আন্তর্জাতিক

হোয়াইট হাউসে ম্যাক্রোঁর লাগানো গাছ উধাও

ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্যে একটি উপহার নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই উপহারটি ছিল একটি গাছের চারা। হোয়াইট হাউসের কাছেই সেটি লাগানো হয়।

Advertisement

ট্রাম্প এবং ম্যাক্রোঁ দু’জনেই খুব ঘটা করে গাছটি লাগিয়েছিলেন। সে সময় তাদের স্ত্রীরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু লাগানোর কয়েকদিন পরেই গাছের চারাটি সেখান থেকে উধাও হয়ে গেছে।

এই গাছটি জন্মেছিল উত্তর-পূর্ব ফ্রান্সের এমন একটি জায়গায় যেখানে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের লড়াই হয়েছিল। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মধ্যে যে গভীর সম্পর্ক সেটি মনে করিয়ে দিতেই তিনি এই গাছের চারাটিকে উপহার হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন।

ম্যাক্রোঁ এক টুইট বার্তায় বলেন, ১শ’ বছর আগে মার্কিন সৈন্যরা ফ্রান্সের বিলুতে যুদ্ধ করেছিল আমাদের স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য। ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্যে উপহার হিসেবে নিয়ে যাওয়া আমার এই ওক গাছটি হোয়াইট হাউসে আমাদের সম্পর্কের একটি স্মৃতি হয়ে থাকবে।

Advertisement

কিন্তু বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক ফটোগ্রাফার শনিবার যে জায়গাটিতে গাছের চারাটি লাগানো হয়েছিল সেখানকার একটি ছবি তুলেছেন। কিন্তু গাছটি সেখান থেকে উধাও হয়ে গেছে। সেখানে শুধু এক চিলতে হলুদ ঘাস দেখা যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ফরাসী রাষ্ট্রদূত পরে এক টুইট বার্তায় বলেন, রোগ-সংক্রমণ প্রতিরোধকল্পে গাছের চারাটিকে আলাদা করে রাখা হয়েছে।

গাছটি ইউরোপীয় সেসিল ওক। ব্যাটল অফ বিলু উডে তার জন্ম। সেখানে ১৯১৮ সালে বড় রকমের একটি যুদ্ধ হয়েছিল। প্যারিসের উত্তর-পূর্বে বিলুর যুদ্ধে নিহত হয়েছিল প্রায় দুই হাজার মার্কিন সেনা।

গাছের চারাটিকে ঘিরে যে রহস্য সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোন ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি এখনও। কিন্তু চারাটি উধাও হয়ে যাওয়ার পর থেকে অনলাইনে তা নিয়ে নানা রকম জল্পন-কল্পনা শুরু হয়ে যায়।

Advertisement

বাগান করা-সংক্রান্ত একটি ওয়েবসাইটকে উদ্ধৃত করে ফরাসি একটি রেডিও নেটওয়ার্ক বলছে, ওক গাছ লাগানোর সবচেয়ে ভালো সময় হেমন্ত। এর ফলে গাছটির শেকড় মাটির খুব গভীরে যেতে পারে। ফলে পরের গ্রীষ্মে যে পানির অভাব হয় সেটি সে মোকাবেলা করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফরাসী রাষ্ট্রদূত বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থেকে যখন কোন গাছপালা বা প্রাণী নিয়ে যাওয়া হয় তখন সেটিকে আলাদা করে রাখা বাধ্যতামূলক। গাছটিকে পরে আবার লাগানো হবে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, গাছের শেকড়গুলো প্লাস্টিক দিয়ে মুড়িয়ে রাখা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ও সীমান্ত রক্ষা ওয়েবসাইট বলছে, বিদেশি কোন গাছ নিয়ে আসতে হলে সেটি আগেই পরীক্ষা করে দেখতে হয়। এই খবরটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই এই রহস্য নিয়ে কথাবার্তা বলতে শুরু করেন। শাবল হাতে দুই প্রেসিডেন্টের ছবিও ভাইরাল হয়। অনেকেই আশা করছেন যে গাছটি হয়তো আগামী অক্টোবর মাসে আবার হোয়াইট হাউসের বাগানে ফিরে আসতে পারে।

টিটিএন/এমএস