অর্থনীতি

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহক ৬ কোটি ছাড়িয়েছে

সহজে ও দ্রুততম সময়ে শহর কিংবা গ্রামে সর্বত্রই টাকা পাঠানোর সুবিধার কারণে দেশে মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। ফলে এ সেবায় প্রতিদিনই বাড়ছে নতুন নতুন গ্রাহক। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণ।

Advertisement

মোবাইল আর্থিক সেবা (এমএফএস) নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের মার্চ মাস শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে গ্রাহক সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬ কোটি। এ সেবার মাধ্যমে গড়ে প্রতিদিন লেনদেন হচ্ছে হাজার কোটি টাকা।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু লেনদেন নয়, যুক্ত হচ্ছে অনেক নতুন নতুন সেবাও। বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল অর্থাৎ সেবা মূল্য পরিশোধ, কেনাকাটার বিল পরিশোধ, বেতন-ভাতা প্রদান, বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রেরণসহ নিত্যকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এখন পছন্দের মাধ্যম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মোবাইলের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে বা অতিদ্রুত শহর থেকে গ্রামে, গ্রাম থেকে শহরে সর্বত্রই টাকা পাঠানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে। দিন দিন গ্রাহক সংখ্যা বাড়ছে। দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ যুক্ত হচ্ছে। ফলে মোবাইল ব্যাংকিং দেশের ব্যাংকিং সেবায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে।

Advertisement

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে মোট ১৮টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে জড়িত আছে। এসব প্রতিষ্ঠানে মার্চ শেষে মোট নিবন্ধিত মোবাইল আর্থিক সেবা (এমএফএস) হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ১ লাখ ৫২ হাজার। এর মধ্যে সক্রিয় হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ২ লাখ ৬২ হাজার। আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৪ হাজার ৬১০ জন।

তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ মার্চ মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে মোট লেনদেন হয়েছে ৩১ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা। ফেব্রুয়ারিতে এর পরিমাণ ছিল ২৮ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ ফেবুয়ারির তুলনায় মার্চে লেনদেন বেড়েছে ১০ দশমিক ২ শতাংশ। মার্চে মোট ১৮ কোটি ১০ লাখ ৭ হাজার ৯১৭টি লেনদেন হয়।

প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, মার্চ মাসে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ১১ কোটি টাকা। আলোচিত মাস জুড়ে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবগুলোতে টাকা জমা পড়েছে ১৩ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা। উত্তোলন করা হয়েছে ১১ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা। ব্যক্তি হিসাব থেকে ব্যক্তি হিসাবে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে ৪ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বিতরণ হয়েছে ৪৭৮ কোটি টাকা। বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ২৪০ কোটি ৯০ লাখ টাকা। কেনাকাটার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ১২২ কোটি ৯১ লাখ টাকা। সরকারি পরিশোধ ২৮ কোটি ২৭ লাখ টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য হিসাবে লেনদেন হয়েছে ৪১৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।

২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসেসের যাত্রা শুরু হয়। এর পরপরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার বাজারের সিংহভাগই বিকাশের দখলে।

Advertisement

এসআই/এসআর/জেআইএম