পবিত্র শবে-বরাত, বুদ্ধ পূর্ণিমা, মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটির কারণে ৭ দিনের লম্বা ছুটিতে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে হাজার হাজার বাংলাদেশি পাসপোর্টযাত্রী ভারতে যাচ্ছেন। অন্যান্য সময় প্রতিদিন এ চেকপোস্ট দিয়ে ২ থেকে আড়াই হাজার যাত্রী ভারতে গেলেও শুক্র ও শনিবার গেছেন প্রায় ১১ হাজার পাসপোর্টযাত্রী। অতিরিক্ত পাসপোর্ট যাত্রী আসায় চেকপোস্ট এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে যাত্রীজট।
Advertisement
এছাড়া ভারতগামী যাত্রীরা বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে ভালোভাবে পার হলেও বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন দু’দেশের নো-ম্যান্স ল্যান্ড এলাকায়। যাত্রীরা অভিযোগ করে বলছেন, ভারতে প্রবেশ গেটে ধীরগতির কারণে তারা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তাছাড়া এখানে রয়েছে একটি দালাল চক্র। এ চক্রের সদস্যরা যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আগে পার করে দেয়ার ব্যবস্থা করে দেয়ায় সাধারণ যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।
জানা গেছে, সরকারি ছুটির বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী ২৭ ও ২৮ এপ্রিল শুক্র-শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। ২৯ এপ্রিল রোববার বুদ্ধ পূর্ণিমার ছুটি। ১ মে মঙ্গলবার মে দিবস এবং পরদিন ২ মে বুধবার শবে-বরাতের ছুটি। ৪ ও ৫ মে শুক্র-শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি। মাঝখানে ৩০ এপ্রিল সোমবার একদিন এবং ৩ মে বৃহস্পতিবার অফিস খোলা। এই দু’দিন সমন্বয় করা গেলে সব মিলিয়ে টানা ছুটি মিলছে সরকারি চাকরিজীবীদের। আর কেউ যদি শুধু ৩০ এপ্রিলের ছুটি নিতে পারেন, তাহলে তিনি ছয় দিন এবং কেউ যদি শুধু ৩ মের ছুটি পান, তাহলে তিনি হাতে পাবেন পাঁচ দিন।
আর এই এক সপ্তাহের টানা ছুটিতে ভারতে যাওয়ার ভিড়ে সীমান্ত সরগরম। আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করা, ভ্রমণ ও ডাক্তার দেখানো কোনোভাবেই হাতছাড়া করতে নারাজ বাংলাদেশিরা। অনেকে যাচ্ছেন কলকাতার বাইরেও। চিকিৎসার জন্য এমনিতেই বহু বাংলাদেশি কলকাতা যান।
Advertisement
বেনাপোল ইমিগ্রেশন সূত্র জানায়, প্রতিদিনই পাসপোর্টযাত্রীর চাপ বাড়তে থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের বেনাপোল ইমিগ্রেশন ১৬টি ডেস্কে পাসপোর্টযাত্রীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে দ্রুত তাদের পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে দিচ্ছে। বেনাপোল ইমিগ্রেশনে কোনো জটলার সৃষ্টি না হলেও ভারতের ইমিগ্রেশনের ধীর গতির কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
ঢাকার পাসপোর্টযাত্রী অনিমা ঘোষ বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকের ভ্রমণ কর কেটে আমাদের ইমিগ্রেশনের কাজ করতে কোনো কষ্ট হয়নি, খুব দ্রুত কাজ করেছি। কিন্তু ভারতের মধ্যে প্রবেশের অপেক্ষায় ৪ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে ইমিগ্রেশনের বাঁশের খাচায় আটকা পড়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। কখন পার হবো ভগমানই জানে।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ওসি তরিকুল ইসলাম জানান, লম্বা ছুটি থাকায় অন্যান্য দিনের তুলনায় গত দুদিন এ চেকপোস্ট দিয়ে দ্বিগুণ যাত্রী ভারতে গেছেন। বেনাপোল ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে সমস্যা না হলেও ভারতীয় সাইডে একটু সমস্যা হচ্ছে।
জামাল হোসেন/এফএ/জেআইএম
Advertisement