দেশজুড়ে

কুড়িগ্রামের আলু যাচ্ছে রাশিয়া-মালয়েশিয়া

স্বল্প পরিসরে কুড়িগ্রামের আলু বিদেশে রফতানি হওয়ায় আলুর বাজারে চাঙাভাব ফিরে এসেছে। ক্রমাগত লোকসানের মুখে পড়তে থাকা ব্যবসায়ীদের মুখে নতুন করে হাসি ফুটে উঠেছে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বর্তমানে মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্গা, রাশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশে আলু রফতানি হচ্ছে। ফলে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষক, কৃষি শ্রমিক, ব্যবসায়ী ও আলু পরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তবে রফতানির উদ্যোগ বাড়িয়ে আরও কয়েকটি দেশে আলু রফতানির হলে চাষিরা লাভবান হবেন বলে জানিয়েছেন রফতানিকারক ও কৃষি কর্মকর্তারা।

Advertisement

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় এবার ৭ হাজার ২৬০ হেক্টর আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। অর্জিত হয়েছে ৭ হাজার ২৯১ হেক্টর। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩১ হেক্টর বেশি।

আলু চাষিরা জানান, গত মৌসুমে আলুতে লোকসান হওয়ার পর নতুন আশায় সরকারি-বেসরকারিভাবে ঋণ করে অনেকেই আলু চাষে এগিয়ে আসে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আশানুরুপ ফলনও হয়। এবছর ক্রেতার সংকটে মৌসুমের শুরুতে আশঙ্কাজনকহারে আলুর বাজার পড়ে গিয়েছিল। এমন কী ক্রেতার অভাবে জমি থেকে আলু তুলতে পারছিলেন না চাষিরা। প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল জাতভেদে ৬-৭ টাকা। এ অবস্থায় ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়ে আলু চাষিরা। কিন্তু দুই সপ্তাহ ধরে বিদেশে আলু রফতানি বেড়ে যাওয়ায় ক্রমেই আলুর মূল্য বাড়ছে। এখন প্রতি কেজিতে ২-৩ টাকা বেড়েছে। অপরদিকে রফতানির জন্য আলু প্রক্রিয়াজাতকরণের নানা ধাপে বেশ কিছু শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। এতে লাভবান হচ্ছে চাষি ও কৃষি শ্রমিকরা।

আলু রফতানিকারক আরোয়া এগ্রো ইন্টারন্যাশনালের মার্কেটিং ম্যানেজার নুরে আলম জানান, বর্তমানে অল্প পরিসরে শ্রীলঙ্কা, মালেয়শিয়ায় ও রাশিয়ায় আলু রফতানি করা হচ্ছে। যে অর্ডার আছে তাতে নিজস্ব জমিতে উৎপাদিত আলু ছাড়াও কিছু আলু কিনছেন তারা। এতে লাভবান হচ্ছে স্থানীয় কৃষকরা। পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আলু বাছাই, গ্রেডিং, ওজন, প্যাকিং, ট্রাকে লোডসহ নানা কাজে দৈনিক ব্যস্ত থাকছে দুই শতাধিক শ্রমিক। কার্টন তৈরি হচ্ছে সাড়ে ৪ কেজি, ৫ কেজি, ৯ কেজি ও ১০ কেজি ৮০০ গ্রাম ওজনের। এরপর তা চট্টগ্রাম বন্দরে পাঠানো হচ্ছে।

Advertisement

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আব্দুর রশিদ সরকার জানান, সরকারি উদ্যোগে আলু বিদেশে রফতানি করা গেলে কৃষক বেশি লাভবান হতেন। এছাড়াও উচ্চ ফলনশীল ও রফতানিযোগ্য আলুর জাত বেশি করে চাষ করলে রফতানির পরিমাণ বাড়বে এবং কৃষক আরও লাভবান হবে বলে জানান তিনি।

নাজমুল হোসেন/আরএ/আরআইপি