রাজধানীর মিরপুরে দারুস সালামের সি-টাইপ সরকারি কোয়ার্টার থেকে উদ্ধার হওয়া মা ও দুই মেয়ের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তাদের শরীরে ধারালো অস্ত্রের গুরুতর জখম পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের ময়নাতদন্ত হয়।
Advertisement
হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সেলিম রেজা জানান, নিহত মা ও তার দুই মেয়ের শরীরে ধারালো অস্ত্রের গুরুতর জখম রয়েছে। ছুরিকাঘাতে মৃত্যু হয়েছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।
মৃত্যুর আগে তাদেরকে কোনোকিছু খাওয়ানো হয়েছিলো কি না তা নিশ্চিত হতে ভিসেরার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে পুলিশ খবর পেয়ে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর দারুসসালাম থানার পাইকপাড়া সি-টাইপ সরকারি কোয়ার্টারের ১৩৪ নং ভবনের চতুর্থ তলা থেকে মা ও দুই মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
Advertisement
নিহত মা জেসমিন আক্তার (৩৫) কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরে কোষাধ্যক্ষ পদে চাকরি করছিলেন। স্বামী হাসিবুল ইসলাম জাতীয় সংসদের সহকারী লেজিসলেটিভ ড্রাফ্সম্যান হিসেবে কর্মরত আছেন। হাসিবুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড়ের ভজনপুর গ্রামে, জেসমিনের বাবার বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ে।
নিহত দুই মেয়ের নাম হাসিবা তাহসিন হিমি (৮) ও আদিবা তাহসিন হানি (৪)। হাসিবা মডেল একাডেমিতে ক্লাশ টুতে পড়তো।
পুলিশ ধারণা করছে, অবসাদগ্রস্ত হয়ে দুই মেয়েকে নৃশংসভাবে খুন করে আত্মহত্যা করেছেন মা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) শেখ নাজমুল ইসলাম, মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার মাসুদ আহমদ, দারুস সালাম জোনের সিনিয়র এসি জাহাঙ্গীর আলম ও দারুস সালাম থানার ওসি সেলিমুজ্জামান।
Advertisement
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ বিভাগ) শেখ নাজমুল ইসলাম, সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিকভাবে ঘটনার মোটিভ অনুযায়ী, মা জেসমিন আক্তার দুই শিশু কন্যাকে হত্যার পর নিজেও আত্মহত্যা করেছেন। রুমের দরজা ভিতর থেকে আটকানো ছিল। তবে এ ঘটনার পেছনে অন্য কোনও কারণ বা অন্য কারো যোগসাজশ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্তে জানা যাবে আসল কারণ।
জেইউ/এমএমজেড/পিআর