মালয়েশিয়ায় অভিবাসী ফোরাম অব এশিয়ার উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ২০ এপ্রিল অভিবাসী ফোরাম অব এশিয়ার কার্যালয়ে শুরু হওয়া দক্ষিণ এশিয়ার শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার আদায়ে করণীয় এবং সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ ও নেপালের সংসদ সদস্যরা।
Advertisement
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সংসদ সদস্য মো. ইসরাফিল আলমের নেতৃত্বে জেবুন্নেছা আফরোজ এমপি, মো. ছলিম উদ্দিন তরফদার এমপি ও মো. আইনুদ্দিন এমপি এ আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন। উদীয়মান অর্থনীতির দেশ মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি ও নেপালের কর্মীদের কাজের সম্ভাবনা ও সমস্যা বিষয়গুলো নিয়েই অভিবাসী ফোরাম অব এশিয়ার এ আয়োজন।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জনগোষ্ঠীর বসবাস মালয়েশিয়ায়। উদীয়মান অর্থনীতির এই দেশে বাংলাদেশিদের রয়েছে যেমন অফুরন্ত সম্ভাবনা তেমনি রয়েছে বিশদ সমস্যাও।
শ্রমিকদের চিকিৎসা ভাতা, ইন্স্যুরেন্স, সময়মতো বেতন পরিশোধ, আইনি সহায়তাসহ তিন দিনব্যাপী আলোচনায় উঠে আসে সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা। দু’দেশের প্রতিনিধি দল সরেজমিন বিভিন্ন ফ্যাক্টরি, কন্সট্রাকশন সাইডে গিয়ে নিজ নিজ দেশের শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং সমস্যাগুলো শোনেন।
Advertisement
দ্বিতীয় দিনে শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে মালয়েশিয়ার বার কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তারা আলোচনায় বসেন। প্রতিনিধি দলের নেতৃবৃন্দকে বার কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দ আশ্বস্ত করেছেন। বিদেশি শ্রমিকদের ন্যায্য আদায়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের জটিলতা নিরসনে আইনি সহায়তা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ইসরাফিল আলম এমপি।
এর আগে শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে প্রবাসীদের সঙ্গেও আলোচনা করেন সংসদীয় প্রতিনিধি দল।
এক প্রশ্নের জবাবে ইসরাফিল আলম বলেন, বিদেশে কোঠা ভিত্তিক কর্মী পাঠালে শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার আদায়ে কাজ করা সম্ভব। মালয়েশিয়ার আইন অনুযায়ী বৈধ-অবৈধ সকল অভিবাসী শ্রমিক কারখানার দুর্ঘটনার জন্য ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী। সুপ্রীমকোর্ট বার কাউন্সিলের বৈঠকে অংশগ্রহণ করার সময় সবাই যখন প্রশ্ন করল বাংলাদেশের মাইগ্রেন্ট (অভিবাসী) কষ্ট এত বেশি কেন এবং ইথিকেল রিকোয়ারমেন্ট (নৈতিক শর্ত) এর ক্ষেত্রে এত সমস্যা কেন?,তখন আমি বললাম, মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশের সুনির্দিষ্ট দশটি রিক্রুটিং এজেন্টকে (নিয়োগ প্রতিনিধি) মালয়েশিয়ায় জনশক্তি প্রেরণের জন্য নির্বাচন করেছে। সেইজন্য এই দশটি রিক্রুটিং এজেন্সির একচেটিয়া ব্যবসায়িক মনোভাবের কারণেই ন্যায্য অভিবাসী ব্যয় ও নৈতিক রিকোয়ারমেন্ট সঠিক প্রক্রিয়ায় প্রতিষ্ঠা করা বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।
ইসরাফিল আলম বলেন, অভিবাসী ফোরাম এশিয়ার (এমএফএ) মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে বিদেশি কর্মীদের সমস্যা সনাক্তকরণ এবং সমাধানের জন্য প্রতিবেদন তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রেরণ। এমনকি জাতিসংঘেও এ প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়।
Advertisement
তিনি বলেন, আমরা শ্রমিকদের সকল ধরনের সমস্যা উত্তরণে বাংলাদেশ এবং নেপাল দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও আলোচনা করেছি। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধাদি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
এসআর/পিআর