ধর্ম

দান-সাদকা ‘করা-না করা’ প্রসঙ্গে বিশ্বনবি যা বললেন

রাসুলে আরাবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো সম্পদের দিকে দৃষ্টিপাত করেননি। সম্পদের প্রতি কোনো লোভ প্রিয়নবির ছিল না। তার প্রতিটি কথা, কাজ ও মৌন সম্মতিতে ছিল আল্লাহর নৈকট্য অর্জন ও তার বিধান বাস্তবায়ন। আল্লাহর পথে খরচ করাও ছিল আল্লাহর নির্দেশ। সে নির্দেশ পালন করা ও না করা প্রসঙ্গে প্রিয়নবি ঘোষণা করেছেন দানে উপকারিতা ও দান থেকে বিরত থাকার অপকারিতা।

Advertisement

>> হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘প্রতিদিন আসমান থেকে দুই জন ফেরেশতা (জমিনে) অবতরণ করেন। তাদের মধ্যে একজন (দানকারীর জন্য) দোয়া করে-

‘হে আল্লাহ! যে (তোমার পথে) ব্যয় করে; তাকে বিনিময় দান কর।’

আর দ্বিতীয় ফেরেশতা (দান থেকে বিরত থাকা ব্যক্তির জন্য) দোয়া (অভিশাপ) করে-

Advertisement

‘হে আল্লাহ! যে (তোমার পথে) সম্পদ ব্যয় করা থেকে বিরত থাকে; তার অর্থ সম্পদ ধ্বংস করে দাও।’ (মেশকাত)

>> হজরত আবু ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, প্রিয়নবি ইরশাদ করেছেন, ‘হে আদম সন্তান! তোমার কাছে প্রয়োজন অতিরিক্ত যে সম্পদ আছে তা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ব্যয় কর; এ কাজ তোমার জন্য উত্তম। আর যদি তুমি (সম্পদ) ধরে রাখ; তবে তা হবে তোমার জন্য মন্দ।’ (মুসলিম)

>> হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু আরো বর্ণনা করেন, ‘প্রিয়নবি ইরশাদ করেছেন, ‘যদি আমার কাছে ওহুদ পাহাড় সমান স্বর্ণ থাকতো; তবে আমার কাছে এ বিষয় অত্যন্ত অপছন্দনীয় যে, ৩ দিনের পর্যন্ত সেই স্বর্ণের কিছুমাত্র আমার কাছে জমা থাকা। হ্যাঁ যদি কিছু ঋণ আদায়ের প্রয়োজন হয় তবে তা থাকতে পারে।

অর্থাৎ প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে ওহুদ পাহাড় পরিমাণ সম্পদ থাকলেও তা তিনি ৩ দিনের মধ্যে গরিব-অসহায়দের মাঝে বিতরণ করে দিতেন। কোনো সম্পদ তার কাছে মজুদ থাকুক তিনি তা পছন্দ করতেন না।

Advertisement

মুসলিম জাতি যতদিন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ অনুসরণ করেছে; ততদিন তাদের মাথায় ছিল বাদশাহীর রাজমুকুট। যখনই মুসলিম জাতি তা থেকে সরে এসেছে তারপর থেকেই শুরু হয়েছে অধঃপতন ও ধ্বংস।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাতের অনুসরণের কারণেই সম্পদের বিশাল ধন-ভাণ্ডারের চাবিকাঠি তাদের হাতে ছিল। সুন্নতের খেলাপ কাজই মুসলমানদের সে সম্পদ থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে।

মুসলিম উম্মাহর উচিত, প্রিয়নবির ঘোষণা অনুযায়ী দান-সাদকা করা। দান-সাদকায় কুরআনের বিধি-বিধান বাস্তবায়ন এবং নবির আদর্শ মোতাবেক অসহায়দের মাঝে অকাতরে বিলিয়ে দেয়া।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক দান-সাদকার করে ঘোষিত ফজিলত লাভ করার পাশাপাশি তা থেকে বিরত থাকার ভয়াবহ পরিণাম থেকে হেফাজত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস