ওলামা-মাশায়েখ, কূটনীতিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ও রাজনীতিবিদদের সঙ্গে ইফতারের আয়োজন করা হতো। এবার তিনি জালিম সরকারের কারাগারে বন্দী। তার অবর্তমানেও কিছু ইফতার মাহফিল হবে।’
তিনি বলেন, ‘রমজান মাসে সবাই রাজনীতিটাকে একটু দূরে রেখে ধর্ম-কর্ম করতে চান। ইফতার মাহফিলের মাধ্যমে আমাদের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চলবে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলনের কর্মসূচিও থাকবে।’
এ বিষয়ে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা গত শুক্রবার (৪ মে) বসেছিলাম। সবার মতামত নেয়া হয়েছে। কী ধরনের কর্মসূচি দেয়া যায়, সে ব্যাপারে আমরা আবার বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’
কেএইচ/জেডএ/এমএআর/পিআর