জাতীয়

দুর্ভাগ্যবশত একটা গ্যাপ হয়ে গেছে : নবজাতকের মৃত্যু নিয়ে চিকিৎসক

মৃত ঘোষণার পর নড়ে ওঠা শিশুটির এবার সত্যি সত্যি মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দিনগত রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে। মঙ্গলবার দুপুরে এ বিষয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করে ঢাকা শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

Advertisement

সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আব্দুল আজিজ বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে জন্ম নেয়া শিশুটি মায়ের পেটেই মারা গেছে বলে পূর্ব ধারণা ছিল ডাক্তারদের। তাই পরবর্তী চিন্তাও হয়নি। দুর্ভাগ্যবশত একটা গ্যাপ হয়ে গেছে। পূর্ব ধারণা ঠিক হলে ডেলিভারিটা ওয়েল ওরগানাইজড হতো। জন্মের পর শিশুটির যে অবস্থা ছিল, তাতে রেজাল্ট হয়তো ভালো হতো না তবে ভিন্ন হতেও পারতো।

তিনি আরও বলেন, জন্মের পর শিশুটির কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় দুর্ভাগ্যবশত পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। যথাযথ ব্যবস্থা নিলে সম্ভাবনা কম হলেও ফলাফল ভিন্ন হতে পারতো বলে মনে করছেন ঢাকা শিশু হাসপাতালের ডাক্তাররা।

ডাক্তারদের কোনো গাফিলতি ছিল কি না- সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গাফিলতি, ভুল এবং ধারণা বিষয়গুলো ভিন্ন। শিশুটির মা গত ১৯ তারিখ ধামরাইয়ের একটি ক্লিনিকে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়। তারপর গত ২১ তারিখ রাতে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হন। শিশুটির মা ধারণা করছিলেন, তার বাচ্চা পেটে মারা গেছে। শিশুটি অপরিপক্ক হওয়ায় পেটের ভেতরে তার শ্বাস-প্রশ্বাসও ধরা পড়ছিল না।

Advertisement

২৩ তারিখ সকালে ডেলিভারি হওয়ার পর শিশুটির ওজন এবং হার্টবিট এতো কম ছিল, যা বুঝতে কষ্ট হওয়াটাই স্বাভাবিক। পরে কবর দেয়ার সময় পানি পেয়ে শিশুটি নড়ে ওঠে।

নবজাতকটি শিশু হাসপাতালে আসার পর যে অবস্থা ছিল তাতে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা কম ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেলা ১২টা ২০ মিনিটে আমরা শিশুটিকে ইমার্জেন্সিতে রিসিভ করি। মিনিটে ৩-৪টি হার্টবিট ছিল, তাকে সঙ্গে সঙ্গে কার্ডিয়াক আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। তখন কিছুটা উন্নতি হলেও সন্ধ্যা ৭টার পর আবার অবনতি হতে থাকে। প্রতি মুহূর্তে আমাদের আপ্রাণ চেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়ে রাত ১টা ৩৩ মিনিটে শিশুটি মারা যায়। শিশুটিকে বাঁচাতে পারিনি বলে আমরা দুঃখিত, তবে আমাদের চেষ্টার কোনো কমতি ছিল না।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ঢাকা মেডিকেল একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তারা যদি আমাদের কাছে তথ্য চায়, আমরা যেকোনো তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবো।

এরপর নবজাতকটির মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শিশুটিকে ধামরাইয়ের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফন করার কথা জানিয়েছে পরিবার।

Advertisement

এর আগে সোমবার সকালে ‘মাতৃগর্ভে মৃত’ উল্লেখ করে পরিবারের কাছে নবজাতকটির মরদেহ হস্তান্তর করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর কিছুক্ষণ পর আজিমপুর কবরস্থানে কবর দেয়ার জন্য গোসল করাতে নিয়ে গেলে নড়ে ওঠে সে। পরে প্রথমে তাকে আজিমপুর ম্যাটারনিটি হাসপাতালে এবং সেখান থেকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে নেয়া হয়।

এআর/জেইউ/এমবিআর/পিআর