দেশজুড়ে

বৃষ্টিতেই উঠে যাচ্ছে নতুন সড়কের কার্পেটিং

শরীয়তপুরের স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদফতরের (এলজিইডির) বেশির ভাগ সড়কের বেহাল দশা। বৃষ্টিতেই নতুন সড়কগুলোর কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে, সড়কের দুই পাশের ইট ভেঙে পড়ছে। তাই জেলার অধিকাংশ সড়ক নির্মাণের কিছুদিন যেতে না যেতেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। খানাখন্দে ভরা সড়কগুলোতে প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা। কোনো কোনো সড়কের আবার কার্পেটিংয়ের অস্তিত্বও বিলীন হয়ে গেছে। এতে ভেঙে পড়েছে জেলার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা।

Advertisement

শরীয়তপুরের ঠিকাদার খান এ মামুন রুবেল জানান, জেলার এলজিইডি যে সড়কগুলো করছে তার কার্পেটিং যেভাবে করা হচ্ছে তাতে বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। তার মধ্যে আগে ছিল ২৫ মিলি কার্পেটিংয়ের সঙ্গে সিলকোর্ড। আর বর্তমানে গুড়া পাথর দিয়ে ২৫ মিলি কার্পেটিং করছে। সিলকোর্ড না দেয়ায় বৃষ্টি হলেই পানি ঢুকে কার্পেটিং উঠে সড়ক নষ্ট হচ্ছে। আর এলজিইডির নিজস্ব কোনো জমি না থাকায় সড়কের পাশের মাটি কেটে সড়কে দিচ্ছে। এ কারণেই সড়ক অল্প সময়ে ভেঙ্গে পড়ছে।

শরীয়তপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদফতর কার্যালয় সূত্র জানায়, এলজিইডির আওতায় উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক রয়েছে প্রায় ১ হাজার ৩৭ কিলোমিটার।

এলজিইডি অফিস সূত্র জানায়, শরীয়তপুরের ছয় উপজেলায় ২৯৩ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ১১৭ কিলোমিটার সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আর ৪৯০ কিলোমিটার ইউনিয়ন সড়কের মধ্যে চলাচলের অনুপযোগী রয়েছে ১২৬ কিলোমিটার সড়ক। তবে এর বাস্তব চিত্র আরও করুণ।

Advertisement

স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কগুলো নির্মাণের সময় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম আর কর্মকর্তাদের সঠিক নজরদারি না থাকায় গ্রাম অঞ্চলের বেশির ভাগ সড়কে নিম্নমানের মালামাল দিয়ে তৈরি হচ্ছে। চলাচলের অনুপযোগী এসব সড়কে চলাচলের সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অনেকই প্রাণ হারাচ্ছেন, কেউ আবার হাত পা ভেঙে পঙ্গুত্ব বরণ করছে নিয়েছেন। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে শরীয়তপুরের এলজিইডির সড়কগুলো চলাচলের উপযুক্ত ও সরকারের বরাদ্দ অনুযায়ী সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন তারা।

ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর এলাকার হানিফ সরকার, বাবুল দেওয়ান জানান, সখিপুর বাজারের পূর্ব দক্ষিণ দিকে যেই সড়কটা করা হচ্ছে এটা এলজিইডির সড়ক। সড়কটির কাজের জন্য যেই সুড়কি ব্যবহার হচ্ছে তা দুই নম্বর। শুধু তাই নয় সড়কের দুইপাশে যে ইট দেয়া হচ্ছে তাও ভালো নয়। তাছাড়া বৃষ্টি হলে সড়ক ভেঙে না পড়ে, তার জন্য দুই পাশে যে মাটি দেয়া হচ্ছে, তাও সড়কের পাশে গর্ত করে কাটা হচ্ছে। তাহলে সড়ক টিকবে কি করে? ঠিকাদাররা সড়কটি করছে লাভের জন্য, জনগণের জন্য নয়।

শরীয়তপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম বাদশা মিয়া বলেন, সড়ক দিয়ে অতিরিক্ত মালামাল নিয়ে যানবাহন চলাচলের কারণে সড়কগুলো তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। চলতি বছরের মধ্যেই বেশিরভাগ সড়ক চলাচলের উপযোগী করতে ইতোমধ্যে কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আগামী জুনেই ২৫০ কিলোমিটার রাস্তার কাজ শেষ হবে। এছাড়া জাইকার অর্থায়নে ছয়টি উপজেলায় ১১টি সড়ক মেরামতের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জেলার খারাপ সড়কগুলো চলাচলের উপযুক্ত এবং ভালো অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে।

Advertisement

মো. ছগির হোসেন/আরএ/এমএস