ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দর কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি চেয়েছেন গুজরাটের ভাবনগর জেলার প্রায় পাঁচ হাজার কৃষক। রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ সংস্থা ওই কৃষকদের প্রায় ৪শ বিঘা চাষের জমি দখল করতে চাইছে। তার প্রতিবাদেই স্বেচ্ছামৃত্যু বরণ করতে চাইছেন কৃষকরা।
Advertisement
ঘোঘা এলাকার ১২টি গ্রামের ওই জমি প্রায় ২০ বছর আগে অধিগ্রহণ করেছিল সরকার। কিন্তু কৃষকদের বক্তব্য সেই সময়ে যে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছিল, তা বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম। অধিগ্রহণের এত বছর পরে জমির দখল নেওয়াটাও বেআইনি বলে কৃষকদের দাবী।
বোড়ি গ্রামের বাসিন্দা কৃষক নরেন্দ্র সিং গোহিল বিবিসিকে বলেন, ১৯৯৭ সালে সরকার যখন জমি অধিগ্রহণ করেছিল, তখন মাত্র ৪০ হাজার টাকা করে দিয়েছিল। ওই সময় তারা জমির দখল নেয়নি। এত বছর পরে সেই জমি ছেড়ে দিতে বলা হচ্ছে।
জমির দাম এখন বিঘা প্রতি প্রায় ২১ লাখ টাকা। অথচ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে সরকার জমি নিয়ে নেবে এমন যুক্তি মানতে চান না কৃষকরা।
Advertisement
সরকার অবশ্য বলছে, একবার যে জমির জন্য ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়ে গেছে, অধিগ্রহণের সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়ে গেছে তার জন্য নতুন করে ক্ষতিপূরণ দেয়া যায় না।
উপ-মুখ্যমন্ত্রী নীতিন প্যাটেল বিবিসিকে জানান, কৃষকদের ১৯৯৭ সালে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। একই জমির জন্য তারা যদি নতুন দাম চায়, সেটা তো দেওয়া সম্ভব না।
তারপরেই কৃষকরা আন্দোলনে নেমেছেন। তারা বলছেন, জমি দিতে পারেন তারা। তবে নতুন করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে সরকারকে।
জামখারসিয়া গ্রামের কৃষক প্রভিন সিং গোহিল বলেন, জানি না কী করে আমাদের পূর্বপুরুষরা এই জমি অত সামান্য ক্ষতিপূরণ নিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু আমরা তো অন্য কোনও কাজ জানি না। এই জমি চলে গেলে আমরা খাব কি? আত্মহত্যা না করে উপায় কি?
Advertisement
প্রভিন সিং গোহিলের ১৫ বিঘা জমি রয়েছে। তাতে গম, মটর, জোয়ার চাষ হয়। এছাড়াও পশুপালন করে তার পরিবার। এগুলো থেকেই বছরে লাখ তিনেক টাকা আয় তাদের।
মেলখার গ্রামের বাসিন্দা যোগরাজ সিং সর্বাইয়া বলেন, তুলা, বাদাম, জোয়ার, বাজরা, ভুট্টা এসব চাষ করি আমরা। লাখ চারেক টাকা আয় হয়। এখন যদি সরকার জমিটা নিয়ে নেয়, তাহলে বাঁচবো কী করে?
উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবীতেই আন্দোলনে নেমেছেন ওই গ্রামের কৃষকরা। ১২ টি গ্রামের ৫ হাজার ২৫৯ জন কৃষক জেলা প্রশাসকের দপ্তরে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জমা দিয়েছেন।
টিটিএন/এমএস