জাতীয়

শব্দ দূষণ রোধে প্রয়োজন আইনের কঠোর প্রয়োগ

সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি শব্দ দূষণের কবলে রাজধানীসহ সারা দেশ। বর্তমানে শব্দ দূষণ একটি মারাত্মক পরিবেশগত সমস্যা হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। বিশেষ করে শব্দ দূষণের কারণে আগামী প্রজন্ম মানসিক ও শারীরিকভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

Advertisement

‘শব্দ দূষণ রোধে সচেতনতার বিকল্প নেই, প্রয়োজন আইনের কঠোর প্রয়োগ’- এমন মত দিয়েছেন বিশেজ্ঞরা।

বুধবার পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) কার্যালয়ে আয়োজিত ‘ক্রমাগত শব্দ দূষণের মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি প্রভাব ও করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন বক্তারা। আলোচকরা বলেন, শব্দ দূষণের ফলে শ্রবণশক্তি হ্রাস পাওয়া, বধিরতা, হৃদরোগ, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা বিঘ্নিত হওয়া, ঘুমের ব্যাঘাতসহ নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের আওতায় শব্দ দূষণ বিধিমালা বলবৎ রয়েছে। শব্দ দূষণের মাত্রা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এ পরিস্থিতি থেকে জাতিকে মুক্ত করার জন্য প্রয়োজন আশু পদক্ষেপ। সেক্ষেত্রে মানুষকে সচেতন করতে হবে পাশাপাশি শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে আইনের কঠোর প্রয়োগও করতে হবে।

পবা’র সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান বলেন, শহর এলাকায় শব্দ দূষণের প্রকোপ গ্রামাঞ্চলের চেয়ে অনেক বেশি। ঘরের বাইরে, রাস্তায় বা কর্মস্থলেই নয়, ঘরে ব্যবহৃত আধুনিক যন্ত্রপাতি যেমন ভ্যাকুয়াম ক্লিনার, ফুড ব্লেন্ডার ও গ্রাইন্ডার, পাখা থেকেও বিরক্তিকর শব্দ বের হয়।

Advertisement

সভাপতির বক্ত্যবে পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান শব্দ দূষণ রোধে পরিবেশ অধিদফতরের সঙ্গে সমন্নয় করে সুনির্দিষ্ট তারিখসহ একটি রোডম্যাপ প্রণয়নের জন্য সুপারিশ করেন।

স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান এবং পবার সম্পাদক ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, উচ্চ শব্দ শিশু, গর্ভবতী মা এবং হৃদরোগীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে। আকস্মিক উচ্চ শব্দ মানবদেহে রক্তচাপ ও হৃদকম্পন বাড়িয়ে দেয়, মাংসপেশির সংকোচন করে এবং পরিপাকে বিঘ্ন ঘটায়। এ সময় আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এসবের মধ্যে আছে- শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা, জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চালানো, পরিবেশ অধিদফতর, স্থানীয় সরকার, নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ওপর ন্যস্ত আইনি দায়িত্ব ও কর্তব্য আন্তরিকতা, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করা এবং বিদ্যমান আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা।

গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন- নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসফ)-এর সাধারণ সম্পাদক মো. তৈয়ব আলী, পবা’র সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বল, প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ,ব্যারিস্টার নিশাত মাহমুদ প্রমুখ।

এএস/এমএআর/এমএস

Advertisement