জাতীয়

‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মানবাধিকার চর্চায় ঝুঁকি সৃষ্টি করবে’

প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন শুধু মত প্রকাশের ক্ষেত্রেই নয়, গণমাধ্যমকর্মীদের পাশাপাশি সব নাগরিকের মৌলিক মানবাধিকার চর্চার ক্ষেত্রে অধিকতর নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি সৃষ্টি করবে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বুধবার এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এ কথা বলেন।

Advertisement

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস (৩ মে) উপলক্ষে দেয়া এ বিবৃতিতে দেশের গণমাধ্যমকর্মীরা যাতে মুক্ত পরিবেশে স্বাধীনভাবে বাক-স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার সাংবিধানিক অধিকার চর্চা অব্যাহত রাখতে পারে সে জন্য প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৮ ধারা পুনর্বিবেচনা ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।

বিশেষ করে খসড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে অগ্রসর হওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ‘মন্ত্রিসভার অনুমোদিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সকল নাগরিকের বাক-স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতের সাংবিধানিক অঙ্গীকার ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্হী।’ তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৮ ধারাসমূহ প্রয়োজনীয় সংশোধন ছাড়া প্রণীত হলে সার্বিকভাবে দেশে গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চা ও গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের সম্ভাবনা ধুলিস্যাৎ হবার ঝুঁকি সৃষ্টি করবে।’

Advertisement

খসড়াটি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের পক্ষ থেকে ব্যাপক উদ্বেগ প্রকাশ সত্ত্বেও ধারাগুলো সংশোধন না করেই সংসদে উত্থাপিত হওয়াকে হতাশাজনক উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এ আইনের ফলে বিভিন্ন প্রকার অনিয়ম দুর্নীতিসহ ক্ষমতার অপব্যবহারের তথ্য প্রকাশ যেমন অসম্ভব হয়ে পড়বে, তেমনি এসব অপরাধের সুরক্ষার মাধ্যমে অধিকতর বিস্তৃতি ঘটাবে।’

তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন নিশ্চিতের যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে প্রস্তাবিত আইনটি তাতে বাধা হিসেবে কাজ করবে বলে উল্লেখ করেছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক। তিনি বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টসমূহ অর্জনে সরকারের পাশাপাশি জনগণ, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমের ভূমিকা অপরিসীম। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমসহ সব নাগরিক যাতে সব ধরনের ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে সরকারের সহায়ক শক্তি হিসেবে স্বাধীনভাবে তাদের দায়িত্ব পালন ও বাধাহীন মতামত প্রকাশ করতে পারে তার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।’

এ পর্যায়ে খসড়া আইনটির সংশোধনের দায়ভার সংসদীয় কমিটির ওপর ন্যস্ত হওয়ার কারণে কমিটিকে অবশ্যই ইতিবাচক ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে বলেও উল্লেখ করে টিআইবি।

আরএমএম/আরএস/পিআর

Advertisement