জাতীয়

পুরো বিশ্বে একই দিনে রোজা ও ঈদ পালনের দাবি

নতুন চাঁদ দেখার ভিত্তিতে পুরো বিশ্বে চান্দ্র মাসের একই তারিখে রোজা ও ঈদ পালন করার শরীয়ত বিধান এবং ওআইসির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে মুসলিম উম্মাহ্ নামে সংগঠন।

Advertisement

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচা ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সংগঠনের পক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. এম এ কাশেম ফারুকী। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পবিত্র মাহে রমজান কোন দিন শুরু এবং ঈদ কোন তারিখে পালন হবে এ নিয়ে বিশ্বে বিতর্কের অবসান হলেও বাংলাদেশ ও পাক-ভারতের এই অঞ্চলের ৩/৪টি দেশে এখনও এ নিয়ে বিতর্কের অবসান হয়নি। সারা বিশ্বে রমজান মাস শুরু হয়ে গেলেও বাংলাদেশে তা এক বা দুইদিন পর শুরু হয়। তেমনিভাবে সারা বিশ্বে যেদিন ঈদ হচ্ছে, বাংলাদেশে সেই দিন রোজা হচ্ছে। এটি খুবই দুঃখজনক।

ইসলামী শরীয়ত তথা কুরআন-সুন্নাহ আলোকে ১৯৮৬ সালে ওআইসি মুসলিম বিশ্বের ৫৭টি দেশের স্থায়ী সদস্যদের ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

Advertisement

সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে- ‘কোন একটি দেশে নতুন চাঁদ দেখা প্রতিষ্ঠিত হলে সকল মুসলিমকে অবশ্যই সে অনুযায়ী আমল করতে হবে। নতুন চাঁদের উদয়ের স্থলের ভিন্নতা ধর্তব্য নয়, কারণ রোজা শুরু ও শেষের নির্দেশটি বিশ্বের সকলের জন্য প্রযোজ্য।’

অপর সিদ্ধান্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়, ‘নতুন চাঁদ দেখা গ্রহণ করা আবশ্যিক। তবে এ ক্ষেত্রে জ্যোতির্বিজ্ঞানের হিসাব ও পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সাহায্য নেয়া যেতে পারে। এতে মহানবী (স:) এর হাদিস ও বৈজ্ঞানিক সত্যকে যথাযথ বিবেচনায় রাখা হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আসন্ন রমজান মাসের শুরুটাও যেন ইন্দোনেশিয়া-মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, ইউরোপ, আমেরিকাসহ সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে একই তারিখে হয়। এটাই ওআইসির সিদ্ধান্ত। জ্যোতির্বিজ্ঞানের মাধ্যমে পূর্বেই উদায়স্থলের কথা জানা যায়। তারপরও নতুন চাঁদ দেখার খবরও এখন ইন্টারনেট, ফেসবুক ও মিডিয়ার মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার হয়। মোবাইলেও সহজে জানা যায়। জ্যোতির্বিজ্ঞানের মাধ্যমে নিশ্চিতভাবে নতুন চাঁদ উদয়ের আগাম খবর জানা যায়। তাই এখন আর কোন ওজর নেই।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশনে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক ‘বহস’ এ গত বছর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। আমাদের পক্ষে প্রধান মুফতি ছিলেন ওআইসি ফিক্হ একাডেমিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. সাইয়েদ আব্দুল্লাহ্ আল-মারূপ। এ পক্ষে ১৫ জন বিশিষ্ট মুফতি ও বিজ্ঞানী ছিলেন। দলপতি ছিলেন অধ্যাপক ড. এম শমশের আলী। বিপক্ষেও ১৫ জন আলেম ও বিশেষজ্ঞ ছিলেন।

Advertisement

আশ্চর্যের বিষয়, ওই বহস বা বিতর্কটি ভয়ে জনসাধারণকে দেখানো হচ্ছে না। সেটি দেখলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে যে, আমাদের এই দাবি কতটা প্রমাণভিত্তিক।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ফরজ ইবাদত সঠিকভাবে পালনের লক্ষ্যে, আসন্ন রমজান মাস থেকেই ওআইসি’র সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি। সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে আমাদের আহ্বান- ফরজ রোজা, শবে বরাত, শবে ক্বদর ও ঈদ ইত্যাদি ইবাদাত সঠিকভাবে পালনের জন্য সবাই নতুন চাঁদ দেখার জন্য কেবল হেলাল কমিটির দিকে চেয়ে না থেকে মক্কা-মদিনা তথা বৃহত্তর বিশ্বের খবর নিয়ে প্রথম দেখাকে অনুসরণ করুন।

সংগঠনের সভাপতি মুফতি সাইয়্যেদ আবদুছ ছালামের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এয়ার কমোডোর (অব:) ড. সৈয়দ জিলানী মাহবুবুর রহমান, ড. সাইয়্যেদ আব্দুল্লাহ্ আল-মারূফ আল মাদানী আল-আযহারী, ড. একে এম মাহবুবুর রহমান, অধ্যাপক আ ন ম রশীদ আহমাদ আল-মাদানী প্রমুখ।

এইউএ/জেএইচ/পিআর