জাতীয়

শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে আবেদন করলেই আর্থিক সহায়তা

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ‘শ্রমিক কল্যাণ’ তহবিলে এখন রয়েছে প্রায় পৌনে ৩০০ কোটি টাকা। এ তহবিলের টাকা প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের কল্যাণে খরচ করা হচ্ছে। তাই যেসব শ্রমিক এ তহবিলের আওতায় সহায়তা পাওয়ার যোগ্য তারা নির্ধারিত ফরমে আবেদন করলেই তাদের সহায়তা করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক।

Advertisement

বুধবার সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রীর দফতরে গ্রামীণফোন কর্তৃক তহবিলে ২৩ কোটি ৬৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন। গ্রামীণফোনের কিউ এম সাহেদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গ্রামীণফোনে লভ্যাংশের নির্দিষ্ট অংশ ২৩ কোটি ৬৫ লাখ ৯০ হাজার টাকার চেক প্রতিমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন।

এ সময় প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, গ্রামীণফোন নিয়মিতভাবে এ তহবিলে টাকা জমা দেয়। এ বছরও তারা প্রায় ২৪ কোটি টাকা জমা দিয়েছে। আমাদের এ ফান্ডে এখন প্রায় পৌনে ৩০০ কোটি টাকার মতো জমা রয়েছে। এ ফান্ডের টাকা শুধু প্রাতিষ্ঠানিকই নয়, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে যেসব শ্রমিকরা কাজ করে তাদের কল্যাণেও ব্যয় করি।

তিনি বলেন, কোনো শ্রমিকের সন্তানের সাধারণ শিক্ষার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা দেয়া হয়। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে মেডিকেল কলেজ, কৃষি, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সরকারি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি, শিক্ষা উপকরণ ও অন্যান্য ব্যয় নির্বাহের জন্য তিন লাখ টাকা দেয়া হয়। কোনো অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকও যদি মারা যায়, তাহলে তার পরিবারের পাশে আমরা দাঁড়াই। ওই পরিবারকে আমরা ২ লাখ টাকা সাহায্য করি। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত মহিলা শ্রমিকের মাতৃত্ব কল্যাণে দেয়া হয় ২৫ হাজার টাকা। দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসার জন্য এক লাখ টাকা পর্যন্ত সহায়তা করি।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ফরম দেয়া আছে, সেখান থেকে ফরম নিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ আবেদন করছে। যে কোনো শ্রমিক; কৃষি শ্রমিক, কল-কারখানার শ্রমিক, রিকশা শ্রমিক-তারা যদি তাদের সন্তানদের জন্য আবেদন করে তাহলে আমরা তাদেরকে সহায়তা করছি। একই সঙ্গে, যারা পোশাক শিল্পে কাজ করে তাদের জন্য আলাদা ফান্ড আছে। গার্মেন্ট শ্রমিকরাও এ ফান্ড থেকে সহায়তা নিতে পারেন। তারা যদি নিজেরা অসুস্থ হয়, দুর্ঘটনায় জখম হয় বা মারা যায় কিংবা সন্তানদের লেখাপড়ার জন্য সহায়তা পাওয়ার যোগ্য হন, তাহলে তারাও আবেদন করতে পারবেন। যেসব শ্রমিক সমস্যায় রয়েছেন তাদেরকে অর্থ সহায়তার জন্য আবেদন করার আহ্বান জানান তিনি।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান সরকার শ্রমিকদের কল্যাণে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। নারায়ণগঞ্জে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারি (পিপিপি) প্রকল্পের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটা উন্নতমানের হাসপাতাল নির্মাণ করছি। ওই হাসপাতালের ৩০০ শয্যার মধ্যে ১০০টি শুধু শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ থাকবে। বাংলাদেশের যে কোনো শ্রমিক অসুস্থ হলে নামমাত্র মূল্যে সেখানে তাদের চিকিৎসা দেয়া হবে।

এ সময় তিনি বলেন, আমি আহ্বান জানাবো যারা বাংলাদেশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালান এবং এ আইনের আওতায় পরেন তারা অবশ্যই সঠিক পরিমাণে এ তহবিলে অর্থ প্রদান করবেন।

এ তহবিলের অর্থের উৎসের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রম আইন অনুযায়ী কোম্পানির মালিক বছরে তার নিট মুনাফার ৫ শতাংশ শ্রমিক কল্যাণে ব্যয় করে। এ শতাংশ অর্থের দশ ভাগের আট ভাগ নিজের প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বিতরণ করে। এক ভাগ ওই প্রতিষ্ঠানের কল্যাণ ফান্ডে জমা রাখে। আর বাকি এক ভাগ শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এ তহবিলে জমা দেয়।

Advertisement

এমইউএইচ/এসআর/জেআইএম