চীনের দুই প্রতিষ্ঠান সেনজেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ কনসোর্টিয়াম ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত বিনিয়োগকারী হওয়ায় দেশের শেয়ারবাজারের জন্য নতুন মাইলফলক সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ ও শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা।
Advertisement
তারা বলছেন, সাংহাই ও সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ শুধু এশিয়ার নয় বিশ্বের নামকরা দুটি শেয়ারবাজার। এমন দুই প্রতিষ্ঠান ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারী হওয়ার দেশের শেয়ারবাজারের জন্য বিরাট সুখবর। প্রতিষ্ঠান দুটি কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে আসার পাশাপাশি চীনের অভিজ্ঞতা ও কৌশল এবং চীনের কোম্পানি ও বিনিয়োগ নিয়ে আসবে। সুতরাং শেয়ারবাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়াবে। বিশেষ করে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের প্রতি আকৃষ্ট হবেন।
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত বিএসইসির কমিশন সভায় চীনের দুই প্রতিষ্ঠান সেনজেন ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ কনসোর্টিয়ামের অনুমোদন দেয়া হয়। চীনা কনসোর্টিয়ামটি ডিএসইর ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ার ২১ টাকা দিয়ে কিনবে।
এ বিষয়ে বিএসইসি জানিয়েছে, চীনা কনসোর্টিয়ামের ‘শেয়ার ক্রয় চুক্তিপত্র’ কিছু শর্ত পরিপালন সাপেক্ষে ডিএসইর ১০ টাকা অবিহিত মূল্যের ৪৫ কোটি ৯ লাখ ৪৪ হাজার ১২৫টি শেয়ার প্রতিটি ২১ টাকা মূল্যে অনুমোদন করা হয়েছে।
Advertisement
শর্তগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- কৌশলগত বিনিয়োগকারীর সব কার্যক্রম সিকিউরিটিজ আইন ও দেশের প্রযোজ্য অন্যান্য আইনসহ এক্সচেঞ্জেস ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন ২০১৩ এবং ডিএসই’র ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন স্কিম অনুযায়ী পরিপালন করতে হবে। চুক্তির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া চুক্তি স্বাক্ষরের পরবর্তী এক বছরের মধ্যে সম্পন্ন করে কমিশনকে অবহিত করতে হবে। কমিশনের পূর্ব অনুমোদন ব্যতীত চুক্তির শর্তাবলী ও আনুষাঙ্গিক অন্যান্য বিষয় পরিবর্তন করা যাবে না।
চীনের দুই প্রতিষ্ঠানকে ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারী করতে বিএসইসির অনুমোদন দেয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, এটা বাজারের জন্য মঙ্গলজনক। চীনের স্টক এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠিত এক্সচেঞ্জ। আন্তর্জাতিক যেসব স্টক এক্সচেঞ্জ রয়েছে তার মধ্যে সাংহাই অন্যতম।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, চীনের কনসোর্টিয়াম ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারী হলে বিদেশিরা আকৃষ্ট হবেন। বিদেশিদের আস্থা বাড়বে। ফলে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। পাশাপাশি বিদেশি কোম্পানি তালিকাভুক্ত হওয়ার সুযোগও সৃষ্টি হবে।
ডিএসইর সাবেক সভাপতি ও পরিচালক শাকিল রিজভী জাগো নিউজকে বলেন, এটা বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের জন্য একটি নতুন মাইলফলক। আমরা কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে এমন প্রতিষ্ঠান খুঁজে পেয়েছি, যা বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ প্রতিষ্ঠানের একটি। ফলে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা আসবে।
Advertisement
তিনি বলেন, চীনের প্রতিষ্ঠান কৌশলগত বিনিয়োগকারী হওয়ার কারণে আস্থা বাড়বে। বিদেশিদের অংশগ্রহণ বাড়বে। বিদেশি কোম্পানি দেশের বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। শেয়ারবাজারের ভিত্তি শক্ত হবে। শুধু শেয়ারবাজার বাংলাদেশের অন্যান্য সেক্টরেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
ডিএসইর পরিচালক শরিফ আতাউর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, এটা আমাদের জন্য বিরাট সুখবর। দীর্ঘ মেয়াদে আমাদের শেয়ারবাজারে বিশাল ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাজারের ওপর বিনয়োগকারী আস্থা বাড়বে। এক্ষেত্রে স্থানীয়দের থেকে বিদেশিদের আস্থা বেশি বাড়বে। চীনের দুই প্রতিষ্ঠানকে ডিএসইর কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে অনুমোদন দিয়ে বিএসইসি যুগান্তকারী কাজ করেছে।
এমএএস/এমআরএম/পিআর