দেশজুড়ে

হাজেরা খাতুনের বয়স এখন ৭০ বছর, অথচ!

হাজেরা খাতুন। বয়স ৭২ পেরিয়েছে। জন্মের আড়াই বছর পর থেকেই তিনি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। শুরুর দিকে এক চোখে কিছুটা দেখতে পেলেও ধীরে ধীরে সেই চোখও পুরোপুরি দৃষ্টিহীন হয়ে পড়েছে। তখন থেকেই ঘরে শুয়ে বসেই কাটে তার দিনকাল। দৃষ্টিহীনতার পাশাপাশি বয়সের ভারেও ন্যুয়ে পড়েছেন অভিভাবকহীন হাজেরা খাতুন।

Advertisement

প্রায় সত্তর বছর ধরে দৃষ্টিহীন হাজেরা বেগমের কপালে স্বাধীনতার ৪৬ বছরেও জোটেনি সরকারি সহায়তা প্রতিবন্ধী ভাতার একটি কার্ড। কোনো ধরনের সরকারি সহায়তা ছাড়াই দিন পার করছেন দৃষ্টিহীন হাজেরা খাতুন।

পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের নতুনপাড়া এলাকায় তার বসবাস। স্বামী-সন্তানহীন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হাজেরা খাতুন একমাত্র ভাইয়ের কাছেই বড় হয়েছে। কয়েক বছর আগে ভাই মারা গেলে ভাতিজির ঘরেই ঠিকানা হয় হাজেরা খাতুনের।

সম্প্রতি আমতলী ইউনিয়নের নতুনপাড়া এলাকায় তার ভাইয়ের মেয়ের বাড়িতে কথা হয় হাজেরা খাতুন ও তার মা শতোর্ধ্ব কদর নেছার সঙ্গে।

Advertisement

প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকারি সহায়তা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দৃষ্টিহীন হাজেরা খাতুনের মা কদর নেছা বলেন, আমরা গরিব। তাই চেয়ারম্যান-মেম্বাররা আমাদের খবর রাখে না। শুরুর দিকে ওর বাবা বেঁচে থাকতে সাধ্যমতো মেয়েকে ডাক্তার-কবিরাজ দেখালেও কোনো লাভ হয়নি। ওর বাবা মারা যাওয়ার পরে আর্থিক অনটনে ডাক্তার-কবিরাজ দেখাতে পারিনি।

তিনি বলেন, বছরের পর বছর ধরে সরকারি সহায়তার জন্য চেয়ারম্যান-মেম্বাররা আশ্বাসই দিয়ে গেছেন। কিন্তু দৃষ্টিহীন মেয়ের জন্য প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড দেননি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আমতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল গনি বলেন, প্রতিবন্ধীদের নতুন তালিকায় হাজেরা খাতুনকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

মাটিরাঙা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিভীষণ কান্তি দাশ এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, এ বিষয়ে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তাকে সরকারি সবধরনের সুযোগ-সুবিধার আওতায় আনা হবে।

Advertisement

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এমএএস/আরআইপি